প্রার্থীদের নিরাপত্তা না দিলে সহ্য করা হবে না ঃ বীরজিৎ, রাফায়েল ইস্যুতে রাজভবন অভিযান করে পঞ্চায়েত ভোটের আগেই শক্তি পরীক্ষা দেবে কংগ্রেস

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৩ সেপ্ঢেম্বর৷৷ রাফায়েল ইস্যুকে পুঁজি করে রাজ্যেও বিজেপির উপর চাপ বাড়াতে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগেই শক্তির

সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন পিসিসি সভাপতি বীরজিৎ সিনহা৷ ছবি নিজস্ব৷

মহড়া দিতে চাইছে কংগ্রেস৷ কারণ, গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রায় দুই তৃতীয়াংশ আসনে উপ-নির্বাচন ৩০ সেপ্ঢেম্বর৷ তাই, রাফায়েল ইস্যুতে ২০ সেপ্ঢেম্বর রাজ ভবন অভিযান করবে দল৷ সোমবার সাংবাদিক সম্মেলনে এই ঘোষণা দিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বীরজিৎ সিনহা৷ এদিকে, পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত না হলে কংগ্রেস নীরবে সহ্য করবে না, সাথে এই হুশিয়ারীও দিয়েছেন তিনি৷ তাঁর কথায়, বিজেপি-আইপিএফটি সরকার গঠন হতেই ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে জনপ্রতিনিধিরা পদত্যাগ করেছেন৷ তাই প্রত্যেক প্রার্থীর নিরাপত্তার দায়িত্ব রাজ্য সরকারকেই নিতে হবে৷

এদিন বীরজিৎবাবু আবারও রাফায়েল ইস্যুতে সুর চড়িয়েছেন৷ তবে, লক্ষ্য যে শক্তির মহড়া দেওয়া তাও তিনি বুঝিয়েছেন৷ তাঁর কথায়, রাফায়েল যুদ্ধ বিমান ক্রয়ের মাধ্যমে দেশের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ কেলেঙ্কারী করেছে মোদী সরকার৷ তাই এই দূর্নীতির প্রতিবাদে আগামী ২০ সেপ্ঢেম্বর রাজভবন অভিযান করবে প্রদেশ কংগ্রেস৷ তাঁর দাবী, অন্তত দশ হাজার কর্মী সমর্থক নিয়ে রাজভবন অভিযানে যাবে প্রদেশ কংগ্রেস৷ বীরজিৎ সিনহার কথায়, যুব কংগ্রেসকে সাথে নিয়ে ভারত বাঁচাও রাফায়েল দূর্নীতি ব্যানারে ওই দিন সকাল এগারটায় পোস্ট অফিস চৌমুহনী থেকে মিছিল করে রাজভবনের দিকে রওয়ানা দেবেন দলীয় কর্মী সমর্থকরা৷ বীরজিৎবাবু সাথে যোগ করেন, ওই কর্মসূচীতে অংশ নিতে সর্বভারতীয় যুব কংগ্রেস সভাপতি কেশব চাঁদ, সহ-সভাপতি শ্রীনিবাস বিভি এবং ত্রিপুরার দায়িত্বপ্রাপ্ত কংগ্রেস পর্যবেক্ষক লুইজিনো ফেলেইরো রাজ্যে আসবেন৷ বিমানবন্দর থেকে এক সুবিশাল বাইক র্যালী করে প্রদেশ কংগ্রেস ভবনে নিয়ে আসা হবে৷

শ্রীসিনহা জানিয়েছেন, রাজভবন অভিযানে রাষ্ট্রপতির উদ্দেশ্যে রাজ্যপালের কাছে স্মারকলিপি তুলে দেওয়া হবে৷ রাফায়েল দূর্নীতি নিয়েই স্মারকলিপি পাঠানো হবে৷ পাশাপাশি  রাজভবনের কাছে এক সমাবেশও করবে প্রদেশ কংগ্রেস৷ বীরজিৎ সিনহার কথায়, রাফায়েল দূর্নীতি নিয়ে সারা রাজ্যে প্রচার চালানো হবে৷

এদিকে, ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নিয়ে রাজ্য সরকারকে কড়া হুশিয়ারী দিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি৷  পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত না হলে প্রদেশ কংগ্রেস চুপ থাকবে না৷ বীরজিৎবাবুর বক্তব্য, পঞ্চায়েত উপনির্বাচনের ঘোষণা হয়েছে৷ প্রদেশ কংগ্রেস বর্দ্ধিত সভা ডেকে সবকটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ ৩০ সেপ্ঢেম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের দুই তৃতীয়াংশ আসনে উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে৷ ফলে, এই উপ-নির্বাচনকে বিধানসভা নির্বাচনের সমতুল্য বলেই মনে করছেন বীরজিৎ সিনহা৷ তাঁর কথায়, ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে উপ-নির্বাচন সাধারণ নির্বাচনের তুলনায় কোন অংশেই কম নয়৷

বীরজিৎ সিনহার কথায়, প্রত্যেকটি নির্বাচনী ক্ষেত্রে আইন শৃঙ্খলার সুস্থ পরিবেশ থাকা বাঞ্ছনীয়৷ তেমনি প্রত্যেক প্রার্থীর নিরাপত্তা দেওয়া রাজ্য সরকারের দায়িত্ব৷ তাঁর মতে, রাজ্য সরকারের জন্যই উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে৷ কারণ, বিজেপি-আইপিএফটি সরকার গঠন হওয়ার পরই ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে জনপ্রতিনিধিরা পদত্যাগ করেছেন৷ এদিকে, প্রার্থী বাছাইয়ের আগেই শাসক দলের সমর্থকরা হুমকি দেওয়া শুরু করেছে৷ বীরজিৎ সিনহার কড়া হুশিয়ারী, উপনির্বাচনে গণতন্ত্রের সুস্থ পরিবেশ না থাকলে প্রদেশ কংগ্রেস তা নীরবে সহ্য করবে না৷

এদিন প্রদেশ কংগ্রেস মুখপাত্র আইনজীবী হরেকৃষ্ণ ভৌমিকও রাজ্য সরকারকে চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করেছেন৷ তাঁর কটাক্ষ, সরকারী কর্মচারীরা সপ্তম বেতন কমিশন এখনও পাননি, বেকারদের কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি থেকে সরে আসছে বিজেপি৷ সাথে তিনি যোগ করেন, প্রকাশিত খবর অনুযায়ী বহু সরকারী কর্মচারী এখনও বেতন পাননি৷ পাশাপাশি, টাকার অভাবে সরকার নির্দেশ দিয়েছে মেডিক্যাল বিল, ঠিকেদারদের বিল প্রদান আপাতত বন্ধ রাখার জন্য৷ এমনকি জিপিএফ থেকেও এখন সরকারী কর্মচারীরা টাকা তুলতে পারবেন না, রাজ্য সরকারের ফরমানে তা বন্ধ রাখা হয়েছে৷