নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৭ এপ্রিল৷৷ অনিশ্চয়তার মেঘে ঢাকা পড়ল রাজ্যের স্বপ্ণের রেল৷ বহু কাঙ্খিত আগরতলা থেকে ব্রডগেজে দূরপাল্লার যাত্রা কবে নাগাদ সম্ভব হবে তা জানেন না পূর্বোত্তর সীমান্ত রেলের কর্তারাও৷ রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভাকর প্রভুর প্রতিশ্রুতি মোতাবেক বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন থেকেই রাজ্য থেকে ব্রডগেজে যাত্রী রেল শুরু হওয়ার কথা থাকলেও, তা চলতি মাসেই শুরু হবে কি না সে নিয়েও সংশয় বাড়ছে৷
সূত্রের খবর, ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে কুমারঘাট-বদরপুর স্টেশনের মাঝামাঝি স্থানে রেল লাইনের মাটি সরে গেছে৷ তাতে নতুন করে সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে৷ পূর্বোত্তর সীমান্ত রেলের জনৈক কর্তা জানিয়েছেন, ত্রিপুরা থেকে ব্রডগেজ যাত্রী রেলের সূচনা নিয়ে রেল মন্ত্রকের উদ্দেশ্য কিছুই বুঝা যাচ্ছে না৷ তাই এই রুটে যেখানে যেখানে সামান্য ত্রুটি ধরা পড়ছে তা পুণরায় অতি যত্ন সহকারে সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে৷ তাঁর কথায় পরিস্কার, হয়তা বা চলতি মাসে যাত্রী রেল পরিষেবা চালু হওয়া সম্ভব নয়, তা পূর্বোত্তর সীমান্ত রেলওয়ে কর্তারা নিশ্চিত হয়ে গেছেন৷
পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের কারণে এমনিতেই প্রধানমন্ত্রী, রেলমন্ত্রী সহ পূর্বোত্তর দায়িত্ব প্রাপ্ত মন্ত্রী ভিষণ ব্যস্ত রয়েছেন৷ প্রথা অনুযায়ী যেকোন রাজ্যের রাজধানী থেকে রেল সূচনার ক্ষেত্রে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিত থাকার কথা৷ পিএমও সূত্রে জানা গেছে, পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনকে ঘিরে প্রধানমন্ত্রীর ব্যস্ত রুটিন থেকে সময় বের করা ভিষণ মুশকিল৷ এদিকে, রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু জার্মানি সফর সেরে দেশে ফিরলেও ত্রিপুরায় যাত্রী রেল পরিষেবা সূচনা নিয়ে কোন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি বলে সূত্র অনুসারে জানা গেছে৷ ফলে, ব্রডগেজে স্বপ্ণের রেল যাত্রার জন্য রাজ্যবাসীকে আরো কয়েকটা দিন অপেক্ষা করতে হচ্ছে৷
তবে সূত্রের খবর, রেল মন্ত্রক ত্রিপুরার জন্য প্রথম এক্সপ্রেস ট্রেনটির নাম ঠিক করে ফেলেছে৷ ত্রিপুরেশ্বরী শক্তি এক্সপ্রেস দিয়ে রাজ্যে প্রথম ব্রডগেজে যাত্রী রেল ছুটবে৷ তাতে, এও প্রশ্ণ উঠেছে, কেবল আগরতলা নয়, উদয়পুর থেকে সরাসরি দিল্লি যাত্রা করার লক্ষ্যেই হয়ত এগুচ্ছে রেল মন্ত্রক৷ কারণ, সম্প্রতি সেফটি কমিশনার আগরতলায় সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন আগামী মে মাসের প্রথম অথবা দ্বিতীয় সপ্তাহে উদয়পুর পর্যন্ত রেল লাইনের সুরক্ষা পর্যবেক্ষন করবেন তিনি৷ সিগনালিংয়ের কিছু কাজ বাকি ছিল বলে আগরতলা-বদরপুর রুটে পরীক্ষা নিরিক্ষা করার একই সময়ে উদয়পুর পর্যন্ত সুরক্ষা পর্যবেক্ষন করা সম্ভব হয়ে উঠেনি৷ তাতে মনে হচ্ছে, আগামী ১৯ মে পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা হয়ে যাবে৷ সাথে সাথে উঠে যাবে নির্বাচনী আদর্শ আচরণ বিধি৷ তাতে এর পর ত্রিপুরা থেকে রেলের সূচনায় কোন বাধা থাকছে না৷ আবার মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহেই উদয়পুর পর্যন্ত সুরক্ষা পর্যবেক্ষন সম্পন্ন হয়ে গেলে ঐ রুটেও সেফটি কমিশনারের ছাড়পত্র সহজেই মিলবে বলে আশাবাদী পূর্বোত্তর সীমান্ত রেলওয়ে৷ তাতে হয়তো বা রেল মন্ত্রক চাইছে একসাথে উদয়পুর থেকেই ব্রডগেজে যাত্রী রেল পরিষেবা শুরু করার জন্য৷ এখন দেখার বিষয়, রেল মন্ত্রক কি সিদ্ধান্ত নেয়৷
2016-04-17

