রাজ্যের সাংসৃকতিক ঐতিহ্যে চিড় ধরাবার চেষ্টা হচ্ছে ঃ মুখ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১ সেপ্ঢেম্বর৷৷ নজরুল কলাক্ষেত্রে সাউন্ড রেকডিরং স্টুডিও-র উদ্বোধন এক অভিনব প্রয়াস৷ SOUNDরাজ্যের সাংসৃকতিক কর্মকান্ডের সাথে যুক্ত এই প্রয়াস৷ এখানে নজরুল কলাক্ষেত্রের পত্তনের লক্ষ্য নিয়ে যখন কাজ শুরু হয় তখন শুধু প্রেক্ষাগৃহই নয় সাউন্ড রেকর্ডিং, ওপেন থিয়েটার বিষয়গুলো যুক্ত করা হয়েছিল৷ আজ নজরুল কলাক্ষেত্রে তথ্য ও সংসৃকতি দপ্তরের উদ্যোগে সাউন্ড রেকডিরং স্টুডিও-র উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার একথাগুলো বলেন৷ তিনি বলেন, এখানে একটি উন্নতমানের লাইব্রেরী করারও চিন্তা ভাবনা রয়েছে সরকারের৷ অতীতের সম্পদকে কাজে লাগিয়ে নতুন সৃষ্টিকে যাতে আরও আকর্ষনীয় করা যায় সেই লক্ষ্যেই এই প্রচেষ্টা নেওয়া হবে৷
সাউন্ড রিকডিও-র উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যে চলচ্চিত্র তৈরীর জন্য একটি ইনডোর স্টুডিও নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে৷ এজন্য তিনি তথ্য ও সংসৃকতি দপ্তরের আধিকারিক ও সংশ্লিষ্ট সকলকে চিন্তা ভাবনা করে একটা উদ্যোগ নিতে বলেন৷ তিনি বলেন, রাজ্যে চলচ্চিত্র শিল্পের বিকাশের সম্ভাবনা রয়েছে৷ উপজাতি সংসৃকতির সাথে যুক্ত বিকাশমান তরুণ-তরুণীরা রাজ্যে চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন ইতিমধ্যেই৷ তাদের এই প্রয়াস প্রশংসিত ও সমাদৃত হয়েছে৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, চলচ্চিত্র শিল্পের জন্য একটা ইনডোর স্টুডিও জন্য প্রয়োজনীয় জমি দেখে তা সরকারের কাছে প্রস্তাব দেওয়া হলে তা খতিয়ে দেখা দবে৷ প্রয়োজনীয় অর্থ সংকুলান করার উদ্যোগ নেবে সরকার৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের রাজ্যের শিল্পীরা দেশের সাংসৃকতিক মঞ্চে সুনাম অর্জন করছেন৷ সংগীত নাটক যন্ত্র সংগীতে এই সুনাম আমরা পেয়েছি৷ তাদের সৃষ্টির আরও বিকাশে এই সাউন্ড রেকডিরং স্টুডিও এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে৷
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের সংসৃকতিক ঐতিহ্য হচ্ছে একতা-সম্প্রীতি ও সহিষ্ণুতা৷ এতে চিড় ধরাবার চেষ্টা হচ্ছে৷ এই অশুভ প্রবণতা যাতে মাথা চাড়া দিতে না পারে সেজন্য রাজ্যের শিল্পীদের সতর্ক নজর রাখার আহ্বান জানান মুখ্যমন্ত্রী৷ তিনি আশা প্রকাশ করেন মানুষকে সুস্থ চেতনায় বিকশিত হতে, মানুষে মানুষে সংহতির চেতনা অটুট রাখতে শিল্পীরা তাদের সৃষ্টির মাধ্যমে ঐক্য সংহতির বার্তা পৌঁছে দেবেন৷ মুখ্যমন্ত্রী এই সাউন্ড রেকডিরং স্টুডিও স্থাপনে সহায়তা করায় দেশের প্রখ্যাত সাউন্ড ইঞ্জিনীয়ার দামন সূদ, প্রখ্যাত সংগীত শিল্পী পন্ডিত অজয় চক্রবর্তী, চলচ্চিত্র নির্দেশক সন্দীপ রায় ও গৌতম ঘোষ এবং এন বি সি সি কর্তৃকপক্ষকে ধন্যবাদ জানান৷
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করে তথ্য ও সংসৃকতি মন্ত্রী ভানুলাল সাহা বলেন, রাজ্যে সাংসৃকতিক পরিমন্ডলের সাথে যুক্ত যারা, তারা দীর্ঘদিন ধরেই একটি সাউন্ড স্টুডিও এবং ভি ডি ও রেকডিরং -র দাবী করে আসছিলেন৷ অদূর ভবিষ্যতে অর্থের সংস্থান হলে ভি ডি ও রেকডিরং স্টুডিও স্থাপনের উদ্যোগ নেবে সরকার৷ তিনি বলেন, ভারত বিখ্যাত সাউন্ড ইঞ্জিনীয়ার দামন সূদের পরামর্শে এই স্টুডিও করা হয়েছে৷ এই স্টুডিও পরিচালনার জন্য এখানকার তিনজন কর্মীকে কলকাতার সত্যজিৎ রায় ফিল্ম এন্ড টেলিভিশন ইন্সটিটিউট থেকে তিন পর্যায়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে৷
উদ্বোধনী অনুষ্টানে বিশেষ অতিথি তথ্য ও সংসৃকতি দপ্তরের বিশেষ সচিব এম এল দে বলেন, এই সাউন্ড রেকডিরং স্টডিও -র উদ্বোধনের ফলে এখারকার সংগীত শিল্পী, যন্ত্র শিল্পী, আবৃত্তিকার ও বিজ্ঞাপন নির্মাতাদের বিশেষ উপকারে আসবে৷ রাজ্যের শিল্পীদের প্রতিভা ও পারদর্শিতা সমৃদ্ধ করবে রাজ্যের সাংসৃকতিক জগত৷ স্বাগত বক্তব্যে তথ্য ও সংসৃকতি দপ্তরের অধিকর্তা এম কে নাথ বলেন, রাজ্যের সাউন্ড রেকডিরং স্টুডিও -র প্রয়োজনীয়তা রয়েছে তা অনুভব করে ২০১২ সাল থেকে এই স্টুডিও স্থাপনের প্রচেষ্টা নেওয়া হয়৷ ২১ মার্চ, ২০১৪ থেকে এর কাজ শুরু হয়৷ শেষ হয় ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫৷ তিনি বলেন, এই স্টুডিও -র কাজের সময় হল ছুটির দিন ব্যতীত সকলা ১০টা সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত৷ এই সাউন্ড রেকডিরং স্থাপনে ব্যয় হয়েছে ১ কোটি ২ লক্ষ ৭২ হাজার টাকা৷ এখানে ট্রেকিং, ইন্সট্রুমেন্টালস, ভয়েস ওভার, ভোকাল, লাইভ রেকডিরং, মিক্সিং ও মাস্টারিং এর সুবিধা রয়েছে৷ এই সাউন্ড রেকর্ডিং স্টুডিও স্থাপনে ন্যাশনাল সুকল অফ ড্রাম, প্রখ্যাত সংগীত শিল্পী পন্ডিত অজয় চক্রবর্তী, চলচ্চিত্র নির্মাতা সন্দীপ রায় ও গৌতম ঘোষের পরামর্শ নেওয়া হয়েছে৷ এই সাউন্ড রেকডিরং স্টুডিও ব্যবহারের জন্য নূ্যনতম ভাড়া ধার্য্য করা হয়েছে৷ ভোকাল/ইন্সট্রউমেন্ট/জিঙ্গেলস এর জন্য প্রতি ঘন্টায় ৫০০ টাকা৷ লাইভ ও একুসষ্টিক ড্রাম রেকডিরং -এর জন্য প্রতি ঘন্টায় ৭০০ টাকা এবং সারা দিন রেকর্ডিং -এর জন্য ৫ হাজার টাকা৷