নিজস্ব প্রতিনিধি, খোয়াই ও কৈলাসহর, ৯ এপ্রিল৷৷ সমস্ত নিয়ম নীতি বিসর্জন দিয়ে দূরদর্শনে সাংবাদিক নিয়োগের ক্ষেত্রে বিরাট টাকার খেলা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে৷ এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় মধ্যমণি হিসেবে রয়েছেন আগরতলা দূরদর্শন কেন্দ্রের বার্তা বিভাগের প্রধান৷ তিনি অনেক ধরাধরি করে আসাম থেকে ত্রিপুরায় এসেছেন এই বাণিজ্যের ধান্দাতেই, এমন অভিযোগ আজ রাজ্যে সাংবাদিকদের মধ্য থেকে উঠেছে৷ এই নিয়োগের ঘোটালার বিরুদ্ধে প্রসার ভারতী যদি সুষ্ঠু ব্যবস্থা না নেয় তবে দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারীকদের বিরুদ্ধে তদন্তক্রমে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে সাংবাদিকরা আন্দোলনের হুমকিও দিয়েছেন৷
জানা গিয়েছে, উত্তর জেলায় দূরদর্শনের সংবাদ প্রেরক হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন তপন বনিক৷ শ্রী বনিকের নিয়োগ নিয়ে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে৷ তিনি ঊনকোটি জেলার কুমারঘাটের বাসিন্দা৷ তাঁকে নিযুক্ত করা হয়েছে উত্তর জেলার সংবাদ প্রেরক হিসেবে৷ নিয়োগ নীতি মোতাবেক জেলা মুখ্যালয় থেকে দশ কিলোমিটারের মধ্যে প্রার্থীর স্থায়ী ঠিকানা হতে হবে৷ এদিকে, ঊনকোটি জেলায় দূরদর্শনের জেলা সংবাদ প্রেরক হিসেবে রয়েছেন অনুপম ভট্টাচার্য৷ কিন্তু, ঊনকোটি জেলার বাসিন্দা হয়েও উত্তর জেলার সংবাদ প্রেরক হিসেবে তপনবাবুর নিযুক্তির বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকদের মধ্যে নানা প্রশ্ণ উঠতে শুরু করেছে৷ নিয়োগ নীতি মোতাবেক যেখানে দশ কিলোমিটারের মধ্যে স্থায়ী ঠিকানা হতে হবে সেখানে উত্তর জেলা মুখ্যালয় থেকে অন্তত ৩৫/৪০ কিলোমিটার দূরে তপনবাবুর বাড়ি৷ সেক্ষেত্রে তিনি নিয়োগ নীতি মোতাবেক নিযুক্তি পাওয়ার যোগ্য নন বলেও অভিমত সাংবাদিকদের৷ অভিযোগ নিয়ম নীতি উলঙ্খন করে আগরতলা দূরদর্শন কেন্দ্রের বার্তা বিভাগের প্রধানকে দুই লক্ষ টাকার বিনিময়ে উত্তর জেলায় সংবাদ প্রেরকের দায়িত্ব তথা চাকুরীটি বাগিয়ে নেওয়া হয়েছে৷ আরও অভিযোগ তপনবাবু বেশীদিন হয়নি সাংবাদিকতা পেশায় এসেছেন৷ যোগ্য প্রার্থী থাকা সত্বেও সম্পূর্ণ অবৈধভাবে তাঁকে নিযুক্তি দেওয়ায় উত্তর জেলায় সাংবাদিকরা আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন৷
এদিকে, জেলা স্তরে সংবাদ প্রেরক হিসেবে যাদের নিয়োগ করা হয়েছে তাদের মাসিক বিল ভাগাভাগি করা হবে বলে জানা গেছে৷ প্রতিমাসে জেলা স্তরের সংবাদ প্রেরকরা যে বিল আগরতলা দূরদর্শন কেন্দ্রে জমা দেবেন তার একটা অংশ বার্তা বিভাগের প্রধানকে দিতে হবে৷ এই শর্তের ভিত্তিতেই জেলা স্তরের সংবাদ প্রেরক নিয়োগ করা হয়েছে বলে অভিযোগ৷ শুধু তাই নয়, জেলা স্তরে যাদের বাছাই করা হয়েছে তাদের অধিকাংশেরই প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নেই বলেও অভিযোগ৷ কারোর ক্যামেরা থাকলে গাড়ি নেই, আবার কারোর গাড়ি ও ক্যামেরা দুটোই নেই৷ তা সত্বেও কিভাবে সংবাদ প্রেরক হিসেবে নিয়োগ পাওয়া সম্ভব সেই ব্যবস্থা আগরতলা দূরদর্শন কেন্দ্রের বার্তা বিভাগের প্রধান করে দিয়েছেন বলে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে৷ এই ঘটনায় সারা রাজ্যে সংবাদ মহলে জোর প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে৷
2016-04-10