নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৮ জুলাই৷৷ বিকল্প নীতির রাজ্যে মনে হয় আন্দোলন ছাড়া কোন কিছু পাওয়া সম্ভব নয়৷ যার ফলে বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের পঠনপাঠন বন্ধ রেখে তাদের প্রাপ্য অধিকারের জন্য আন্দোলন করতে হয়৷ আর সে কারণেই মনে হয় দীর্ঘ দিন যাবত বিদ্যালয়ের যে সমস্যা গুলি সমাধানে প্রশাসনিক আধিকারিকদের কোন হেলদোল ছিল না, ভারতের ছাত্র ফেডারেশনের পক্ষ থেকে বিদ্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দুদিন যাবত পঠনপাঠন বন্ধ রাখার পর শিক্ষা দপ্তরের আধিকারিকরা সে সমস্যাগুলি সমাধানে উদ্যোগী হয়েছে৷
বলা হচ্ছে করবুক মহকুমার চেলাগাঙ বাজারে অবস্থিত চালকাহাম উচ্চতর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কথা৷ দীর্ঘ দিন যাবত বিদ্যালয়টি নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত হয়ে থাকলেও শিক্ষা দপ্তরের আধিকারিকরা অন্ধ ধৃতরাষ্ট্রের ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে৷ বিদ্যালয়ে একজন শিক্ষিকা নিয়োগ বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ, শারীর শিক্ষক নিয়োগ সহ পাঁচ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ২০১৫ সালের ২০ আগস্ট শিক্ষা দপ্তরের উপ অধিকর্তার উদ্দেশ্যে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের নিকটে স্মারক লিপি প্রদান করেছিল ভারতের ছাত্র ফেডারেশনের চেলাগাঙ শাখা কমিটি৷ কিন্তু স্মারকলিপি প্রদানের পর প্রায় এক বছর অতিক্রান্ত হতে চললেও দাবি পূরণের ব্যাপারে শিক্ষা দপ্তরের আধিকারিকরা কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি৷ এমনকি সমস্যাগুলি পূরণের ব্যাপারে উপধিকর্তা কিংবা বিদ্যালয় পরিদর্শক ছাত্রছাত্রীদের সাথে সৌজন্যমূলক সাক্ষাতকার পর্যন্ত করেনি৷ অন্যান্য স্মারকলিপি গুলির মতই ছাত্রছাত্রীদের সমস্যা সম্বলিত স্মারকলিপিটি ফাইলের নীচে চাপা পড়ে যায় বলে অভিযোগ৷ কিন্তু ছাত্রছাত্রীরা লক্ষ্য করছে যে দিন কে দিন তাদের সমস্যা গুলি শুধু বৃদ্ধি পাচ্ছে৷ ডেপুটেশানের নাম করে একের পর এক শিক্ষক বদলি করা হলেও শিক্ষকের পরিবর্তে কোন শিক্ষক বিদ্যালয়ে আসছে না৷ পর পর পাঁচজন শিক্ষক বদলি করার ফলে একটি উচচতর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংখ্যা বারজন এসে দাঁড়ায়৷ যার ফলে প্রচন্ড শিক্ষক স্বল্পতায় বিদ্যালয়ের পঠনপাঠন ব্যাপক প্রভাব দেখা দেয়৷ এমতাবস্তায় বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়৷ গত সোমবার ভারতের ছাত্র ফেডারেশন চেলাগাঙ অঞ্চল কমিটির পক্ষ থেকে বিদ্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে আন্দোলন শুরু করা হয়৷ বিদ্যালয়ের পঠনপাঠন লাটে তুলে ছাত্র ফেডারেশনের মদতে ছাত্রছাত্রীরা অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের ডাক দেয়৷ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষা দপ্তরের উচ্চ পদস্থ আধিকারিকদের ছাত্র আন্দোলনের ব্যাপারে জানালেও সোমবার কোন আধিকারিককে বিদ্যালয় চত্বরে দেখা যায়নি৷ যার ফলস্বরূপ মঙ্গলবার সরকারি ছুটি থাকলেও বুধবার সকাল থেকে ক্লাস বয়কট করে ছাত্রছাত্রীরা আন্দোলন করতে থাকে৷ অবশেষে দুপুর দুটো নাগাদ বিদ্যালয় পরিদর্শক কুমুদ বন্ধু দাস বিদ্যালয়ে গিয়ে ছাত্রছাত্রীদের দাবিগুলি শুনে দাবি গুলির যৌক্তিকতা স্বীকার করেন৷ আগামী তিনদিনের মধ্যে কিছু দাবি পূরণ করে দেওয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিলে ছাত্রছাত্রীরা আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন৷ তাহলে প্রশ্ণ উঠছে ডেপুটেশান প্রদানের পর বিগত এক বছরে ছাত্রছাত্রীদের সমস্যা সমাধানে শিক্ষা দপ্তর কেন উদ্যোগী হয় নি? শিক্ষা দপ্তরের আধিকারিকদের সদিচ্ছার অভাবে যে দুদিন যাবত বিদ্যালয়ের পঠনপাঠন স্তব্ধ ছিল তার দায় নেবে কে? নাকি শিক্ষা দপ্তরের আধিকারিকরা শাসক দলের ছাত্র সংগঠনকে অস্তিত্ব জানান দেওয়ার একটু সুযোগ দিল?