BRAKING NEWS

ত্রিপুরায় ছন্নছাড়া কংগ্রেস

tripura-congressপশ্চিমবঙ্গে আসন্ন রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনে সিপিএম এর সঙ্গে কংগ্রেসের আসন রফা চূড়ান্ত হইয়া যাওয়ার প্রতিক্রিয়ায় ত্রিপুরায় প্রধান বিরোধী দলের বিপর্য্যস্ত অবস্থা আর গোপন থাকিতেছে না৷ সিপিএমের বিরুদ্ধে এতকাল যে কংগ্রেসীরা লড়াই করিয়াছে আজ তাহারা কোথায় দাঁড়াইবে? দলের জনপ্রতিনিধিরা তো সিপিএম বিরোধীতা করিয়াই ভোটে জিতিয়াছেন৷ বহু কংগ্রেসী তো বামপন্থীদের হাতে নিগৃহীত হইয়াছেন, প্রাণ হারাইয়াছেন৷ সেই দলের সঙ্গে সখ্যতার ঘটনা তো রীতিমতো বিতর্কীত৷ অনেকেই বিশেষ করিয়া রাজনৈতিক নেতারা বলিয়া থাকেন রাজনীতিতে শেষ কথা বলিয়া কিছু নাই৷ পঃবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসকে বিদায় করিতে সিপিএমের সঙ্গে সখ্যতার ঘটনায় ত্রিপুরায় কংগ্রেস রীতিমতো ছন্নছাড়া৷ বামেদের সঙ্গে সখ্যতা চূড়ান্ত না হওয়া অবস্থায় অমরপুর বিধানসভার উপনির্বাচনে কংগ্রেসের ভাগ্যে জুটিয়াছে মাত্র ১২৪৩ ভোট৷ একেবারে ধরাশায়ী, শোচনীয় হার৷ আর পশ্চিমবঙ্গে আনুষ্ঠানিক বাম কংগ্রেস সখ্যতার ঘোষণার পর ত্রিপুরায় কংগ্রেসের ঘরে তো মড়ক লাগিয়া গিয়াছে৷ কারণ এরাজ্যে সিপিএম বিরোধীতা হইতেই কংগ্রেসের পথ চলা৷ সিপিএম দলের সঙ্গে সংঘাতের ফলে বহু খুনোখুনির ঘটনায় বার বার রক্তাক্ত হইয়াছে ত্রিপুরা৷ বহু সিপিএম কর্মী কংগ্রেসী দুবৃত্তদের হাতে প্রাণ বলি হইয়াছে৷ একইভাবে বহু কংগ্রেসের প্রাণ ছিনাইয়া নিয়াছে সিপিএম ঘাতকরা৷ সেই রক্তের উপর দাঁড়াইয়া বন্ধুত্ব চলিতে গাঢ় হইবার ঘটনায় রাজনীতির নতুন ও জটিল অধ্যায়ের সূচনা হইল বলা যাইতে পারে৷
কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব স্তরে সিপিএমের সঙ্গে বুঝাপড়ার ঘটনা নতুন নয়৷ এবং ইহাও বার বার স্পষ্ট হইয়াছে যে, কংগ্রেস কোনও দিন সিপিএমকে নির্বাচনে জয়ের পথে বাধা হইতে পারিবে না৷ তৃণমূল কংগ্রেস রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠা না পাইলে পশ্চিমবঙ্গ হইতে কোনও দিন সিপিএমকে হঠানো যাইত না৷ এই সত্যিকে আজ তো কোনও মহল অস্বীকার করিতে পারিবেন না৷ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বীরজিৎ সিন্হা সরাসরি বাম কংগ্রেস সখ্যতার বিরোধীতা করেন নাই৷ তিনি ত্রিপুরার মসনবদারী পাইয়াই তুষ্ট৷ কিন্তু কংগ্রেসের বেশীর ভাগ বিধায়কদের সামনে তো অনিশ্চিত ভবিষ্যত৷ কংগ্রেসে তো কর্মী পাওয়াই মুশকিল হইবে? এরাজ্যে তৃণমূল বা অন্য বামবিরোধী দলের ভবিষ্যত কতখানি তাহা নিয়াও প্রশ্ণ উঠিবে৷ কারণ ত্রিপুরায় কংগ্রেস মৃতপ্রায় জানিয়াই অনেক নেতাই দল ছাড়ার কথা ভাবিতেছেন৷ নিজেদের রাজনৈতিক ভবিষ্যতকে রক্ষার ক্ষেত্রে কংগ্রেস ত্যাগ ছাড়া বিকল্প আছে মনে হয় না৷ আজ কংগ্রেস ভবন শুনসান৷ কর্মীরা হতভম্ব৷ অথচ এরাজ্যে নির্ভরযোগ্য অবাম দলের রমরমা অবস্থাও দেখা যায় না৷ পশ্চিমবঙ্গে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের উপর গোটা দেশের মানুষকেই তাকাইয়া থাকিবার কথা৷ কারণ, যে তৃণমূল কংগ্রেস ও কংগ্রেস জোট বাঁধিয়া সিপিএমকে হঠাইয়াছে, আজ কংগ্রেস সিপিএম জোট বাঁধিয়া তৃণমূল হঠাইতে ময়দানে নামিবার ঘটনা তো রীতিমতো ঐতিহাসিক৷ ত্রিপুরার কংগ্রেসকে শ্মশানে পাঠাইয়া পশ্চিমবঙ্গের মাটি খঁুজিতে বামেদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করিয়া কংগ্রেস আজ গভীর প্রশ্ণের মুখে দাঁড়াইয়া আছে৷ সিপিএম দলের রণকৌশলই কংগ্রেসের সমাধি রচনা করিবে৷ এই সত্যিকে কোনওভাবেই অস্বীকার করা যায় না৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *