বেকারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করার সামিল : বিরোধী দলনেতা

আগরতলা, ১২ মার্চ (হি. স.)৷৷ ত্রিপুরায় আউটসোর্চিং-র মাধ্যমে লোক নিতে এজেন্সি নিয়োগের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানালেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার৷ তিনি উষ্মা প্রকাশ করে বলেন, ত্রিপুরা সরকারের ওই সিদ্ধান্ত খুবই বিপদজনক ও সম্পূর্ণ অনৈতিক এবং বেকারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করার সামিল৷ সাথে তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন বামফ্রন্ট সরকারের আমলে শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় প্রকল্পে এমন চুক্তিভিত্তিক লোক নিয়োগ করা হয়েছে৷


আজ তিনি সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, সম্প্রতি ত্রিপুরা সরকারের কর্ম বিনোয়োগ দফতরের সচিব বিভিন্ন দফতরে লোক নেওয়ার জন্য এজেন্সি নিয়োগে এক মেমোরেন্ডাম জারি করেছেন৷ সেই মেমোরেন্ডাম পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা গেছে প্রায় ৭টি শ্রেণী-তে ৮৬টি-র অধিক সুনির্দিষ্ট পদে সরকারি চাকুরীর সুযোগ রয়েছে৷ কিন্তু, ওই পদে সরাসরি নিয়োগের বদলে এজেন্সি-র মাধ্যমে নিযুক্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছে ত্রিপুরা সরকার৷


তিনি জানান, সমস্ত বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পন্নদের জন্য ৩৫টি, দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পন্নদের জন্য ১২টি এবং স্নাতক ও তার অধিক শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পন্নদের জন্য ৩৯টি পদ রয়েছে৷ তিনি বলে, ওই সমস্ত পদে সরকারি পে স্কেল অনুযায়ী বেতনের স্তর রয়েছে সর্বনিম্ন ১৬০০০ টাকা থেকে শুরু করে ৩৭০০০ টাকা৷ কিন্তু, এ-বিষয়ে ওই মেমোরেন্ডাম-এ কিছুই উল্লেখ করা হয়নি৷ বরং ওই মেমো অনুযায়ী সর্বনিম্ন ৭২৮০ টাকা এবং সবর্োচ্চ ১৭০৬৮ পাবেন কর্মী-রা৷ তাতেই, সর্বনিম্ন ১৪৫ টাকা এবং সবর্োচ্চ ৩৪১ টাকা প্রতি মাসে দিতে এজেন্সি-কে৷


মানিক সরকারের কথায়, ওই মেমোরেন্ডাম থেকে অনেক বিষয় অস্পষ্ট রয়েছে৷ কারণ, তাদের নিযুক্তি, মহার্ঘ্য ভাতা কে দেবে, চাকুরীর মেয়াদ কতদিন থাকবে, প্রভিডেন্ট ফান্ড, গ্রেচ্যুয়িটি থাকছে কিনা, এ-সমস্ত বিষয়ে খোলসা করে কিছুই জানানো হয়নি৷ তাতে স্পষ্ট, গ্রূপ-সি এবং গ্রূপ-ডি নিয়োগে সরকারের সরাসরি কোন দায়িত্ব নেই, ক্ষোভের সূরে বলেন তিনি৷


বিরোধী দলনেতা বলেন, বিজেপি-র ভিশন ডকুমেন্ট-র সাথে বর্তমান পরিস্থিতি-র কোন মিল খোঁজে পাওয়া যাচ্ছে না৷ প্রত্যেক ঘরে চাকুরী, অনিয়মিতদের নিয়মিতকরণ, এক বছরে ৫০ হাজার শূন্যপদ পূরণ, একটা প্রতিশ্রুতিও রাখেনি শাসক দল৷ তাঁর কটাক্ষ, ওই মেমোরেন্ডাম থেকে সাফ বোঝা যাচ্ছে, ত্রিপুরা সরকার কর্মচারীদের ব্যবহার করো এবং কাজ শেষে ছুড়ে ফেলে দাও এই নীতি গ্রহণ করেছে৷ তাঁর মতে, ত্রিপুরা সরকারের ওই সিদ্ধান্ত বিপদজনক ও সম্পূর্ণ অনৈতিক এবং বেকারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা-র সামিল৷ তাই, তিনি ওই মেমোরেন্ডাম প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন৷
এদিন তিনি জানান, বামফ্রন্ট সরকারের আমলেও চুক্তিভিত্তিক লোক নিয়োগ করা হয়েছে৷ শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় প্রকল্পে কাজের জন্যই চুক্তিভিত্তিক লোক নিয়োগ করা হয়েছে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *