BRAKING NEWS

পোকার আক্রমণে কদমতলায় আড়াইশ কানি জমির ধান নষ্ট, মাথায় হাত চাষীদের

নিজস্ব প্রতিনিধি, চুরাইবাড়ি, ১২ সেপ্ঢেম্বর৷৷ বিরল প্রজাতির পোকার সন্ত্রাসে নষ্ট প্রায় দুইশো থেকে আড়াইশো খানি কৃষি ক্ষেত৷ আউশ ধান মোটামুটি ঘরে তুলতে পারলেও আমনের ধান গাছ খেয়ে চুরমার করে দিচ্ছে বিরল প্রজাতির পোকার দল৷ স্থানীয় কৃষি দপ্তরের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ কৃষকদের৷৫০-৬০ জন কৃষকদের মাথায় হাত৷ ঘটনা উত্তরের কদমতলা ব্লকাধীন বরগোল গ্রাম পঞ্চায়েতে৷


ঘটনার বিবরণে প্রকাশ, উত্তর জেলা কদমতলা ব্লকাধীন বরগোল গ্রাম পঞ্চায়েতের অধিকাংশ মানুষই কৃষি কাজের উপর নির্ভরশীল৷ বিশেষ করে ধান ফসল উৎপাদন করে সারা বছর সংসার প্রতিপালন করে থাকেন৷ তার মধ্যে অন্যতম বরগোল গ্রাম পঞ্চায়েতের ৩ নং ওয়ার্ডটি৷ এই ওয়ার্ডে প্রায় দুইশো থেকে আড়াইশো খানি কৃষি জমি রয়েছে৷ স্থানীয় ৫০-৬০ জন কৃষক এই কৃষি জমিতে আউশ ধান ও আমন ধানের ফসল উৎপাদন করে থাকেন৷ সেই ফসল জমি থেকে ঘরে তুলে সারা বছর তা দিয়ে সংসার পালন করে আসছেন দীর্ঘ যুগ যুগ থেকে৷ ওই গ্রামের পুরুষ-মহিলা সকলেই কৃষি কাজের উপর নির্ভরশীল৷

প্রতিবছরের মত এবছরের কৃষি মৌসুমে অর্থাৎ বৈশাখ মাসে এখানকার স্থানীয় কৃষকরা আউশ ধানের চারা রোপণ করেন৷ কিন্তু আষাঢ় মাস প্রবেশ করার সাথে সাথে কোথা থেকে একধরনের বিরল প্রজাতির মাছি অদৃশ্য ছোট ছোট কালো রঙের পোকা সমস্ত কৃষিজমিতে চলে আসে৷ ধানের চারা গাছের উপর বিরল প্রজাতির পোকাটি বসার ৪৮ ঘণ্টার ভেতরের মধ্যে চারা গাছটির রস খেয়ে সাদা করে গাছ মেরে ফেলছে৷এমন অবস্থা দেখে স্থানীয় কৃষকরা কদমতলা কৃষি মহাকুমা আধিকারিকের সাথে যোগাযোগ করলে কৃষকদের সমস্যার কোনো সুরাহা করেননি বলে কৃষকদের অভিযোগ৷ তারপর কৃষকরা আউশ ধানের ফসল কিছুটা ঘরে তুলতে পারলেও আমন ধানের চারা রোপনের সাথে সাথে সমস্ত ধানের চারা গাছ পোকার দল খেয়ে নিচ্ছে৷


