আগরতলা, ৬ মার্চ (হি.স.)৷৷ সম্ভবত ত্রিপুরায় সিপিএম-এ বৃদ্ধতন্ত্রের অবসানের সূচনা হচ্ছে এডিসি নির্বাচনে৷ ত্রিপুরা উপজাতি এলাকা স্বশাসিত জেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী তালিকায় বড় চমক দেওয়ার চেষ্টা করেছে বামেরা৷ ১৭ জন নতুন মুখ ও চারজন মহিলা প্রার্থী নিয়ে আজ এডিসি নির্বাচনে ২৮টি আসনে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছে বামফ্রন্ট৷ তাতে রঞ্জিত দেববর্মাদের মতো হেভিওয়েট নেতারা এবার প্রার্থী তালিকায় স্থান পাননি৷
স্বাভাবিকভাবেই ত্রিপুরায় ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর বামেদের উপলব্ধি হয়েছে, কোনও কিছু আঁকড়ে ধরে রাখা উচিত নয়৷ পরিবর্তন সর্বদাই নতুনত্বের বার্তা বহন করে৷ ফলে, সিপিএম-এ বৃদ্ধতন্ত্রের অবসান হওয়া খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে তা অস্বীকার করার কোনও সুযোগ নেই৷ কারণ, গত এডিসি নির্বাচনে প্রার্থী তালিকায় নতুন মুখ ছিল মাত্র ছয়জন৷ এবার তা প্রায় তিনগুণ বেড়ে সেই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৭৷ অবশ্য বামফ্রন্টের আহবায়ক বিজন ধরের কথায় স্পষ্ট বোঝা গেছে, কর্মক্ষমতা বিচার করেই প্রার্থী তালিকা তৈরি হয়েছে৷ জনপ্রতিনিধি হিসেবে যারা ভালো কাজ করেছেন, তাঁদের পুনরায় প্রার্থী করেছে বামফ্রন্ট৷
স্বভাবতই, এ বছরও ঐতিহ্য বজায় রেখে আসন্ন এডিসি নির্বাচনে সবার আগে প্রার্থী ঘোষণা করল বামেরা৷ তাতে সিপিএম একা ২৫টি আসনে এবং শরিক দল সিপিআই, ফরোয়ার্ড ব্লক এবং আরএসপি একটি করে আসনে প্রার্থী দিয়েছে৷ এডিসি-তে ২৮টি আসনে ২৫টি উপজাতি সংরক্ষিত এবং তিনটি আসন অ-সংরক্ষিত রয়েছে৷
এদিন বিজন বাবু বলেন, এডিসি-তে বামফ্রন্ট ছাড়া উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা সম্ভব নয়, তা প্রমাণিত হয়েছে৷ তাঁর কথায়, কোনও রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে কুৎসা করে নয়, জনগণের স্বার্থে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে বামফ্রন্ট৷ তাঁর বক্তব্য, ২০০০ সালে বন্দুকের নলে এডিসি দখল করেছিল আইপিএফটি৷ কিন্তু পাঁচ বছরে শুধু লুট হয়েছে এডিসি-তে৷ তিনি বলেন, বামফ্রন্ট ত্রিপুরায় এডিসি নির্বাচনে সমস্ত অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করবে৷ রাজ্যভাগের জিগির তুলে যারা সাধারণ মানুষকে ভুল বুঝাচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে নির্বাচনি ময়দানে ঝাঁপাবে বামেরা৷
এদিন তিনি কটাক্ষের সুরে বলেন, মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসে এডিসি-তেও তারা ক্ষমতা দখল নিতে চাইছে৷ তাতে অবশ্য তৃতীয় ইঞ্জিনের সুফল মিলবে, বিদ্রুপ করে বলেন তিনি৷ তাঁর কথায়, রাজ্যের পরিস্থিতি আমাদের নির্বাচনি হাতিয়ার৷ তাই, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, সুশাসন ফিরিয়ে আনা, মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা এবং মানুষের কাজ ও খাদ্যের অভাব মেটানোই নির্বাচনে প্রচারের অন্যতম বিষয় হিসেবে গুরুত্ব পাবে৷
বিজন ধর বলেন, প্রার্থী তালিকা প্রস্তুত করার ক্ষেত্রে বড় নেতা হওয়া বিবেচনার বিষয় ছিল না৷ কাজের হিসেবের নিরিখেই প্রার্থী তালিকা তৈরি করা হয়েছে৷ তাতে, ১৭ জন নতুন স্থান পেয়েছে৷ তাঁর কথায়, প্রার্থী তালিকায় অধিকাংশই ৫০ বছরের নীচে বয়স৷ এছাড়া, শিক্ষিত এবং অবশ্যই বামপন্থী মানসিকতা হওয়া বাধ্যতামূলক৷ তবে, এবার অনেক হেভিওয়েট নেতা বাদ পড়েছেন৷