কংগ্রেসের দাবি তিন জেলায় বন্ধ সফল, জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে বলল সিপিএম

Kailasahar Bandhনিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, কৈলাসহর, চুড়াবাড়ি, ১৮ জানুয়ারি৷৷ রাজ্যের তিন জেলায় ১২ ঘন্টার বন্ধ সর্বাত্মক সফল বলে দাবি করেছে প্রদেশ কংগ্রেস৷ অন্যদিকে, সিপিএমের দাবি জনগণ এই বন্ধ প্রত্যাখান করেছে৷
এদিন, প্রদেশ কংগ্রেসের ডাকা ১২ ঘন্টার বনধ শান্তিপূর্ণভাবে অতিবাহিত হয়েছে কৈলাসহরে৷ পিকেটিং করায় ২৩৬ জনকে কংগ্রেস কর্মীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে৷ বিকেলে ব্যক্তিগত বন্ডে তাদের মুক্তি দেওয়া হয়৷ কৈলাসহরে বন্ধ ছিল সর্বাত্মক৷
[vsw id=”L36t77BBL90″ source=”youtube” width=”325″ height=”244″ autoplay=”yes”]সাত সকালে কৈলাসহর মোটরস্ট্যান্ডে পিকেটাররা সক্রিয় ছিল৷ সেখান থেকে কোনো যানবাহন চলাচল করেনি৷ বাস, অটো, টুকটুক স্ট্যান্ড ছিল শুনশান৷ দোকানপাট ছিল বন্ধ৷ সুকল কলেজ বন্ধ ছিল৷ কিছু অফিস, আদালত খোলা থাকলেও উপস্থিতি ছিল নামমাত্র৷ পিকেটাররা ছিল সক্রিয়৷ তবে আরক্ষা প্রশাসন থেকে পর্যাপ্ত টিএসআর পুলিশ মোতায়েন ছিল শহরে৷ পুলিশ সুপার, এসডিপিও, কৈলাসহর থানার ওসি বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছেন৷ জেলা কংগ্রেস সভাপতি বদরুজ্জমানের নেতৃত্বে ২৩৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ তাদের টাউন হলে অস্থায়ী জেল ঘোষণা করে রাখা হয়েছিল৷ সিপিএম বন্ধের বিরোধিতা করলেও ক্যাডার নামানো হয়নি৷ ২২ দফা দাবিতে মহকুমা বন্ধ সর্বাত্মক হয়েছে দাবি করে জেলা কংগ্রেস সভাপতি বদরুজ্জমান কৈলাসহরবাসীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন৷
এদিকে, প্রদেশ কংগ্রেসের তরফে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তিন জেলায় ১২ ঘন্টার বন্ধ বামফ্রন্টের উস্কানী ও প্ররোচনাকে উপেক্ষা করে জনগণ যে স্বতঃস্ফুর্ত ভাবে সাড়া দিয়ে সমর্থন করেছে এই মর্মে ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বীরজিৎ সিনহা সংশ্লিষ্ট জেলার সমস্ত জনগণকে এবং পিকেটিং এ অংশ গ্রহণ করে যে সাত শতাধিক কংগ্রেস নেতা কর্মী গ্রেপ্তার বরণ করেছেন প্রত্যেকেকে প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির পক্ষ থেকে আন্তরিক অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জানিয়েছেন৷ তিনি বলেন উক্ত ২০ দফা জনস্বার্থ সম্পর্কিত দাবী সনদ বামফ্রন্ট সরকার কর্তৃক আনিত বিলম্বে বাস্তবায়িত না হলে আগামী দিনে বৃহত্তর গণ আন্দোলন সংঘটিত করা হবে৷
কংগ্রেসের ডাকা তিন জেলায় বারো ঘন্টা বন্ধ জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে বলে মন্তব্য করেছে সিপিএম রাজ্য সম্পাদকমন্ডলী৷ দলের পক্ষ থেকে এদিন এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আজ ধলাই জেলা, উনকোটি জেলা ও উত্তর ত্রিপুরা জেলার জনগণ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির ডাকা বন্ধের আহ্বান প্রত্যাখ্যান করায় সি পি আই (এম) রাজ্য সম্পাদকমন্ডলী ওই তিন জেলার নাগরিকদের অভিনন্দন জানিয়েছে৷
২০ দফা বিশেষ দাবির ভিত্তিতে আজ তিন জেলায় কংগ্রেসের ডাকা বন্ধ স্বত,স্ফূর্ত পালিত হয়৷ উত্তরের সিংহ বলে পরিচিত বীরজিৎ সিনহার নেতৃত্বে সাধারন মানুষের স্বার্থে ডাকা বন্ধে উত্তরে ব্যাপক উৎসাহ পরিলক্ষিত৷ যদিও কর্মনাশা বন্ধের প্রভাব পড়ে বহিঃরাজ্য থেকে আসা যত্রীবাহী সুপার বাস ও পন্যবাহী লরিগুলোর উপর৷ দিনভর পার্শ্ববতী আসাম গেইটে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে যাত্রীবাহী গাড়িগুলোকে৷ তাতে অবশ্য দূরদুরান্তের যাত্রীরা চরম ভোগান্তির শিকার৷ এদিকে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী বন্ধ হওয়ায় আজ সকাল থেকেই কংগ্রেস কর্মী সমর্থকরা হাতে পতাকা নিয়ে বেরিয়ে পড়েন৷ রাজ্যের শেষপ্রান্ত অর্থাৎ চুরাইবাড়ি থেকে কদমতলা, ধর্মনগর সহ সমস্ত উত্তরজেলায় পিকেটারদের দখলে চলে যায়৷ দোকনাপাঠ, অফিস আদালত সুকল এবং গাড়ি চলাচলও বন্ধ ছিল৷ এককথায় বলা যেতে পারে উত্তরে বন্ধ ছিল সর্বাত্মক সফল৷
আজ জাতীয় সড়কে যেমন সব ধরনের যানবাহন চলাচল করেছে, তেমনি তিন জেলার বিভিন্ন মহকুমার গাড়ী চলাচল করেছে৷ অফিস-আদালত খোলা ছিল৷ বাগিচাগুলোতে স্বাভাবিক হাজিরায় কাজ হয়েছে৷ হুজ্জুতি এড়াতে কৈলাশহর ও ধর্মনগর শহরে দোকান-পাট বন্ধ থাকলেও ধলাই জেলার সর্বত্র, পেচারথল, কাঞ্চনপুরে জীবনযাত্রা সম্পূর্ণ স্বাভাবিক ছিল৷ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির বনধের দাবির সঙ্গে জনস্বার্থের কোন সম্পর্ক ছিল না৷ একের পর এক নির্বাচনে জনগণের রায়ে পরাজিত হওয়ার পরও দেউলিয়া কংগ্রেস দলের নেতারা কোন শিক্ষা নেননি৷ মানুষ বনধের ডাকে সাড়া না দিয়ে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ রক্ষা করে উন্নয়ন বিরোধী শক্তিকে উপযুক্ত জবাব দিয়েছেন৷