পণের জন্য নির্যাতিতা গৃহবধূ বাপের বাড়িতে এসে আত্মঘাতী

FIRE VICTIMনিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৪ জুন৷৷ রাজধানী আগরতলা শহর সংলগ্ণ  বনকুমারীর সাহা পাড়ায় অগ্ণিদগ্দ হয়ে মৃত্যু হয়েছে এক মহিলার৷ মৃত মহিলার নাম লিপিকা ভৌমিক(২৮)৷ স্বামীর নাম জীবন শীল৷ বাড়ি সোনামুড়া মহকুমার কলমচৌরা থানাধীন রহিমপুরে৷ প্রায় সাতবছর আগে আগরতলার যোগেন্দ্রনগরের বনকুমারী এলাকার সাহা পাড়ার রাজকুমার ভৌমিকের কন্যা লিপিকা ভৌমিকের সামাজিক প্রথায় বিয়ে হয়েছিল কলমচৌরা থানাধীন রহিমপুরের জীবন শীলের সঙ্গে৷ বিয়েতে পাত্র পক্ষের অনুযায়ী নগদ টাকা, সোনা গয়না, আসবাবপত্র সবকিছুই মিটিয়ে দিয়েছিল পাত্রীপক্ষ৷ কিন্তু তাদের দাম্পত্য জীবন সুখের  হয়নি৷ বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই পারিবারিক জীবনে কলহ চলছিল৷ বিয়ের তিন বছর পর তিনবছর পর নির্যাতিতা গৃহবধূ লিপিকা ভৌমিক  স্বামীর বাড়ি ছেড়ে বাপের বাড়িতে চলে আসে৷ গত তিনবছর ধরে বাপের বাড়িতেই আশ্রিত রয়েছে৷ স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মামলা চলছে৷ মঙ্গলবার আদালতে মামলাটি উঠার কথা ছিল৷ এরই মধ্যে সোমবার বিকেল নাগাদ লিপিকা ভৌমিক বাপের বাড়িতে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে৷ তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় জিবি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়৷ কিন্তু শেষ রক্ষা করা যায়নি৷ গত গভীর রাতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়৷ মহিলা অগ্ণিদগ্দ হওয়ার পর বাপের বাড়ির তরফ থেকে তার স্বামীর বাড়ির লোকজনদের জানানো হয়৷ কিন্তু তারা কেউ আসেননি বলে জানা গেছে৷ অগ্ণিদগ্দ হয়ে বাপের বাড়িতে মহিলার মৃত্যুর সংবাদে বনকুমারীর সাহা পাড়া এলাকায় গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে৷ জানা গেছে, মহিলা কমিশনেও লিপিকা স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছিল৷ কিন্তু দীর্ঘদিন পরও ঘটনার কোন নিষ্পত্তি না হওয়ায় হতাশাগ্রস্ত হয়েই শেষ পর্যন্ত সে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে৷ উল্লেখ্য, রাজ্যে বধূ নির্যাতন, ধর্ষণ, শ্লীলতাহানি ও অগ্ণিদগ্দ হয়ে মৃত্যুর ঘটনা দিনের  পর দিন বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে৷ তাতে  গোটা সমাজ ব্যবস্থায় বিশৃঙ্খলা বৃদ্ধি পাচ্ছে৷ সমাজ ব্যবস্থা কলুষিত হচ্ছে৷ এবিষয়ে একদিকে যেমন কঠোর আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন ঠিক তেমনই সমাজ ব্যবস্থাকেও আরো সচেতন হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন তথ্যাভিজ্ঞমহল৷