গুয়াহাটি, ১৩ সেপ্টেম্বর, (হি.স.) : অসমের দশ জেলার ১৭ হাজার ৪৮০ হেক্টর ধানথেতে শুঁয়ো পোকা-হামলার মোকাবিলা করতে জরুরিকালীন ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে প্রভাবিত অঞ্চলের জেলাশাসকদের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের কৃষি আধিকারিক-সহ শীর্ষ কর্তাব্যক্তিদের পরামর্শ ও সহায়তা নিতেও বলেছেন তিনি। এর সঙ্গে কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে আজই এক কৃষি আধিকারিককে বরখাস্ত এবং আরেক আধিকারিককে কারণ দর্শাও নোটিশ জারি করা হয়েছে।
এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, রাজ্যের ওই দশ জেলার আত্রান্ত কৃষিজমি তথা ধানখেতের ফসল ইত্যাদি শুঁয়ো পোকা বা আর্মি ওয়ার্ম-এর হামলায় ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে দেখে উদবিগ্ন রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী অতুল বরা। গতকালই কৃষিমন্ত্রকের পক্ষে যে-কোনও উপায়ে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এইসব শুঁয়ো পোকার মোকাবিলা করতে করার কড়া নির্দেশ জারি করা হয়েছিল।
কেবল তা-ই নয়, এ-ব্যাপারে কর্তব্যে গাফিলতির খবর পেলে বিভাগীয় আমলা-আধিকারিক-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে তৎক্ষণাৎ শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও নেওয়া হবে বলে সতর্ক করে দিয়েছিলেন মন্ত্রী অতুল। ইতিমধ্যে কর্তব্য গাফিলতির অভিযোগে গোলাঘাট জেলার কৃষি আধিকারিক বুধিন হাজরিকাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করার পাশাপাশি বোকাখাত মহকুমা আধিকারিক রঞ্জিত শর্মাকে কারণ দর্শাও নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
কৃষিমন্ত্রী অতুল বরা জানান, এমনিতেই সাম্প্রতিক বন্যায় বেজায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন রাজ্যের কৃষককুল। এবার পোকার হামালায় তাঁদের ফসল নষ্ট হলে কেবল চাষিরাই নন, বিপাকে পড়েব রাজ্যও। তাই তিনি দেরি না-করে শুঁয়ো পোকা-হামলায় আক্রান্ত জেলাগুলিতে গিয়ে খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন বিভাগীয় শীর্ষ আমলা-আধিকারিকদের। পরিসংখ্যান দিয়ে তিনি জানান, অজানা পোকা-হামলার শিকার হয়েছে শিবসাগরের ২,৮০০; যোরহাটের ১,২০০; গোলাঘাটের ৬,৬৭১; মাজুলির ২০০; লখিমপুরের ৩০০; কোকরাঝাড়ের ৩০০; ধুবড়ির ২৭; বরপেটার ৫৫০; নলবাড়ির ৩৭০; ডিব্রুগড়ের ৫,০০০ হেক্টর-সহ ১৭ হাজার ৪৮০ হেক্টার ধান খেত।
এদিকে, শুঁয়ো পোকার হামলা থেকে পরিত্রাণ পেতে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে তাঁদের সাহায্য চাওয়া হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী। তিনি জানান, এর আগে ১৯৬৭ সালে অসমের ধানখেতে শুঁয়ো পোকার আক্রমণ হয়েছিল। কৃষি আধিকারিকদের উদ্ধৃতি দিয়ে মন্ত্রী বলেন, মাঝে কয়েকবার এমন হামলা হলেও ১৯৬৭ বা এবারের মতো হয়নি।