নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৫ জুলাই৷৷ তীব্রতর ডায়েরিয়ার নিয়ন্ত্রণ পক্ষকাল সারা রাজ্য জুড়ে পালন করার যৌথ উদ্যোগ
নিয়েছে জাতীয় স্বাস্থ্য মিশন ত্রিপুরা এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দপ্তর৷ আগামী ১১ জুলাই থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত তীব্রতর ডায়েরিয়া নিয়ন্ত্রণ পক্ষকাল সারা রাজ্যজুড়ে পালিত হবে৷ এবিষয়ে মঙ্গলবার সংবাদিকদের নিয়ে এক কর্মশালার আয়োজন করা হয়৷ তাতে উঠে এসেছে রাজ্যে ডায়েরিয়া প্রাদুর্ভাবের বিভিন্ন কারণ৷ এই কর্মশালায় বক্তাদের মতে, ডায়েরিয়ার প্রাদুর্ভাবের পেছনে রাজ্য সরকারের ব্যর্থতা রয়েছে৷ সারা দেশে পাঁচ বছরের নিচে যত শিশুর মৃত্যু হয় তার মধ্যে দশ শতাংশ শিশু মৃত্যুর কারণ ডায়েরিয়া৷
ডায়েরিয়ার প্রবণতা মূলত গ্রীষ্ম এবং বর্ষার সময় বেশি দেখা যায়৷ শহরাঞ্চলের তুলনায় গ্রাম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিশুরাই বেশি ডায়েরিয়াতে আক্রান্ত হয়৷ রাজ্যেও গ্রাম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে এসময় ডায়েরিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা যায়৷ এরজন্য স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ সোসাইটির মেম্বার সেক্রেটারি ডা সুজিত কুমার চাকমা এবং পরিবার কল্যাণ ও রোগ প্রতিরোধ দপ্তরের অধিকর্তা ডা এন ডার্লং ডায়েরিয়ার প্রাদুর্ভাবের জন্য রাজ্য সরকারকে দায়ী করেছেন৷ তাদের মতে, প্রশাসনিক দুর্বলতার কারণেই ডায়েরিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা যায়৷ অবশ্য বাচ্চাদের বাবা-মায়েদেরও অজ্ঞতার কারণে শিশুরা ডায়েরিয়ায় ভোগে বলে ডা ডার্লং উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন৷ ফলে, রাজ্য সরকারকে দুর্বলতা কাটানোর জন্য এবং বাচ্চাদের বাবা-মায়েদের সচেতন করে তোলার লক্ষ্যে এক জোটে দায়িত্ব নিয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি৷ এবিষয়ে স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট কর্মী, চিকিৎসক এবং চিকিৎসা কর্মীদের কাজের প্রতি দায়বদ্ধ হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি৷ তবেই ডায়েরিয়া নিয়ন্ত্রণে যে সমস্ত কর্মসূচী হাতে নেওয়া হয় তাতে সাফল্য মিলবে বলে তিনি দাবি করেন৷এদিনের এই কর্মশালায় ওআরএস এবং জিঙ্ক ব্যবহারের পদ্ধতি সম্বন্ধে সচেতনতা বৃদ্ধি করা যাতে পাঁচ বছরের নিচে শিশুদের মধ্যে ডায়েরিয়া প্রতিরোধ এবং ডায়েরিয়া হলে কি করতে হবে তার সম্বন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়৷ এদিনের কর্মশালায় জানানো হয়েছে এই পক্ষকালে আশা কর্মীরা প্রতিটি বাড়িতে যাবেন এবং পাঁচ বছরের নিচে প্রতিটি শিশুকে একটি করে ওআরএস প্যাকেট বিতরণ করবেন৷ তার জন্য আশা দপ্তর থেকে প্রতি প্যাকেট একটাকা অনুদান দেওয়া হবে৷ এছাড়া ওআরএস তৈরির প্রদর্শন সহ বাড়ির লোকদের স্বাস্থ্য বিধি সম্বন্ধে সচেতন করবেন আশা কর্মীরা৷ পাশাপাশি প্রতিটি বিদ্যালয়ে ছেলেমেয়েদের মধ্যে প্রতিটি উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রে এএনএম ডায়েরিয়া নিয়ন্ত্রণ সম্বন্ধে সচেতনতা ও ব্যবস্থাপনা দুটো কাজই করবেন৷ প্রতিটি বিদ্যালয়ে ছেলেমেয়েদের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি সম্বন্ধে সচেতনতা এবং হাত ধোয়ার সঠিক পদ্ধতিগুলি প্রদর্শন করা হবে৷ স্বাস্থ্য দপ্তর ও বিদ্যালয় শিক্ষক দপ্তরের যৌথ উদ্যোগে এই কর্মসূচী নেওয়া হবে৷ প্রতিটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের শিশুদের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তোলা এবং হাত ধোয়ার অভ্যাস করানোর সময় ওআরএস কিবাবে ব্যবহার করা হয় তাও দেখানো হবে৷ প্রয়োজনে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রে রেফার করবে৷ গ্রামীণ স্বাস্থ্য ও পুষ্টি দিবসে পানীয় জল ও স্বাস্থ্য বিধান দপ্তর অংশগ্রহণ করে নিরাপদ পানীয় জল সম্বন্ধে সচেতন করবে৷