মরিগাঁও (অসম), ১১ সেপ্টেম্বর, (হি.স.) : এক লোমহর্ষক হত্যাকাণ্ডের সাক্ষী হল মরিগাঁও জেলা। কতিপয় দুর্বৃত্তের হাতুড়ির ঘায়ে নিহত হয়েছেন ধর্ষিতা মা ও মেয়ে। আরেক গুরুতর জখম ধর্ষিতা মেয়ে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে হাসপাতালে।
খবরে প্রকাশ, গতকাল রাতে মরিগাঁওয়ের বেসাপাতি গ্রামের জনৈক মহিলার বাড়িতে হানা দেয় কতিপয় নরপিশাচ। প্রথমে তারা গৃহকর্ত্রী-সহ তার দুই কন্যাকে ধর্ষণ করে। এর পর তাদের হাতুড়ি দিয়ে বেধম মারতে থাকলে প্রাণ বাঁচাতে তাঁদের মা তাঁর বাড়ির পেছনে পুকুর পাড়ের দিকে ছুটতে থাকেন। পিছু নিয়ে তাকে সেখানেই ঘায়ের পর ঘায়ে খুন করে নরপিশাচরা। এদিকে ঘরের ভেতর ধর্ষিতা বড় মেয়ের ওপর প্রাণঘাতী হামলা চালালে খনিকের মধ্যে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে সে। আর গুরুতরভাবে জখম ছোট মেয়ে পড়ে থাকে ঘরের মেঝেতে।
আজ সকালে বাড়ির কাউকে না দেখে কোনও এক প্রতিবেশী মহিলাটির বাড়িতে গিয়ে তাঁর নাম ধরে হাঁকেন। কারোর কাছ থেকে কোনও সাড়া-শব্দ না-পেয়ে ঘরের দিকে পা বাড়িয়ে হতবাক হয়ে পড়েন প্রতিবেশীটি। দেখেন, মেঝেতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে দুই মেয়ের রক্তাক্ত লাশ। হইহুল্লোড় জুড়ে দেন তিনি। ছুটে আসেন অন্যান্য প্রতিবেশীরাও। ইত্যবসরে খোঁজাখুঁজির পর পুকুর পারে উদ্ধার হয় গৃহকর্ত্রীরও রক্তাক্ত লাশ। উল্লেখ্য, গ্রামের বসতবাড়ি, খানিক দূরে দূরে তাদের অবস্থান।
খবর পাঠানো হয় থানায়। পুলিশ এসে জখম ছোট মেয়েকে নিয়ে মরিগাঁও সিভিল হাসপাতালে ভরতি করে। তার জবানবন্দি গ্রহণ করেছে পুলিশ। তার বক্তব্যের উদ্ধৃতি দিয়ে পুলিশ জানিয়েছে, গতকাল রাত প্রায় আটটা নাগাদ সুদের টাকা পরিশোধ করতে এসেছিল তিন যুবক। কিন্তু টাকা দেওয়া দূরের কথা, আচমকা এই তিন ধর্ষক তাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। এরপর হাতুড়ি জাতীয় কোনও জিনিস দিয়ে তাঁদের তিনজনকে মারতে থাকে। মা পালিয়ে যান প্রাণ বাঁচাতে, কিন্তু প্রাণ রক্ষা হয়নি। তদন্তের স্বার্থে ধর্ষক তথা ঘাতকদের নাম এখনই বলতে চাইছে না পুলিশ। তবে পুলিশ এ-মুহূর্তে এই ঘটনার সঙ্গে ধর্ষণের মতো কুকর্ম জড়িত কিনা তার সত্যতা প্রকাশ করেনি। পুলিশ বলেছে, টাকার লেনদেন সংক্রান্ত কোনও বিবাদের জেরে এমন হত্যাকাণ্ড কি না তা-ও তাঁদের তদন্তের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। দুর্বৃত্তদের ধরতে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ।
এদিকে, মানবতার চূড়ান্তসীমা অতিক্রমকারী অপরাধীদের শীঘ্র গ্রেফতার করে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তুলেছেন স্থানীয় নাগিরকরা।