রেলের রেকে আসবে জ্বালানির ট্যাঙ্কার ট্রাক

Rail Petrolনিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৮ জুলাই৷৷ ত্রিপুরার জ্বালানি সংকট নিরসনে এবার রেলে করে পেট্রোপণ্য পাঠানোর চেষ্টা করছে আইওসি৷ গুয়াহাটি থেকে ট্যাঙ্কারগুলি পণ্যবাহী রেলের রেকে লোড করা হবে৷ জিরানিয়া স্টেশনে সেই ট্যাঙ্কারগুলি রেল থেকে নামানোর ব্যবস্থা করা হবে৷ সেই লক্ষ্যে ইতিমধ্যে জিরানিয়া স্টেশনে পরিকাঠামো গড়ে তোলার কাজ শুরু হয়ে গেছে৷ এক সাথে ৪০-৫০ টি ট্যাঙ্কার রেলে করে আনার চিন্তাভাবনা করছে আইওসি৷ সাপ্তাহখানেকের মধ্যেই এই বিকল্প পদ্ধতিতে জ্বালানি তেল গুয়াহাটি থেকে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে বলে সূত্রের দাবি৷ এলপিজি’র বুলেটও একইভাবে ত্রিপুরাতে পাঠাতে চাইছে আইওসি৷ তবে তা সম্ভব হবে কি না সে বিষয়ে নিশ্চিতভাবে কিছু জানা যায়নি৷ পূর্বোত্তর সীমান্ত রেলওয়ে সূত্রের মতে, এই পদ্ধতি অবলম্বন করলে পেট্রোপণ্য নিয়ে আসা সম্ভব হবে৷ গুয়াহাটিতে রেলের রেকে পেট্রোল-ডিজেল ট্যাঙ্কার লোড করার পরিকাঠামো রয়েছে৷ ফলে, জিরানিয়াতেও একই রকম পরিকাঠামো গড়ে তোলার জোর প্রয়াস শুরু হয়েছে৷
সূত্রটি জানিয়েছে, যুদ্ধের সময় সেনাবাহিনীর গাড়ি রেলের বগিতে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়৷ একই কৌশল অবলম্বন করে পেট্রোল-ডিজেলবাহী ট্যাঙ্কার আনা সম্ভব৷ কারণ, পাহাড় লাইনে পণ্যবাহী রেল চলাচল বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে৷ ডাইভারশন ট্র্যাক দিয়ে সাফল্যের সাথে পণ্যবাহী রেল আসতে শুরু করেছে৷ রাজ্যের জন্য একটি চালবাহী রেলের রেক এখন রাস্তায় রয়েছে৷ সম্ভবত শনিবার রেকটি জিরানিয়া স্টেশনে ঢুকবে৷ যেহেতু পণ্যবাহী রেল চলাচল শুরু হয়ে গেছে, ফলে নতুন পদ্ধতি অবলম্বন করে জ্বালানি সংকট নিরসনে পেট্রোল-ডিজেল ট্যাঙ্কার আনার ক্ষেত্রে রেলপথে কোন সমস্যা আর নেই৷ পূর্বোত্তর সীমান্ত রেলওয়ের দাবি, নতুন যে ডাইভারশন ট্র্যাকটি বসানো হয়েছে সেই কাজে সফলতা মিলেছে৷ মাটি বসে যাওয়ার যে সমস্যাটি ছিল তা সমাধান হয়েছে৷ পূর্বোত্তর সীমান্ত রেলওয়ের কর্তারা আশাবাদী, নতুন করে কোন সমস্যা দেখা দেবে না৷ ফলে তারা খুব শীঘ্রই শিলচর থেকে দূরপাল্লার যাত্রী রেল চালানোর চিন্তাভাবনা করছে৷
সূত্র অনুসারে জানা গেছে, জিরানিয়া স্টেশনে রেলে করে আসা ট্যাঙ্কারগুলি কিভাবে নামানো সম্ভব হবে সে বিষয়ে পূর্বোত্তর সীমান্ত রেলওয়ের বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলীরা পরিকল্পনা শুরু করে দিয়েছে৷ গুয়াহাটি স্টেশনের ধাঁচেই গড়ে তোলা হবে ট্যাঙ্কারগুলি নামানোর পরিকাঠামো৷ এই কাজ সম্পন্ন করতে সপ্তাহখানেক সময় লাগবে বলে সূত্রের দাবি৷
এই মুহুর্তে জাতীয় সড়ক দিয়ে পেট্রোপণ্য রাজ্যে স্বাভাবিকভাবে পাঠানো আইওসির পক্ষে সম্ভব হয়ে উঠছে না৷ বহু ট্যাঙ্কার রাস্তায় আটকে আছে৷ এরই মধ্যে রাজ্যে জ্বালানি সংকট মারাত্মক আকার ধারণ করেছে৷ রেলে করে জ্বালানি ধর্মনগর ডিপো পর্যন্ত পাঠানো যাচ্ছে না৷ কারণ, ধর্মনগর ব্রডগেজ ট্র্যাক থেকে তেলডিপো পর্যন্ত যে ট্র্যাকটি রয়েছে সেটি মিটারগেজ৷ এই মিটারগেজ ট্র্যাকটি ব্রডগেজে রূপান্তর করতেও অনেকটা সময় লাগবে৷ তাছাড়া ধর্মনগর তেল ডিপোতে পুরো একটি রেক জ্বালানি তেল ধারণ করার ক্ষমতা নেই৷ স্বাভাবিকভাবেই অর্ধেক রেক জ্বালানি তেল পাঠানো সম্ভব নয়৷ ফলে, বিকল্প পথেই ত্রিপুরাতে জ্বালানি পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছে আইওসি৷ রেল কর্তৃপক্ষও আইওসির আবেদনে সাড়া দিয়ে এই নতুন পদ্ধতি অনুসারে পেট্রোপণ্য নিয়ে আসতে সম্মত হয়েছেন৷ তাতে, ধারণা করা হচ্ছে সপ্তাহ খানেকের মধ্যে রাজ্যে জ্বালানি সংকটে সমাধান হতে যাচ্ছে৷