নির্বাচন কমিশনে গেল বিজেপি পাঁচ দফা দাবীতে স্মারকলিপি

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৪ নভেম্বর৷৷ রাজ্যের সীমান্ত এলাকা বক্সনগরে সিপিআইএম ভাড়াটে বাংলাদেশীদের দিয়ে বিজেপি কর্মীদের উপর হামলা চালানোর তথ্য প্রমাণ নিয়ে নির্বাচন কমিশনে গেল বিজেপি৷ বিজেপি প্রতিনিধি দলে ছিলেন, সাংসদ মীনাক্ষী লেখি, ত্রিপুরা রাজ্য প্রভারী সুনীল দেওধর এবং ডাঃ অশোক সিনহা৷ মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের কাছে অভিযোগ করা হয়েছে, ভোটার তালিকায় অনিয়ম রয়েছে৷ বহু বছর ধরে মিথ্যা নথিপত্র দিয়ে বাংলাদেশিদের নাম তোলায় সিপিআইএম৷ এই বিষয়ে অনেক তথ্য প্রমাণ আজ পেশ করা হয়েছে৷ এই অবস্থায় বক্সনগরে গতকাল ধর্মঘটের সময় পুলিশের সামনে বিজেপি কর্মীদের উপর ক্যাডার বাহিনী ভাড়াটে বাংলাদেশীদের নিয়ে হামলা চালায়৷ তারা নির্বাচন কমিশনে গিয়ে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তথ্য প্রমাণ পেশ করবেন৷ অনুপ্রবেশ রোধে এবং শাসকদল যাতে ভাড়াটে বাংলাদেশীদের কাজে লাগাতে না পারে তার জন্য সীমান্ত সিল করে দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে৷ একই সঙ্গে ভোটার তালিকা একশ শতাংশ সঠিক করার দাবীও করা হয়েছে৷ একই সঙ্গে ভোটার তালিকা থেকে শুরু করে ভোটের কাজে নিযুক্ত সকলের নিরপেক্ষতা সুনিশ্চিত করার দাবীও করা হয়েছে৷
এদিকে, বিজেপির তরফে এক প্রেস বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আজ ২৪শে নভেম্বর ভারতীয় জানতা পার্টির এক প্রতিনিধি দল ত্রিপুরা স্বচ্ছ এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে ভারতের নির্বাচন কমিশনের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চের সাথে এক সাক্ষাৎকারে মিলিত হন৷ এই প্রতিনিধিদের ছিলেন সাংসদ এবং পার্টির রাষ্ট্রীয় প্রবক্তা মীনাক্ষী লেখী, ত্রিপুরার রাষ্ট্রীয় প্রভারী সুনীল দেওধর, ত্রিপুরা প্রদেশ প্রবক্তা এবং নির্বাচন কমিটির আহ্বায়ক ডাঃ অশোক সিনহা৷ অতীতের অভিজ্ঞতার নিরিখে উক্ত প্রতিনিধি দল নিম্নলিখিত দাবী সমূহ পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চের তুলে ধরেন৷ ভোটার তালিকা -ইস্ট্রেন্সিভ রিভিশন করতে হবে৷ শেষ বারের মতো ২০০৪ সালে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছিল৷ ভোটার তালিকায় প্রচুর অনিয়মএবং কারচুপি করা হয়েছে৷ অতএব, ইন্টেস্পিভ রিভিশন এর মাধ্যমে ক্রটিমুক্ত ভোটার তালিকা তৈরী করতে হবে৷ ত্রিপুরার জাতীয় স্তরের পত্রিকার রিচ তেমন একটা নেই এবং স্থানীয় ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম গুলিও সাটেলাইট নয়, সবগুলিই কেবল দ্বারা পরিচালিত৷ অতএব, এইসব বহুল প্রচারিত চ্যানেলগুলোতে ভোটার সচেতনতা বিষয়ক বিজ্ঞাপন খুব একটা প্রচারিত হয় না৷ এমতাবস্থায় ভোটারদের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তুলতে আমরা এই সমস্ত স্থানীয় চ্যানেল গুলোতে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে ভোটারদের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তোলার আহ্বান জানাচ্ছি৷ এবার ইভিএম এর সাথে ভিভিপ্যাট নতুন যুক্ত করা হয়েছে৷ এখনো আম জনতার মধ্যে এ নিয়ে স্পষ্ট ধারনা গরে ওঠেনি৷ এই সুযোগে সিপিএম এর পক্ষ থেতে অপপ্রচার করে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে এই বলে যে, ভোট হবার পর বুথ থেকে বেরিয়ে স্লীপ সিপিএম নেতাদের প্রদর্শন করতে হবে৷ এতে বোঝা যাবে ভোট কাকে দেওয়া হয়েছে৷ এই ধরণের অপপ্রচারের বিরুদ্ধে আসল সত্যটা স্থানীয় ভাষায় এবং জনজাতিদের ভাষায় প্রচারের অনুরোধ রাখছি৷ ভোট চলাকালীন সামনের গোপনীয় পর্দা যথেষ্ট পরিমাণ উঁচু রাখতে হবে যাতে ভোট দেবার সময় ভোটারের মুখ না দেখা যায়৷ সাধারণত, ২ ফুটের কার্ড বোর্ড এর বদলে কাপড় অথবা বিকল্প কিছু দিয়ে ব্যবস্থা করতে হবে যাতে করে ভোট চলাকালীন ভোটারের মুখ বাইরে থেকে দেখা না যায়৷ আন্তর্জাতিক সীমান্ত ভোটের আগে সীল করতে হবে যাতে, দ্বৈত নাগরিকত্ব আছে এমন বাংলাদেশীরা তাঁদের অবৈধ ভোটাধিকার প্রয়োগ না করতে পারে৷ তাছাড়া, আরও অন্যান্য ইস্যুতে মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের সাথে এবং অন্যান্য অধিকারীদের সাথে বিভিন্ন বিষয়ে প্রতিনিধি দলের আলোচনা হয়৷ নির্বাচন কমিশন প্রতিনিধি দলকে আশ্বস্ত করেছেন, স্বচ্ছ এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে সমস্তরকম সম্ভাব্য পদক্ষেপ নেওয়া হবে৷