ভারত সরকারের সম্পূর্ণ ব্যবস্থাপনায় শিক্ষক সাংবাদিকদের হায়দ্রাবাদ সফর ঘিরে নানা প্রশ্ণ

PIBনিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৮ জানুয়ারি৷৷ আকাশবাণী ও দুরদর্শন প্রসার ভারতীর নিয়ন্ত্রণাধীন৷ ভারত সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের অধীন এই প্রসার ভারতীর কাজকর্ম নিয়ে যখন প্রশ্ণ উঠেছে তখন স্বাভাবিক ভাবেই প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরোর (পিআইবি) প্রসঙ্গও এসে পড়ে৷ প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো বা পিআইবি কেন্দ্রীয় সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ৷ সারা দেশেই ছড়িয়ে আছে এই শাখা৷ এই ত্রিপুরায় ষাটের দশকেও এই বিভাগের অস্তিত্ব ছিল৷ পিআইবি’র আগরতলা শাখাটি বরাবরই ভাড়া বাড়ীতেই৷ এরাজ্যে প্রথম অফিস গড়ে উঠেছিল বনমালীপুরে, বর্তমানে শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের ঠিক উল্টো দিকে ভাড়া বাড়ীতে৷ এর পর বনমালীপুর গণরাজ চৌমুহনীর কাছে ভাড়া বাড়ীতে৷ সামনে উঠোন ইত্যাদি নিয়ে বড়সর বাড়ী৷ এরপর বর্তমানে এই অফিসটি কর্ণেল চৌমুহনীর কাছে একটি ভাড়া বাড়ীতেই আছে৷ এই অফিসের বড় কর্তা পদে বহির্রাজ্যের অফিসাররা কাজ করে গেছেন৷ এই পদে যাহারা কাজ করেছেন তাঁদের সকলেই মিডিয়ার সাথে গভীর সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল৷ এবং তাদের মধ্যে কোনও দিন রাজনৈতিক সংকীর্ণতা দেখা যায়নি৷ সংবাদপত্র সম্পাদক ও সাংবাদিকদের সঙ্গে পিআইবি’র নিবিড় সম্পর্ক, সে এক ইতিহাস৷ পিআইবি’র বরাবরই সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গেই সংযোগ ছিল বেশী৷ সংবাদপত্রে বা বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন কর্মসূচীর তথ্য, নিবন্ধ ইত্যাদি তুলে ধরার ক্ষেত্রে পিআইবি দায়িত্ব পালন করে চলেছে৷ মূলতঃ সংবাদপত্র ও প্রচার মাধ্যমের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রক্ষা করে যাওয়া পিআইবি কবে থেকে কবি, অধ্যাপকদের প্রতি অনুরক্ত হয়ে পড়ল, এতদিন জানা যায়নি৷
সম্প্রতি, ত্রিপুরার সাংবাদিক, লেখক, সরকারী কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপককে নিয়ে একটি দল ভারত সরকারের অর্থানুকুল্যে ও ব্যবস্থাপনায় হায়দ্রাবাদ সপ্তাহকাল সফর করেছেন৷ এই সফর সমাপ্ত হওয়ার দীর্ঘ সময় পরও এই সফরের অভিজ্ঞতা লব্ধ বর্ননা সহ কোনও সংবাদ ফিচার তেমন সংবাদপত্রের পাতায় গুরুত্ব সহকারে আসেনি৷ ভারত সরকারের সফরগুলির মূল লক্ষ্য হল সংবাদপত্রের মাধ্যমে তা সাধারণের সামনে তুলে ধরা৷ হায়দ্রাবাদের এই সরকারী সফরে যেসব ভাগ্যবানরা অংশ নিয়েছেন তাঁদের নামধামও তেমন প্রকাশ্যে আনা হয়নি৷ খুব গোপনেই এই কর্মটি সেরে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে৷ হায়দ্রাবাদ সফরের জন্য যেসব হাউস বা ব্যাক্তি মনোনিত হয়েছেন তাদের বিষয়টি গোপন থাকার কথা নহে৷ এই সফরকারী দলের সংগে গিয়েছেন আগরতলা পিআইবি’র শাহেনশা শুভাশীষ চন্দ স্বয়ং৷ এই টিমে আকাশবানী থেকেও সাংবাদিক রয়েছেন৷ পিআইবি’র দিস্তাদিস্তা কাগজ ব্যবহৃত হয় কেন্দ্রীয় সরকারের সংবাদ ভাষ্য প্রচারে৷ কিন্তু হায়দ্রাবাদে কেন্দ্রীয় সরকার লাখো লাখো টাকা ব্যয়ে ত্রিপুরার সাংবাদিক, কবি, সাহিত্যিক, সরকারী কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক নিয়ে সফরের এতবড় সংবাদ পিআইবি চেপে গেল কেন? সাংবাদিক, লেখক, পেনশনপ্রাপ্ত শিক্ষককে হায়দ্রাবাদ ভ্রমণের কাহিনী প্রচারে নিলে তো সাধারণ মানুষ পিআইবিকে, কেন্দ্রীয় সরকারকে ধন্য ধন্য করত৷ কেন এত বড় সংবাদের প্রেস রিলিজ পর্য্যন্ত করল না পিআইবি৷ কেন সফরকারী দলে কারা রয়েছেন নামধাম প্রচারে নিল না পিআইবি? কেন্দ্রীয় সরকারের অতি সাধারণ বিষয়ও পিআইবি’র প্রেস রিলিজে স্থান পায়৷ অথচ ভারত সরকারের অর্থানুকুল্যে ত্রিপুরার টিমের হায়দ্রাবাদ সফরের পর তো পিআইবি ফিচার, স্টোরি রিলিজ করতে পারত বা করা উচিত ছিল৷ তাহলে রাজ্যের অন্যান্য মিডিয়া তা প্রচারে নিতে পারত৷ এক্ষেত্রে পিআইবির আগরতলার শাহেনশা কি জবাব দেবেন জানা নেই৷ আর এটাও জানা নেই তিনি কোন্ ভিত্তিতে এইসব সফরকারীদের নাম নির্বাচন করেছেন? পিআইবি কেন্দ্রীয় সরকারের তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রকের অধীন হলেও এরাজ্যে কার অঙ্গুলী হেলনে পরিচালিত হয় তা সহসাই ফাঁস হবে বলে বিশ্বাস করা যেতে পারে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *