যেনতেনপ্রকারেণ জনজাতীদের অধিকার রক্ষা করতে হবে : মুখ্যমন্ত্রী

গুয়াহাটি, ১২ সেপ্টেম্বর, (হি.স.) : যেনতেনপ্রকারেণ জনজাতীদের অধিকার রক্ষা করার আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ Assam Chief Ministerসনোয়াল। ভারতীয় জনজাতি সমাজের সর্বাঙ্গীণ বিকাশের লক্ষ্য নিয়ে কর্মরত ‘অখিল ভারতীয় বনবাসী কল্যাণ আশ্রম’-এর উদ্যোগে প্রকাশিত ‘নীতি দৃষ্টিপত্র’ (ভিশন ডকুমেন্ট)-এর উন্মোচন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তৃতা পেশ করছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। স্থানীয় ছাত্রীবাড়িতে অবস্থিত লায়ন্স ক্লাব চক্ষু হাসপাতাল প্রেক্ষাগৃহে রবিবার রাতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, রাজ্যের বর্তমান সরকার জনজাতিদের শিক্ষা এবং আর্থিক বিকাশের বিষয়কে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে গ্রহণ করেছে। জনজাতিদের অসমের ভূমিপুত্র বলে উল্লেখ করে রাজ্যের বিভিন্ন পাহাড়ি অঞ্চলকে অবৈধ জবরদখলকারীদের হাত থেকে রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।

জনজাতিদের সমস্যাবলি নিয়ে ভিশন ডকুমেন্ট তৈরি করায় কল্যাণ আশ্রমকে সাধুবাদ দিয়ে এই উদ্যোগকে সংগঠনের সার্থক প্রয়াস বলে বর্ণনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, জনজাতিদের উন্নয়নে যে-সব বিষয়ে নজর দেয়নি কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার, ভিশন ডকুমেন্টে সে-সব বিষয়ের বর্ণনা করায় কল্যাণ আশ্রমের দূরদৃষ্টি ভূয়সী প্রশংসা করতেই হবে। ভিশন ডকুমেন্ট-এ বর্ণিত প্রস্তাবগুলি নিয়ে মন্ত্রিসভায় আলোচনা করবেন বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর স্বীকারোক্তি, অসমের সাংস্কৃতিক তথা সামাজিক ক্ষেত্রে জনজাতি সমাজের অজস্র অবদান আছে। তা-সত্ত্বেও তাঁরা তাঁদের সামাজিক ও আর্থিক কষ্টদায়ক জীবনশৈলী থেকে বের হতে পারছেন না। তিনি বলেন, জনজাতিদের শিক্ষা তথা দারিদ্র্যের সুযোগ নিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশকারীরা তাঁদের দখলীকৃত জমি জবরদখল করে বাসর পেতেছে। এই বিষয়টি তিনি বা তাঁর সরকার বরদাস্ত করবে না বলে এদিনের অনুষ্ঠানে জোরের সঙ্গে জানান মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর ঘোষণা, রাজ্যের বর্তমান সরকার জনজাতিদের হারানো জমি পুনরুদ্ধারে দৃঢ়সংকল্প।

জনজাতিদের সার্বিক দুর্দশার সুযোগ নিয়ে তাঁদের উগ্রপন্থী সংগঠন বা অন্য অসামাজিক কাজে নামতে বাধ্য করা হচ্ছে বলেও স্বীকার করেন মুখ্যমন্ত্রী। বিষয়টিকে তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের নজরে নেবেন এবং কেন্দ্রকে এ ব্যাপারে যাবতীয় সহযোগিতা তাঁর সরকার করবে বলে আশ্বাস দেন তিনি। তাছাড়া, প্রধানমন্ত্রী জন ধন যোজনা, ফসল বিমা যোজনা-সহ কেন্দ্রীয় সব মহত্বপূর্ণ যোজনা সম্পর্কে তথ্য দিয়ে এইসব যোজনার সফল বাস্তবায়নে জনজাতিদের বিশেষ করে যুব সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।

এদিনের অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা অখিল ভারতীয় বনবাসী কল্যাণ আশ্রমের সর্বভারতীয় সংযুক্ত সংগঠনমন্ত্রী বিষ্ণুকান্ত তাঁর ভাষণের শুরুতে গোপীনাথ বরদলৈ-ভূপেন হাজরিকার নাম স্মরণ করে ‘নীতি দৃষ্টিপত্র’-এ সন্নিবিষ্ট বিভিন্ন বিষয় ব্যাখ্যা করেন। জনজাতিদের উন্নয়নে কল্যাণ আশ্রমের যাবতীয় কর্মকাণ্ডের ব্যাখ্যাও করেন তিনি। ডাক্তার-শিক্ষকের মতো মহৎ পেশাধারী বেশিরভাগ লোকজন জনজাতি অঞ্চলে গিয়ে সেবা প্রদানে অনীহাবোধ করেন বলেও খেদ ব্যক্ত করেন বিষ্ণুকান্ত। কল্যাণ আশ্রম অসমের পদাধিকারী নগেন্দ্র নুনিসা সংগঠনের প্রতিষ্ঠা এবং তার বিশাল কর্মযজ্ঞের ওপর বক্তব্য পেশ করেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী চন্দ্রমোহন পাটোয়ারি-সহ জনজাতি জনগোষ্ঠীয় কয়েকজন বিধায়ক, বিভিন্ন শ্রেণির বিশিষ্ট ব্যক্তি, আমন্ত্রিত অতিথিবর্গ এবং সংগঠনের বিভিন্ন অঞ্চলের পদাধিকারী ও কর্মীবৃন্দ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *