BRAKING NEWS

পদক হাতছাড়া হলেও দীপাকে নিয়ে গর্বিত রাজ্য

Dipa Karmakarনিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৩ আগষ্ট৷৷ অল্পেতে পদক হাতছাড়া হল দীপার৷ তবুও তাঁর জন্য গর্বিত রাজ্যবাসী৷ অলিম্পিক আসরে প্রথম ভারতীয় মহিলা জিমন্যাস্ট হিসেবে বিশ্বের পোড় খাওয়া অলিম্পিয়ানদের কড়া টক্কর দিয়েছে রাজ্যের সোনার মেয়ে৷ স্বভাবতই অলিম্পিকে পদক জয় করা আনন্দের মাত্রা অনেক৷ কিন্তু, দেশের প্রান্তিক রাজ্য ত্রিপুরার মেয়ে দীপা বিশ্ব আসরে গিয়ে যে কৃতিত্ব দেখিয়েছে তাতে গোটা দেশ কতটা আনন্দিত হবে তা বলা মুশকিল হলেও ত্রিপুরা দীপাকে কুর্নিস জানাতে কোন খামতি রাখবে না৷ পদক জয় করে আসলে গোটা দেশেই তাঁকে রঙিন কায়দায় হয়তো বরণ করা হতো৷ কিন্তু, পদকের খুব কাছে গিয়ে ফিরে আসলেও রাজ্যবাসী দীপাকে সাদরে বরণ করবে সেটাই প্রত্যাশিত৷ আজ রবিবার গোটা দেশ তাকিয়ে ছিল দীপার দিকে৷ সেই অনুযায়ী এক সময় দীপা পেছনে ফেলে দেয় চিন, উত্তর কোরিয়া, উজবেকিস্তান এবং কানাডাকে৷ কিন্তু, শেষ পর্যন্ত এগিয়ে যায় আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া এবং সুইজারল্যান্ড৷ স্বাভাবিকভাবেই গোটা দেশ সহ ত্রিপুরাবাসী হতাশ হয়েছেন৷ তবে, এই হতাশার মাঝেও অলিম্পিক আসরে চতুর্থ স্থান দখল করার সুবাদে দীপাকে নিয়ে গর্ববোধ করছে গোটা রাজ্য৷ ফলে, অবসাদের মাঝেও ত্রিপুরাবাসী দীপার এই ফলাফলে আনন্দিত বলেই মনে করা হচ্ছে৷
রিওতে দেশকে প্রথম পদক এনে দিতে নিজের সর্বস্ব শক্তিটাই দিলেন রাজ্যের মেয়ে দীপা৷ কিন্তু অল্পের জন্য শত কোটি ভারতবাসীর মনে হাঁসি ফুটাতে পারলেন না রাজ্যের মেয়ে৷ মাত্র .১৫ পয়েন্টের জন্য অলিম্পিকের মতো বিশ্ব ক্রীড়া যজ্ঞে পদক হাত ছাড়া করলেন ভারতের স্বর্ণকন্যা৷ স্বাধীনতার দিবসের প্রাকলগ্ণে রিওতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করার জন্য দীপা নিজের স্বর্বশক্তি দিয়েই ভল্টের ফাইনালে লড়াইটা করেছিলেন৷ কিন্তু ভাগ্যটা সঙ্গ দেয়নি রাজ্যের মেয়ে৷ ফলে অলিম্পিকে ইতিহাস গড়া হলোনা দীপার৷ তবে পদক জিততে ব্যর্থ হলেও, দীপাকে নিয়ে অবশ্যই গর্ব হবে ভারতবাসীর৷ কারন অলিম্পিকের ইতিহাসে জিমনাস্টিক্সের মতো কঠিন ইভেন্টে প্রথমবার অংশ গ্রহন করেই, পদক জয়ের একেবারে কাছে পৌঁছে গিয়েছিলেন তিনি৷ জিমনাস্টিক্সে ভারতকে পদক এনে দিতে সবচাইতে কঠিন ইভেন্ট ভল্টকেই পাখির চোখ করেছিলেন দীপা৷ দীর্ঘ সময়ের তার পরিশ্রম এদিন ফলের অপেক্ষায় ছিল৷ কিন্তু তীরে এসে তরি ডুবলো দীপা কর্মকারের৷ রিওতে ভল্টের ফাইনালে পৌঁছে হাতে পাওয়া কয়েকটা দিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে গেছেন দীপা৷ লক্ষ্য ছিল দেশকে বিশ্ব আসরে পদক এনে দেওয়া৷ সেই লক্ষ্যে প্রায় জয়টা এসেই গিয়েছিল ভারতের৷ আমেরিকার সাইমন বিলেস যখন নিজের শেষ ভল্টা দিতে যাচ্ছিলেন তখন সকল ভারতবাসীর মনেই হৃদকম্পন বেড়ে যায়৷ আমেরিকান প্রতিযোগি যখন নিজের শেষ ভল্টার করছিলেন তখন দীপাক অবস্থান ছিল দ্বিতীয়৷ এক্ষেত্রে সাইমন বিলেস ১৫.৯৬৬ পয়েন্ট কেড়ে নিতেই রিওতে ভারতের পদক জয়ের আরেকটি সম্ভাবনা ভেস্তে যায়৷ আর সাথে সাথেই হৃদয় ভেঙ্গে যায় গোটা ভারতবাসীর৷ কারন ভল্টের ফাইনালে এই করুন পরিণতি শিকার হতে হবে দীপাকে তা ভারতবাসী আঁচ করতে পারেনি৷ তবে পদক জয়ে ব্যর্থ হলেও দীপাকে নিয়ে আমাদের অবশ্যই গর্ব করতে হবে৷ ত্রিপুরাবাসী হিসাবে আমাদের মাথা উঁচু করেছে দীপা৷ ফলে অলিম্পিকে পদক জয়ে ব্যর্থ হলেও ত্রিপুরাবাসী হিসাবে আমরা দীপার এই সফল্যে আনন্দদিত ও আপ্লুত৷ তবে যে খেলোয়াড় নিজেকে তিলে তিলে গড়ে তুলেছেন, শুধু একটা স্বপ্ণ নিয়ে, অলিম্পিকে একদিন দেশের হয়ে পদক জিতবেন, সেই দীপার মনের অবস্থাটা অবশ্যই এদিন কিছুটা হলে আঁচ করা যাচ্ছে৷ মাত্র .১৫ পয়েন্টের জন্য দেশকে অলিম্পিক পদক জেতাতে পারেনি, এই যন্ত্রনাটা অবশ্যই রাজ্যের মেয়ে সারা জীবন হৃদয়ের মনিকোঠায় বয়ে বেড়াবে৷ রবিবার রিওতে একে একে যখন ভারতের পদক জয়ের অন্যতম দাবিদাররা ছিটকে যেতে থাকেন তখন, একটা সময় ভারতের পদক জয়ের আশা জাগিয়ে তুলেন রাজ্যের স্বর্ণকণ্যা৷ কিন্তু নিয়তির পরিহাসের শিকার হতে হলো দেশের গর্বকে৷ আজ আর সামান্যতম পয়েন্ট বেশি পেলেই আগামীকাল ৭০তম স্বাধীনতা দিবসে দেশবাসী আনন্দে মাতোয়ারা হতে পারতেন৷ কিন্তু আমেরিকা, রাশিয়া ও সুইজারল্যান্ডের প্রতিযোগিনীদের কাছে রবিবার রিওতে নবম দিনে পিছিয়ে পড়তে হয় দীপাকে৷ ফলে চতুর্থ স্থানে থেকে রিও’র মঞ্চ থেকে বিদায় নিতে হলো দীপা কর্মকারকে৷ এদিন জিমনাস্টিক্সের সবচাইতে কঠিনতম বিভাগ ভল্টের ফাইনালে প্রথম স্থানে থেকে স্বর্ণপদক লাভ করেন আমেরিকার সাইমন বিলেস৷ তার সংগ্রহ ১৫.৯৬৬৷ রাশিয়ার মারিয়া পাসিকা ১৫.২৫৩ পয়েন্ট নিয়ে রৌপ্য পদক লাভ করেন৷ আর সুইজারল্যান্ডের গোলিয়া স্টেইনগ্রোবার ১৫.২১৬ পয়েন্ট নিয়ে ব্রোঞ্জ পদক জয় করেন৷ দেশের গর্ব দীপা ১৫.০৬৬ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ স্থান পায়৷ চিনের ইয়াং ইয়েন ১৪.৯৯৯ পয়েন্ট পঞ্চম, দক্ষিন কোরিয়ার হং উন জং ১৪.৯০০ পয়েন্ট নিয়ে ষষ্ঠ,উজবেকিস্তানের ওকসানা ১৪.৮৩৩ পয়েন্ট নিয়ে সপ্তম ও কানাডা শেলন উলসেন ১৪.৮১৬ পয়েন্ট নিয়ে অষ্টম স্থান দখল করে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *