নিজস্ব প্রতিনিধি, কৈলাসহর, ৮ মার্চ৷৷ উত্তর প্রদেশের দুই যুবক এবং স্থানীয় এক মহিলা সহ মোট তিনজন মিলে কৈলাসহরের আন্তর্জাতিক পর্যটন কেন্দ্র ঊনকোটির পাহাড়ে বারো বছরের মেয়ের গলায় দা ধরিয়ে স্বর্নালংকার সহ নগদ টাকা ও মোবাইল ছিনতাই করে নিয়ে যাবার তিনদিন পর গ্রামের মানুষ তিন ছিনতাইকারীদের আটক করে উত্তম মধ্যম দিয়ে কৈলাসহর থানার পুলিশের হাতে তোলে দেয়৷ এই ঘটনায় গোটা ঊনকোটি জেলায় তীব্র আতংক এবং চাঞ্চল্য বিরাজ করছে৷ ধলাই জেলার কমলপুর মহকুমার কচুছড়া থানার অন্তর্ভুক্ত মেছুরিয়া গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা বিদ্যালক্ষী দেববর্মা সহ চারজন গত পয়লা মার্চ সোমবার কৈলাসহরের ঊনকোটির পাহাড়ে পূজা দিতে এসেছিলেন৷
বিদ্যালক্ষী দেববর্মাদের সাথে বারো বছরের এক মেয়েও ছিল৷ পূজা শেষ করে উনারা পুরো ঊনকোটি ঘুরতে পাহাড়ের উপরে উঠার পর তিন ছিনতাইকারী হঠাৎ করে বারো বছরের মেয়ের গলায় দা ধরে বলে যে, চিৎকার চেচামেচি না করে টাকা পয়সা সহ সোনা দানা যা আছে সবকিছু দিয়ে দিতে৷ না দিলে বারো বছরের মেয়েকে অপহরণ করে মেরে ফেলা হবে৷ এই কথা বলার পর বিদ্যালক্ষী দেববর্মাদের কাছ থেকে নগদ দশ হাজার টাকা, একটি দামী মোবাইল, একটি সোনার বালা,একটি সোনার আংটি,একটি সোনার চেইন,একটি রুপার চেইন ছিনতাই করে নিয়ে ছিনতাইকারীরা পালিয়ে যায়৷ অথচ ঊনকোটি পাহাড়ে বেসরকারি সিকিউরিটিও রয়েছে৷ ছিনতাইকারীরা পালিয়ে যাবার পর চিৎকার চেচামেচি শুরু হলে ঊনকোটির পাহাড়ে থাকা ডিউটিরত বেসরকারি সিকিউরিটিরা ছিনতাইকারীদের একজনকে চিনতে পারলেও আটক করতে পারেনি৷
এরপর বিদ্যালক্ষী দেববর্মারা কৈলাসহর থানায় এসে পুলিশকে সমস্ত ঘটনা জানিয়ে নিজ বাড়িতে চলে যায়৷ আজ চার মার্চ বৃহস্পতিবার দুপুরে এই তিন ছিনতাইকারী ঊনকোটি পাহাড়ে সম্ভবত ছিনতাই করতে ফের যাবার পর সিকিউরিটিরা চিনে ফেলে এবং তিন ছিনতাইকারীদের বেধড়ক মারধর করে কৈলাসহর থানার পুলিশকে জানায়৷ পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তিন ছিনতাইকারীদের আটক করে থানায় নিয়ে আসে৷ পুলিশের তরফে এই খবর শোনে বিদ্যালক্ষী দেববর্মারাও কৈলাসহর থানা এসে ছিনতাইকারীদের সনাক্ত করন করে তিন ছিনতাইকারীর বিরুদ্ধে কৈলাসহর থানায় লিখিত মামলা করে৷ পুলিশ সূত্রে জানা যায় যে, ধীরেন্দ্র পাঠক, শান্তি লাল রাজবর এবং সুজাতা দাশ এই তিন ছিনতাইকারীরা এই ঘটনা করে৷
তবে,ধীরেন্দ্র পাঠক এবং শান্তি লাল রাজবরের বাড়ি উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের মাও জেলায় এবং সুজাতা দাশের বাড়ি কৈলাসহরের ভগবান নগর এলাকায়৷ শান্তি লাল রাজবর এবং সুজাতা দাশ উনারা স্বামী স্ত্রী৷ প্রায় দশ বছর পূর্বে উনাদের বিয়ে হয়েছিল৷ তিন ছিনতাইকারীর মধ্যে ধীরেন্দ্র পাঠকের অবস্থা খারাপ হওয়াতে ধীরেন্দ্র পাঠক কৈলাসহরের ঊনকোটি জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে৷কৈলাসহর থানার পুলিশ অফিসার নিখিল দেববর্মার নেতৃত্বে পুলিশ গোটা ঘটনার তদন্তে নেমেছে৷