নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৬ নভেম্বর৷৷ দশটি বামপন্থী ট্রেড ইউনিয়নের ডাকা দেশব্যাপী ধর্মঘটে রাজ্যেও মিশ্র সাড়া মিলেছে৷ বন্ধের সমর্থনে আহবানকারীরা যেমন পিকেটিং করেছে, ঠিক তেমনি বিরোধিতা করে বিশেষ করে শাসক দল বিজেপির বিভিন্ন সংগঠন পাল্টা পিকেটিং করেছে৷ এর ফলে রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক হিংসাত্মক ঘটনার খবর মিলেছে৷
পিকেটিং পাল্টা পিকেটিং এর ফলে ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন অংশের মানুষজন রীতিমতো বিপাকে পড়েন৷ রাজধানী আগরতলা শহরের অফিস লেনে সিআইটিইউর অফিসে ভাঙচুর চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা৷ সিআইটিইউর রাজ্য কার্যালয়ের সাইনবোর্ড ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিয়েছে৷ সংগঠনের পতাকাও ছিড়ে ফেলে দেওয়া হয়৷ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র রাজনৈতিক উত্তেজনা দেখা দেয়৷ ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে আসে৷ পুলিশ এসে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে৷ ঘটনার খবর পেয়ে সিটু নেতা প্রাক্তন মন্ত্রী মানিক দে সহ অন্যান্য নেতারা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন৷ তারা সিটু সদর কার্যালয়ে দুর্বৃত্তদের হামলার তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানিয়েছেন৷ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার এবং কঠোর শাস্তিমুলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়েছে৷ ঘটনাকে চরম রাজনৈতিক অসহিষ্ণুতা বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে৷বিজেপির নেতৃত্বাধীন সরকারের আমলে এই রাজ্যে মানুষের কথা বলার অধিকার এবং রাজনৈতিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ আনা হয়৷এভাবে বিরোধীদের ওপর হামলা এবং অফিস ভাঙচুর করে বিরোধীদের দমন করা যাবে না বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন সিটু নেতারা৷
রাজধানী আগরতলা শহর এলাকার ড্রপ গেইটেজাতীয় সড়কের ওপর একটি গাড়ি থামিয়ে মহিলা যাত্রী সহ অন্যান্য যাত্রীদের মারধোর করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে৷ ট্রাফিক পুলিশের সামনেই তিন যুবক গাড়ি থামিয়ে মহিলা যাত্রী সহ অন্যান্য ছাত্রদের মারধর করে বলে অভিযোগ৷ ট্রাফিক পুলিশের সামনে এ ঘটনা সংঘটিত হলেও ট্রাফিক পুলিশ কোন ব্যবস্থা নেয় বলে অভিযোগ৷ ঘটনা সংঘটিত করে অভিযুক্ত তিন যুবক পালিয়ে যায়৷ রাজধানী আগরতলা শহর এলাকায় উন্মত্ত যুবকদের এ ধরনের কান্ড ঘিরে যাত্রী সাধারণের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়৷অবিলম্বে অভিযুক্ত তিন যুবককে গ্রেপ্তার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন আক্রান্ত মহিলা সহ অন্যান্য যাত্রীরা৷কেন গাড়ি দাঁড় করিয়ে যাত্রীদের গাড়ি থেকে নামিয়ে মারধর করা হয় এ বিষয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য জানা যায়নি৷ পুলিশ ঘটনার তদন্ত করলে আসল রহস্য উদঘাটন হবে বলে মনে করছেন স্থানীয় জনগণ৷
এদিকে রাজধানীর কৃষ্ণনগর হরিশ নগর রোড এ সিপিআই রাজ্য সদর কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা৷ সংগঠনের পক্ষ থেকে ঘটনার তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানানো হয়েছে৷ঘটনার পর সংগঠনের নেতৃবৃন্দ দলীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে ঘটনার নিন্দা জানিয়ে অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার এবং কটুর শাস্তিমুলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন৷
১০ টি ট্রেড ইউনিয়ন, ফেডারেশন ও গন সংগঠন সমূহের ডাকা দেশ ব্যাপী ধর্মঘটের তেমন কোন প্রভাব পড়েনি রাজধানীর বিভিন্ন বাজার গুলিতে৷ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন বাজার গুলিতে দেখা যায় ব্যবসায়ীরা তাদের দোকান খুলে বসেছে৷ তবে সকালের দিকে দোকানপাট কিছুটা কম খোলা থাকলেও বেলা বাড়ার সাথে সাথে দোকানপাট খোলা হয়৷ মাছ, মাংস থেকে শুরু করে সবজি ব্যবসায়ী সকলে তাদের দোকান খুলে বসেছে৷ রাজধানীর বাজার গুলিতে ক্রেতাদের সমাগমও ঘটে৷ তবে অন্যান্য দিনের তুলনায় এইদিন বাজার গুলিতে ক্রেতাদের ভিড় কিছুটা কম ছিল৷ স্বাভাবিক ভাবেই বলা চলে এইদিন রাজধানীর বাজার গুলিতে ধর্মঘটের তেমন কোন প্রভাব পড়েনি৷ তবে ব্যবসায়ীরা জানান এইদিন ধর্মঘটের কারনে অনেকে বাড়ি থেকে বের হয়নি৷ ফলে বাজারে ক্রেতাদের তেমন একটা ভিড় হয়নি৷ ক্রেতা সমাগম কম হওয়ায় ব্যবসাও তেমন একটা ভাল হয়নি৷
দেশ জুড়ে ২৪ ঘণ্টা সাধারন ধর্মঘটের কিছুটা প্রভাব পড়েছে রাজ্যের পরিবহন ব্যবস্থার উপর৷ এইদিন সকাল থেকে রাজধানীর নাগেরজলা স্ট্যান্ড, রাধানগর স্ট্যান্ড ও চন্দ্রপুর আই.এস.বি.টি-তে ঠাই দাড়িয়ে থাকতে দেখা যায় দূরপাল্লার বাস গাড়ি গুলিকে৷ স্ট্যান্ডে যথেষ্ট পরিমাণে যান বাহন থাকলেও ধর্মঘটের কারনে যাত্রী তেমন একটা ছিল না৷ ফলে এক দুটি বাস এইদিন চলাচল করে৷ রাধানগর থেকে এইদিন খোয়াই কিংবা কমলপুরের উদ্দেশ্যে অন্যান্যদিনের ন্যায় বাস ছারেনি৷ কারন পর্যাপ্ত পরিমাণে যাত্রী নেই৷ তবে কিছু কিছু ছোট যানবাহন চলেছে৷ একই আবস্থা চন্দ্রপুর আই.এস.বি.টি-তেও৷ এখান থেকে ধর্মনগর, তেলিয়ামুড়ার উদ্দেশ্যে বাস অন্যান্য দিনের ন্যায় না ছারলেও কিছু কিছু ছোট যানবাহন ছেড়েছে৷ অপরদিকে নাগেরজলা স্ট্যান্ড থেকে সাব্রুম, জোলাইবাড়ি, শান্তিরবাজার, উদয়পুর, সোনামুড়া, বক্সনগর, বিলোনিয়ার উদ্দেশ্যে কিছু কিছু বাস রওয়ানা হয়৷ তবে পর্যাপ্ত পরিমাণে যাত্রী নেই৷ ছোট যানবাহন চলছে৷ তাও যাত্রী স্বল্পতার কারনে অন্যান্য দিনের তুলনায় কম৷ বাস চালক, মালিক এমনকি যাত্রী সকলের ব্যক্তব্য গাড়ি পর্যাপ্ত পরিমাণে রয়েছে৷ কিন্তু যাত্রী স্বল্পতার কারনে বাস অন্যান্য দিনের ন্যায় ছাড়া যাচ্ছে না৷ ফলে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে৷ বাস মালিকরা জানান তারা এই ধর্মঘটকে সমর্থন করেন না৷ কারন এমনিতে তারা ক্ষতিগ্রস্ত৷ তাই এইদিন তারা বাস চালানোর জন্য প্রস্তুত রয়েছেন৷ যাত্রী হলে বাস ওনারা চালাবেন৷
বৃহস্পতিবার সমগ্র দেশের পাশাপাশি রাজ্যেও চলছে ২৪ ঘণ্টার ধর্মঘট৷ আর এই ধর্মঘটের মধ্যে এইদিন সকালে রাজধানীর অফিসলেনস্থিত সিআইটিইউ অফিসে হামলা চালায় কিছু দুষৃকতি৷ সিআইটিইউ অফিসের সাইনবোর্ড ভেঙ্গে ফেলা হয়৷ ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান সিআইটিইউ নেতৃত্ব তথা প্রাক্তন মন্ত্রী মানিক দে৷ তিনি জানান এইদিন রাজ্যে ধর্মঘট সফল৷ যারা ধর্মঘটের বিরোধিতা করেছে তারা সাধারন মানুষের কোন সমর্থ পায়নি৷ তাই তারা জন বিচ্ছিন্ন হয়ে পুলিশের সামনে সিআইটিইউ অফিসে হামলা চালায়৷
রাজধানীর কৃষ্ণনগর হরিশ ঠাকুর লেনস্থিত সিপিআই-র রাজ্য দপ্তরে হামলা চালায় এক দল দুষৃকতি৷ ১০ টি ট্রেড ইউনিয়ন, ফেডারেশন ও গনসংগঠন সমূহের ডাকে সমগ্র দেশের পাশাপাশি রাজ্যেও বৃহস্পতিবার সকাল থেকে চলছে ২৪ ঘণ্টার ধর্মঘট৷ আর এই ধর্মঘট চলাকালিন সময়ে সিপিআই-র রাজ্য দপ্তরে হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ৷ সিপিআই-র রাজ্য দপ্তরের সকল আসবাবপত্র ভেঙ্গে ফেলা হয়৷ টেবিল, চেয়ার সবকিছু ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেওয়া হয়৷ তবে ঘটনার সময় কেউই দলীয় কার্যালয়ে উপস্থিত ছিল না৷ পড়ে ঘটনার খবর পেয়ে দলের কর্মী সমর্থকরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসে৷ সিপিআই-র রাজ্য পরিষদের সদস্য বিক্রমজিৎ সেনগুপ্ত এই ঘটনার নিন্দা জানান৷ এবং এই ঘটনার জন্য তিনি শাসক দলের দিকে আঙ্গুল তুলেন৷
রাজধানীর কৃষ্ণনগর হরিশ ঠাকুর লেনস্থিত সিপিআই-র রাজ্য দপ্তরে বৃহস্পতিবার হামলা চালায় এক দল দুষৃকতি৷ সিপিআই-র রাজ্য দপ্তরের সকল আসবাবপত্র ভেঙ্গে ফেলা হয়৷ টেবিল, চেয়ার সবকিছু ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেওয়া হয়৷ এই ঘটনার পর এইদিন বিকালে সিপিআই-র রাজ্য দপ্তর পরিদর্শনে যান বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার৷ সাথে ছিলেন প্রাক্তন মন্ত্রী মানিক দে, সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক গৌতম দাস সহ অন্যান্যরা৷ সিপিআই-র রাজ্য দপ্তরের ঘটনা সরজমিনে দেখার পর বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার জানান শাসক দলের চূড়ান্ত দুর্বলতার নিদর্শন এইটা৷ এইটা শক্তি নয়৷ জন বিচ্ছিন্নতা থেকে হতাশা৷
ধর্মঘটকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার বিজেপি দুষৃকতিরা বাম সংগঠনর বিভিন্ন দলীয় অফিসে হামলা চালায়৷ ভাঙচুর করে দলীয় কার্যালয়ের বিভিন্ন সামগ্রী৷ এদিন ঘটনার পর দুপুরে পরিদর্শনে যান বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার৷ তিনি এদিন কৃষ্ণ নগর সিপিআই রাজ্য কার্যালয় এবং কর্নেল চৌমুহনিসিত এস ইউ সি আই কার্যালয় পরিদর্শন করেন৷ পরে তিনি বলেন, বিজেপি চূড়ান্ত দুর্বলতার নিদর্শন এটা৷ জন বিছিন্নতা থেকে হতাশায় ভুগছে৷ গত দুদিন দীর্ঘ প্রচেষ্টার পরও বনধ —এর বিরুদ্ধে মানুষকে নিতে পারে নি৷ তাই এই ধরনের কাজ করেছে বলে জানান তিনি৷ এদিন দলীয় কার্যালয়গুলি পরিদর্শনে এছাড়াও ছিলেন সি পি এম -এর রাজ্য সম্পাদক গৌতম দাস, সি আই টি ইউ রাজ্য সভাপতি মানিক দে সহ অন্যান্যরা৷
১০ টি ট্রেড ইউনিয়ন, ফেডারেশন ও গন সংগঠন সমূহের ডাকা ২৪ ঘণ্টা ধর্মঘটের কোন প্রভাব পড়েনি রাজ্যের রেল পরিষেবার ক্ষেত্রে৷ এইদিন রাজ্যে রেল পরিষেবা অন্যান্য দিনের ন্যায় স্বাভাবিক ছিল৷ আগরতলা-সাব্রুম, আগরতলা -ধর্মনগর, আগরতলা-উদয়পুর অন্যান্য দিনের ন্যায় রেল আসা যাওয়া করে৷ ফলে রেল যাত্রীদের কোন ধরনের সমস্যায় পড়তে হয়নি৷ তবে অন্যান্য দিনের তুলনায় যাত্রী এইদিন কিছুটা কম ছিল৷ আগরতলা রেল স্টেশনে দেখা যায় ধর্মনগর, আমবাসা, তেলিয়ামুড়া, উদয়পুর, সাব্রুম, বিলোনিয়া যাওয়ার জন্য সকাল থেকে যাত্রীরা ভিড় জমায়৷ অন্যান্য দিনের ন্যায় নির্ধারিত সময়ে রেল চলাচল করে৷ এক যাত্রী জানান অন্যান্য দিনের ন্যায় নির্ধারিত সময়ে রেল চলাচলের ফলে কোন ধরনের সমস্যা হচ্ছে না৷ রেল পরিষেবা স্বাভাবিক রয়েছে৷
ধর্মঘটের মধ্যে ত্রিপুরা সড়ক পরিবহন নিগমের বাস পরিষেবা এইদিন স্বাভাবিক রাখা হয়েছে৷ অন্যান্য দিনের ন্যায় এইদিনও রাজধানীর কৃষ্ণনগরস্থিত ত্রিপুরা সড়ক পরিবহন নিগমের কার্যালয়ের সামনে থেকে টিআরটিসি বাস গুলি নির্দিষ্ট গন্তব্যস্থলের উদ্দেশ্যে ছাড়ে৷ সেখানে উপস্থিত ছিলেন ত্রিপুরা সড়ক পরিবহন নিগমের চেয়ারম্যান দিপক মজুমদার৷ তিনি জানান টিআরটিসি-র যে সকল বাস পরিষেবা চালু ছিল, সেই বাস গুলি এইদিনও চলাচল করছে৷ সাব্রুম, বিলোনিয়ার উদ্দেশ্যেও টিআরটিসি বাস এইদিন গিয়েছে৷ এই কর্মনাশা জনবিরোধী ধর্মঘটের বিরুদ্ধে রাজ্যের মানুষ সরব হয়েছে৷ তাই কোন মানুষকে যেন পরিবহনের ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়তে না হয়, তার জন্য অন্যান্য দিনের ন্যায় এইদিনও টিআরটিসি-র সকল বাস চলাচল করছে৷ টাউন বাস পরিসেবাও স্বাভাবিক রাখা হয়েছে৷
১০ টি ট্রেড ইউনিয়ন, ফেডারেশন ও গনসংগঠন সমূহের ডাকা দেশ ব্যাপী ২৪ ঘণ্টা ধর্মঘটের কোন প্রভাব পড়েনি এডিসি এলাকা গুলিতেও৷ বিশেষ করে খোয়াই জেলার এডিসি এলাকায় বাজার, দোকানপাট, সুকল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সবকিছুই এইদিন খোলা ছিল৷ খোয়াই মহকুমার ছনখোলা, বাইজালবারি, হাত কাটা , বাচাই বাড়ি, বেহালা বাড়ি, তুলাসিকর এই সকল বাজারে অন্যান্য দিনের ন্যায় এইদিনও ক্রেতাদের ভিড় লক্ষ্য করা যায়৷ মাছ মাংস থেকে সবজি বাজার সব কিছুই খোলা ছিল৷ সবজি ব্যবসায়ীরা অন্যান্য দিনের ন্যায় দোকান খুলে সবজি বিক্রয় করে৷ এডিসি ভিলেজ কার্যালয় গুলিতেও এইদিন কাজ চলে স্বাভাবিক ভাবে৷ ধর্মঘটের সমর্থনে কোথাও কেউ পিকেটিং করেনি৷ পদ্মবিল ব্লকের ক্ষীরোদ নগর এডিসি ভিলেজের চেয়ারম্যান পার্থ দেববর্মা জানানা এডিসি এলাকায় এইদিন সবকিছু ছিল স্বাভাবিক৷ যান বাহন চলেছে স্বাভাবিক ভাবে৷ ধর্মঘটের কোন প্রভাব পড়েনি৷ এডিসি এলাকার পরিবেশ ছিল শান্তিপূর্ণ৷
দেশব্যাপী ২৪ ঘণ্টা ধর্মঘটের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার রাজধানীর রাস্তায় নেমে পিকেটিং করে বিজেপির কর্মী সমর্থকরা৷ রাজধানীর বিভিন্ন রাস্তায় এইদিন পৃথক পৃথক ভাবে ধর্মঘটের বিরোধিতা করে পিকেটিং করে বিজেপি কর্মী সমর্থকরা৷ পিকেটিং-এর নেতৃত্বে ছিলেন বিজেপি সদর জেলা শহরাঞ্চল কমিটির সভাপতি ডঃ অলক ভট্টাচার্য, বিজেপি নেতা দিপক মজুমদার সহ অন্যান্যরা৷ রাজধানীর বটতলা, বড়দোয়ালি, নাগের জলা ইত্যাদি স্থানে পিকেটিং করে বিজেপি কর্মী সমর্থকরা৷ বিজেপি সদর জেলা শহরাঞ্চল কমিটির সভাপতি ডঃলক ভট্টাচার্য জানান শ্রমিক স্বার্থ বিরোধী, কৃষক স্বার্থ বিরোধী এই ধর্মঘটকে মানুষ বাঞ্চাল করে দিয়েছে৷ ২৬নভেম্বর সংবিধান দিবস৷ এইদিন টিকে মানুষ সংবিধান দিবস হিসাবে পালন করছে৷ প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার তিনি সংবিধান বুঝেন, কিন্তু শুধুমাত্র ক্ষমতার রাজনিতির জন্য এইদিন টিকে কলঙ্কিত করেছেন৷
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ১০ টি ট্রেড ইউনিয়ন, ফেডারেশন ও গন সংগঠন সমূহের ডাকে দেশ জুড়ে শুরু হয় ২৪ ঘণ্টা ধর্মঘট৷ আর এই কর্মনাশা ধর্মঘটের ফলে শ্রমিক, দিন মজুরদের এইদিন সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়তে হয়৷ কারন দিন মজুর শ্রমিকরা সারা দিন কাজ করার পর পরিবারের সকলের জন্য খাবার ক্রয় করে বাড়িতে নিয়ে যায়৷ কিন্তু এইদিন ধর্মঘটের কারনে তাদের কপালে জুটেনি কাজ৷ ফলে তাদের কপালে চিন্তার ভাজ৷ কারন দিনের শেষে কি করে পরিবারের সকলের জন্য খাবার ক্রয় করে নিয়ে যাবেন৷ আগরতলা শহরের বটতলা এলাকায় প্রতিদিন সকালে দিন মজুর শ্রমিকরা কাজের জন্য ভিড় জমান৷ আর যাদের শ্রমিকের প্রয়োজন তারা বটতলা এসে প্রয়োজন অনুযায়ী শ্রমিক নিয়ে যান৷ কিন্তু এইদিন বটতলা এলাকায় এই সকল দিন মজুরদের ঠাই দাড়িয়ে থাকতে দেখা যায়৷ কারন ধর্মঘটের কারনে এইদিন তাদের কপালে কাজ জুটেনি৷ কাজ পাওয়ার আশায় সকাল থেকে দীর্ঘ সময় তারা বটতলা এলাকায় এসে দাড়িয়ে থাকে৷ দীর্ঘ সময় দাড়িয়ে থাকার পর কাজ না পেয়ে এক প্রকার ভারাক্রান্ত মনে তারা এইদিন বাড়ি ফিরে যায়৷ দিন মজুর শ্রমিকরা এইদিন স্পষ্ট জানায় এমনিতেই বর্তমানে আগের মতো কাজ পাওয়া যায় না৷ একদিন কাজ জুটলে, আবার দুইদিন কাজ জুটেনা৷ তারা কাজ করে সংসার চালায়৷ তাই তারা কাজের পক্ষে৷ ধর্মঘট তারা চায় না৷ তারা কাজ চায়৷
রাজধানী আগরতলা শহরের গান্ধী ঘাট এলাকায় এক মহিলার চা দোকানে ভাঙচুর চালানো দুসৃকতিকারীরা৷ রাতের অন্ধকারে এই ঘটনাটি সংঘটিত হয়েছে৷ অসহায় মহিলার জীবন-জীবিকার তাগিদে চা দোকান করে যা রোজগার করতেন তা দিয়ে সংসার চালাতেন৷ তিনি স্টিল ব্রিজ সংলগ্ণ এলাকায় একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন৷ রাস্তার পাশে তার চায়ের দোকানে ভাঙচুর করার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন৷ দোকানে ভাংচুরের ঘটনা প্রত্যক্ষ করেন তিনি রীতিমতো ভেঙ্গে পড়েন৷ চা দোকানে ওই মহিলা জানান দোকানে যা বিক্রি হতো তা দিয়েই তিনি ভাড়া বাড়ির ভাড়া মেটাতেন এবং সংসার চালাতেন৷ রাতের অন্ধকারে দুষৃকতিকারীরা দোকানটি ভেঙে চুরমার করে দাবায় তিনি অসহায় হয়ে পড়েছেন৷ মহিলা জানান কারো সঙ্গে তার কোনো শত্রুতা নেই৷ কে বা কারা এ ঘটনা সংঘটিত করেছে সে সম্পর্ক তার কিছুই জানা নেই৷ ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে যায়৷ পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে৷ তবে এ ব্যাপারে কাউকে গ্রেপ্তারের সংবাদ নেই৷
ঊনকোটি জেলার কৈলাসহর পুর পরিষদ এর ১৫ নং ওয়ার্ডে একটি মোটর বাইক পুড়িয়ে দিয়েছে দুসৃকতিকারীরা৷ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে৷ এ ব্যাপারে কৈলাশহর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে৷ পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে৷ তবে বাইকে অগ্ণিসংযোগের ঘটনায় এখনো পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার এর সংবাদ দেই৷ এটি একটি নাশকতামূলক অগ্ণিকাণ্ডের ঘটনা বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে৷ পুলিশ ঘটনাটি খতিয়ে দেখছে৷
দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলার সাবরুমের ছোটখিলে বটতলা সিপিআইএম পার্টি অফিসে অগ্ণিসংযোগ করেছে দুর্বৃত্তরা৷ অগ্ণিকাণ্ডের ঘটনায় পার্শবর্তী একটি দোকান ভষ্মিভূত হয়ে গেছে৷ ঘটনার খবর পেয়ে সিপিআইএমের নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থলে ছুটে যান৷ পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে৷ উল্লেখ্য বৃহস্পতিবার বন্ধ চলা কালে এই অগ্ণিকাণ্ডের ঘটনা সংঘটিত হয়৷ অভিযোগের তীর শাসক দল বিজেপির দিকে৷এ ব্যাপারে সাবরুম থানায় একটি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে৷ পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে৷তবে এখনো পর্যন্ত এই ঘটনায় জড়িত কাউকে গ্রেপ্তারের সংবাদ নেই৷ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় তীব্র রাজনৈতিক উত্তেজনা বিরাজ করছে৷ পরিস্থিতির দিকে সতর্ক দৃষ্টি রেখে চলেছে পুলিশ৷