আগরতলা, ২৪ মার্চ (হি.স.)৷৷ ত্রিপুরা বিধানসভার অধ্যক্ষ রেবতীমোহন দাসের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ এনেছেন বিজেপি বিধায়ক সুধাংশু দাস৷ অভিমান করে আজ তিনি অধ্যক্ষকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আমার চেহেরা বোধহয় আপনার পছন্দ নয়৷ তাই, হয়তো বিরোধী দলের দুই সদস্যকে বক্তব্য রাখার সময় দেওয়া সম্ভব হলেও আমাকে কথা বলার অনুমতি দিচ্ছেন না৷ বিষয়টি খুবই অদ্ভুত৷ প্রসঙ্গত, গত দুদিন ধরে অধ্যক্ষের আচরণে ট্রেজারি বেঞ্চের সদস্যরা অসন্তোষ প্রকাশ করছেন৷ আজ প্রশ্ণোত্তর পর্বে প্রশ্ণ কর্তা হয়েও অতিরিক্ত কিছুই জানতে চাননি বিধায়ক সুধাংশু দাস৷
আজ ত্রিপুরা বিধানসভার বাজেট অধিবেশনের চতুর্থ দিনে প্রশ্ণোত্তর পর্বে বিধায়ক রঞ্জিত দাস বিদ্যালয় সংক্রান্ত বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী জবাব দেওয়ার পর বিধায়ক সুধাংশু দাস নিজ বিধানসভা ক্ষেত্র ফটিকরায়স্থিত দুটি বিদ্যালয়ের সমস্যা নিয়ে দফতরের মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করেন৷ কিন্তু অধ্যক্ষ তাঁকে অনুমতি দেননি৷ বরং সময়ের অভাবে প্রশ্ণকর্তা ছাড়া অন্য কাউকে কথা বলার সুযোগ সম্ভব নয় বলে সাফ জানিয়ে দেন তিনি৷ কিন পরবর্তী সময়ে বিরোধী দলের সুধন দাসের মৎস্য সংক্রান্ত বিষয়ে প্রশ্ণের জবাব সংশ্লিষ্ট দফতরের মন্ত্রী জবাব দেওয়ার পর বিধায়ক ভানুলাল সাহা আরও অতিরিক্ত প্রশ্ণও উত্থাপন করেন৷ শুধু তা-ই নয়, মন্ত্রীর কাছ থেকে ওই সব প্রশ্ণের জবাব আদায়ে জোর চেষ্টা করেছেন৷ ভানুলাল সাহা প্রশ্ণকর্তা না হয়েও কথা বলার সুযোগ পাওয়ায় চটে লাল হয়ে যান বিজেপি বিধায়ক সুধাংশু দাস৷
শুধু তা-ই নয়, সুযোগ পেয়েই তিনি অধ্যক্ষকে কটাক্ষ করতেও ছাড়েননি৷ এদিন সুধাংশু বাবু চাকরিচ্যুত ১০৩২৩ শিক্ষকদের সম্পর্কে প্রশ্ণ আনেন এবং শিক্ষা মন্ত্রী ওই প্রশ্ণের জবাব দেন৷ কিন্তু অতিরিক্ত প্রশ্ণ জানতে চাওয়ার বদলে তিনি চাঁচাছোলা ভাষায় অধ্যক্ষকে বিঁধেছেন৷ তিনি বলেন, আপনার হয়তো আমার চেহারা পছন্দ নয়৷ তাই, বিরোধী দলের সদস্যকে কথা বলার সুযোগ দিচ্ছেন, অথচ আমার ক্ষেত্রে সময় কম অজুহাত দেখাচ্ছেন৷ তিনি তীব্র ক্ষোভের সুরে বলেন, বিধানসভার সদস্য হিসেবে আইন এবং এক্তিয়ার সম্পর্কে আমাদেরও সম্যক ধারণা রয়েছে৷ ফলে, বিরোধী দলের সদস্যদের যতটা অধিকার রয়েছে, আমাদের ঠিক ততটাই কথা বলার অধিকার আছে৷ কিন্তু, আপনার আচরণ ভীষণ অদ্ভুত লাগছে৷
তাতে অধ্যক্ষ আত্মপক্ষ সমর্থনে সাফাই দেওয়ার চেষ্টা করেন৷ কিন্তু অভিমানে সুধাংশু প্রশ্ণকর্তা হয়েও কোনও অতিরিক্ত প্রশ্ণ করবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন৷
প্রসঙ্গত, গতকালও বিজেপি বিধায়ক আশিস দাস শূন্যকালে অধ্যক্ষের কাছে একটি বিষয় উত্থাপনের অনুমতি চেয়েছিলেন৷ কিন্তু অধ্যক্ষ সময়ের অভাব অজুহাত দেখিয়ে তাঁকেও অনুমতি দেননি৷ পরবর্তীতে অধ্যক্ষ চলে যাওয়ার পর উপাধ্যক্ষ দায়িত্ব নেন এবং তিনিও আশিস দাসকে বক্তব্য রাখার অনুমতি দেননি৷ তাতে, বিজেপি বিধায়ক সুদীপ রায়বর্মণ তীব্র আপত্তি জানান এবং বিধানসভায় নিয়ম বিরুদ্ধ কাজ করার অধিকার কারোর নেই তা মনে করিয়ে দেন৷ সাথে তিনি প্রস্তাব রাখেন, সর্বদলীয় বৈঠক ডেকে শূন্যকালে কোনও বিষয় উত্থাপন করা যাবে না এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হোক৷