স্থানীয় কৃষকরা জানান, আউশ ধানের চারা রোপণের পর এই বিরল প্রজাতির পোকা ধানের চারা গাছের উপর বসে সকল চারাগাছ খেয়ে নিলেও অল্প কিছু ফসল ঘরে তুলতে পেরেছিলেন৷ কিন্তু যত সময় গড়াচ্ছে ততো পোকার দল ভয়াবহ রূপ নিয়ে ধান গাছের উপর সন্ত্রাস চালাচ্ছে৷ সুতরাং আমন ধানের চারা রোপনের সাথে সাথে সকল ধানের চারা খেয়ে ধানের গাছকে জ্বালিয়ে দিচ্ছে৷ বর্তমানে ধান গাছে আগুন দিলে দাউদাউ করে জ্বলছে৷ কৃষকরা আরো জানান,বরগোল গ্রাম পঞ্চায়েতের ৩ নং ওয়ার্ডটি সম্পূর্ণ কৃষি জমির উপর নির্ভরশীল৷ কিন্তু এবছর ধানের ফসল ঘরে তুলতে পারবেন না তা নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন ওই এলাকার ৫০-৬০ জন কৃষক৷ কৃষকরা অভিযোগ করে বলেন, যখন আউশ ধানে বিরল প্রজাতির পোকা তাণ্ডব চালানো শুরু করেছিল তখন স্থানীয় কৃষি দপ্তরের সাথে যোগাযোগ করেছিলেন কিন্তু কৃষি দপ্তর থেকে বলে দেওয়া হয়েছিল ওই পোকা মারা বা তাড়ানোর কোন ধরনের ঔষধ নেই৷
এমনকি দীর্ঘ তিন মাস অতিক্রান্ত হয়ে যাবার পরও স্থানীয় কৃষি দপ্তরের কোন আধিকারিক এখন পর্যন্ত ২০০-২৫০ খানির জমির ধানের চারা গাছ পোকার দল খেয়ে যাওয়ার পরও ঘটনাস্থলে যাননি৷ কৃষি দপ্তরের এহেন ভূমিকায় ক্ষোভে ফুঁসছেন বরগোল এলাকার স্থানীয় কৃষকরা৷ স্থানীয় কৃষকরা জানান, একদিকে মহামারী করোনাভাইরাসের কারনে দিনমজুর মানুষের বেঁচে থাকা দুষ্কার্য হয়ে পড়েছে অপরদিকে বিরল প্রজাতির পোকার সন্ত্রাসে এবছর ফসল ঘরে তুলতে পারবেননা৷ সুতরাং সন্তান পরিজনদের নিয়ে অনাহারে থাকতে হবে তাদের৷ এমনকি ওই এলাকায় সকল কৃষকদের প্রধানমন্ত্রী ফসল বীমা যোজনা রয়েছে৷

অতএব রাজ্য সরকার যদি তাদের দিকে একটু দৃষ্টিপাত করেন তাহলে হয়তো ওই এলাকার কৃষকরা নিজের পরিবারের মুখে একটু অন্ন তুলে দিতে পারবে৷ সুতরাং স্থানীয় কৃষকরা নিরুপায় হয়ে রাজ্যে মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের জুড়ালো দাবি করছেন৷ পাশাপাশি জানা গেছে পার্শবর্তী দেশ বাংলাদেশের চট্টগ্রামে বিরল প্রজাতির মাছি দৃশ্য ওই পোকা গুলি কৃষি জমির ধানের গাছ ও ফসল খেয়ে নিয়েছিল৷ কোথা থেকে কিভাবে বা কি নাম ওই পোকা গুলির তা সকলেরই অজানা৷
এদিকে এসকল বিষয় নিয়ে কদমতলা কৃষি মহকুমা আধিকারিক শরদিন্দু নারায়ন দত্তকে জিজ্ঞেস করলে উনি কোন সদুত্তর দেননি৷ উনি সাফ জানিয়ে দেন উনার উর্দতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ রয়েছে যাতে করে কোনো সংবাদমাধ্যমের সামনে প্রতিক্রিয়া না দেন৷ এক কথায় কদমতলা কৃষি মহাকুমা আধিকারিকদের ভূমিকায় ক্ষোভে ফুঁসছেন কদমতলা কৃষি এলাকার স্থানীয় কৃষকরা৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *