নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৫ ফেব্রুয়ারি৷৷ চিকিৎসা গাফিলতিতে সদ্যোজাত শিশুর মৃত্যু সত্ত্বেও শাসক দলের নেতাদের কাছে নতজানু শিক্ষক থানায় মামলা কিংবা ঘটনার তদন্তের দাবি জানানোর সাহস তুলেন না৷ ঘটনা মেলাঘরে৷
চিকিৎসকের গাফিলতিতে মেলাঘর হাসপাতালে সদ্যোজাত একটি শিশুর মৃত্যু হল৷ হৃদয় বিদারক এই ঘটনার পরও দুঃখবেদনাকে বুকে চাপা দিয়েই বসে রইলেন মৃত শিশুটির পিতা৷ ঘটনার বিবরণে জানা যায়, বৃহস্পতিবার ভোর চারটা নাগাদ প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে মেলাঘর হাসপাতালে ভর্তি হন পূর্ব নলছড় এলাকার শিক্ষক বিষ্ণু দেবনাথের স্ত্রী প্রিয়াংকা দেবনাথ৷ প্রসূতিকে হাসপাতালে ভর্তি করেই দায়িত্ব খালাস করেন কর্তব্যরত নার্সরা৷ স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ জি কে দেবনাথের কাছে আগে থেকেই প্রাইভেট চিকিৎসা করাতেন প্রিয়াংকা৷ প্রিয়াংকার ডেলিভারির তারিখ ছিল ১৬ ফেব্রুয়ারি৷ কিন্তু হঠাৎ প্রসব যন্ত্রণা শুরু হওয়ায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়৷ হাসপাতালে কর্তব্যরত মহিলা চিকিৎসক রোগীর দিকে কোন নজরই দেননি৷ হাসপাতালের শয্যায় প্রসব যন্ত্রণার অবিরাম চিৎকার করছিলেন প্রসূতি মা৷ প্রসূতির পরিবারের তরফে নার্স ও চিকিৎসককে বারবার অনুরোধ করা হয়েছে৷ তাতে সাড়া দেননি তারা৷ শুক্রবার বেলা সাড়ে দশটা নাগাদ গর্ভস্থ সন্তানের প্রায় অর্ধেক অংশ প্রসব হয়ে বেরিয়ে আসে৷ সন্তানটির একাংশ আটকে রয়েছিল৷ তখনই চিকিৎসক জিকে দেবনাথ এসে একটি ইনজেকশন পোশ করেন৷ ইনজেকশান পোশ করার পাঁচ মিনিটের মধ্যেই শিশুটির মৃত্যু হয়৷
ভোর সাড়ে চারটা থেকে বেলা সাড়ে দশটা অর্থাৎ ছয়ঘন্টা প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে হাসপাতালে ছটফট করতে হয়েছে একরকম বিনা চিকিৎসায়৷ চিকিৎসকদের চরম অবহেলাতেই সদ্যোজাত শিশুটির যে মৃত্যু হ য়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না৷ এতবড় অপরাধের পরও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার সাহস পায়নি সদ্যোজাত মৃত শিশুটির পরিবার৷ জানা যায়, শাসক দলের নেতাদের পরামর্শ মেনে নিতে বাধ্য হয়েছেন শিক্ষক বিষ্ণু দেবনাথ৷ তবে বিষয়টি মহকুমা ও জেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের নজরে এসেছে৷ তদন্তের আশ্বাস কতখানি বাস্তবায়িত হবে তা নিয়েও সন্দেহ দেখা দিয়েছে৷
হাসপাতাল গুলিতে একের পর এক বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর ঘটনা রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবাকে রীতিমত প্রশ্ণের সম্মুখীন করেছে৷ অনেক ক্ষেত্রেই অভিযোগ করার সাহসও পাচ্ছেন না অনেকেই৷ মেলাঘর হাসপাতালের ঘটনা এরই উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত৷
2016-02-06