কলকাতা, ২৫ জানুয়ারি (হি.স.): ‘হরেকৃষ্ণ হরেরাম, বিদায় নাও বিজেপি-বাম’। হুগলির পুরশুড়ায় জনসভায় এ কথা বলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিযোগ করেন, সিপিএমের সমর্থনেই রাজ্যে বিজেপি এসেছে৷
ফের একবার তৃণমূলনেত্রীর মুখে শোনা যায় ‘জগাই-মাধাই-গদাই’ কটাক্ষ৷ এ দিন ফের বলেন, ‘বাংলা কারও কাছে মাথা নত করে না৷ বাংলা হ্যাংলা নয়৷’ সোমবার দুপুরে হাওড়ার পুরশুড়ায় সভায় যোগ দেন মমতা। সেখান থেকে দলত্যাগী নেতাদের তুলোধনা করেন তিনি। নিশানা করেন বিজেপিকে। দলবদলের হিড়িক প্রসঙ্গে মমতা বলেন, “বিজেপি ওয়াশিং মেশিন। অনেক নেতাই টাকা করেছেন। কালো টাকা। সেই টাকা ঢাকতে তাঁরা ওয়াশিং মেশিন বিজেপিতে চলে যাচ্ছে। তাতে দলের কোনও ক্ষতি নেই।”
বিজেপি ভোটে জিততে টাকাপয়সা ছড়াচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, বিজেপি টাকা দিলে টাকা নিয়ে মাংস-ভাত খান। ভোটের বাক্সে গিয়ে ভোটটা উল্টে দিন। তিনি বিজেপি বর্ধমানে নিজেদের পার্টি অফিসে আগুন জ্বালাচ্ছে, ব্যারাকপুরেও গণ্ডগোল পাকাচ্ছে বলে অভিযোগ তোলেন। সেইসঙ্গে জানিয়ে দেন, বাইরের গুন্ডাদের আমরা ঢুকতে দেব না।
পাশাপাশি হুঙ্কার ছেড়ে তৃণমূল সুপ্রিমো বললেন, যারা অনেক টাকা করেছে, যাদের অনেক টাকা গচ্ছিত আছে, তাদের জন্য বিজেপি। আমি বলি, ভালো করে নাম লেখাও, এরপর আর তাঁদের তৃণমূলে নেব না। রক্ত দিয়ে কাজ করব, বহিরাগত বিজেপিকে ঢুকতে দেব না। জেলে থাকব, বিজেপির ঘরে থাকতে রাজি নই। মাথা নত করব একমাত্র জনগণের সামনে। বিজেপিকে তিনি কোনওমতেই মেনে নিতে নারাজ, এই স্পষ্ট বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী।
কয়েকমাস ধরেই শুভেন্দু অধিকারীর আচরণ সকলকে ভাবতে বাধ্য করেছিল। প্রকাশ্যে দলের বিরুদ্ধ মন্তব্য না করলেও ইঙ্গিতে বুঝিয়েছিলেন, তিনি বিরক্ত। পরবর্তীতে দলত্যাগ করে বিজেপিতে যোগ দেন তিনি। সঙ্গে নিয়ে যান বেশ কয়েকজন বিধায়ক ও এক সাংসদকে। এরপর আরও একাধিক নেতা প্রকাশ্যে দলের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন। দলের তরফে তাঁদের মানভঞ্জনের চেষ্টাও করা হয়েছে। কোনওক্ষেত্রে নেতা-নেত্রীর মান ভাঙাতে শীর্ষ নেতৃত্ব সক্ষম হলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বিফল হয়েছেন। সম্প্রতি দল ও পদ ছেড়েছেন বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান এখনও কার কাছে স্পষ্ট নয়। এসবের মাঝে দলবিরোধী মন্তব্য করায় অপসারিত হয়েছেন বালির বিধায়ক বৈশালী ডালমিয়া। ওইদিনই তৃণমূল বুঝিয়ে দিয়েছে, দল এহেন আচরণ বরদাস্ত করবে না। আজ তা স্পষ্ট করলেন সুপ্রিমো।