বিকল্প রোজগারের দিশা দেখালেন মুখ্যমন্ত্রী

আগরতলা, ২২ মার্চ (হি.স.)৷৷ গাঁজা চাষের বদলে ড্রাগন ফল ফলনের প্রতি মানুষের ঝেঁক বাড়াতে হবে৷ কারণ ত্রিপুরায় গাঁজা চাষকে বৈধ করা এই মুহূর্তে সম্ভব নয়৷ তাই বিকল্প রোজগারে ত্রিপুরা সরকার পদক্ষেপ নিয়েছে৷ আজ সোমবার ত্রিপুরা বিধানসভায় বাজেট অধিবেশনে প্রশ্ণোত্তর পর্বে বিধায়ক দিবাচন্দ্র রাঙ্খলের গাঁজা চাষকে আইনিভাবে বৈধ করার বিষয়ে প্রশ্ণের জবাবে এ-কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব৷ তবে, বিষয়টি বিশেষজ্ঞদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখার জন্য বলবেন, সেই আশ্বাসও তিনি দিয়েছেন৷


দিবাচন্দ্র রাঙ্খল বলেন, ত্রিপুরায় রাজস্ব আদায়ের পরিধি খুবই সীমিত৷ ফলে, আমাদের কেন্দ্র-নির্ভর থাকতে হয়৷ তাঁর কথায়, গাঁজা চাষে ত্রিপুরার জমি খুবই উর্বর৷ কিন্তু আইনি বৈধতা নেই, তাই প্রচুর মানুষ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন৷ তাঁর দাবি, দেশি কিংবা বিদেশি মদ বিক্রিতে আইনি বৈধতা রয়েছে৷ কিন্তু গাঁজার ওষুধি গুণাবলী থাকা সত্ত্বেও অবৈধ হওয়ার কারণে তার উপকার মিলছে না৷ অথচ, প্রতিনিয়ত বেআইনি ভাবে গাঁজা চাষ এবং বিক্রি হচ্ছে৷ তাঁর মতে, গাঁজা চাষ আইনি বৈধতা পেলে রাজস্ব আদায় হবে, সাথে ওই চাষের সাথে জড়িত প্রচুর মানুষ আর্থিকভাবে উপকৃত হবেন৷

এ-বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব বলেন, ত্রিপুরার বনভূমিতে গাঁজা চাষ হচ্ছে৷ ফলে, পুলিশের অভিযানে একজন মালিককেও খুঁজে পাওয়া যায় না৷ তিনি বলেন, ত্রিপুরা সরকার গাঁজা চাষের বিনিময়ে বিকল্প চাষাবাদের সুযোগ খুঁজে বের করেছে৷ ড্রাগন ফল ত্রিপুরায় ফলনে কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমতি পাওয়া গেছে৷ এছাড়া, মাসকলাই এবং আনারস রোজগারের নতুন দ্বার খুলে দেবে৷ তিনি বলেন, ড্রাগন ফলের গাছ ২০-২৫ বছর পর্যন্ত ফলন দিয়ে থাকে৷ ওই ফলের ভীষণ চাহিদাও রয়েছে৷ তাই ত্রিপুরা সরকার রেগা-র মাধ্যমে ড্রাগন ফল ফলনে সহায়তা করবে৷


তাঁর কথায়, ওই ফলের চাষ খুবই ব্যয় সাপেক্ষ৷ কারণ, প্রতি হেক্টর ড্রাগন ফল চাষে ২০ লক্ষ টাকা খরচ হবে৷ তাই রেগা প্রকল্পে বরাদ্দ বৃদ্ধির আবেদন জানানো হয়েছে৷ তিনি বলেন, বনভূমিতে রেগা প্রকল্পের মাধ্যমে ড্রাগন ফলের চাষ হবে৷ ত্রিপুরা সরকার এই ফল রাজ্যের বাইরে বিক্রিতে সহায়তা করবে৷ সাথে তিনি যোগ করেন, মাসকলাই এবং আনারস চাষের মাধ্যমে রোজগার সম্ভব হবে এবং ত্রিপুরা সরকার তাতে সহায়তা করবে৷


এদিন তিনি জানান, মদ অনেক আগেই আইনি বৈধতা পেয়েছে৷ ফলে মদ বিক্রিতে ১০০ কোটি টাকার অধিক ত্রিপুরা সরকারের আয় হচ্ছে৷ কিন্তু অবৈধভাবে হলেও গাঁজা বিক্রির সরাসরি ফায়দা গরিব মানুষরা পাচ্ছেন না৷ তাঁর কথায়, যারা গাঁজা চাষ করছেন তাদের কাছে খুবই সামান্য অর্থ যাচ্ছে৷ কারণ, মধ্যস্বত্বভোগীরা আসল মুনাফা কামাচ্ছেন৷ গরিবের কপালে তার সিঁকিভাগ জুটছে৷ মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, আগর চাষে এবং বিক্রিতে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে অনুমোদনের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে৷ খুব শীঘ্রই অনুমোদন মিলবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *