করোনা : রাজ্যে লকডাউন সফল

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা/চুড়াইবাড়ি, ৫ জুলাই৷৷ রবিবার গোটা রাজ্যে একদিনের লকডাউনকে কেন্দ্র করে ব্যাপক সাড়া পড়ে লক্ষিত হয়েছে৷ ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে সব অংশের জনগণ সাড়া দিয়েছেন৷ দোকানপাট বাজার হাট সম্পূর্ণভাবে বন্ধ ছিল৷ রাস্তায় বেসরকারি কোনো যানবাহন চলাচল করেনি৷ রবিবারের লকডাউন পুরোপুরি সফল হয়েছে বলা যেতেই পারে৷ করোনা ভাইরাস সংক্রমণ জনিত কারণে রাজ্য সরকার রবিবার একদিনের লক ডাউন পালন করার জন্য রাজ্যবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছিল৷ সেই আহবানে সাড়া দিয়ে রাজ্যবাসী লকডাউন পুরোপুরিভাবে মান্য করেছেন৷ লকডাউন রাজ্যবাসী যাতে সফল করেন সেজন্য প্রশাসনিক তৎপরতা ও পরিলক্ষিত হয়েছে৷ রাজধানী আগরতলা শহরসহ রাজ্যের সর্বত্র ব্যাপক পুলিশি ব্যবস্থা পরিলক্ষিত হয়৷


জরুরী পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত লোকজন ছাড়া অন্যান্য কাউকে বিনা প্রয়োজনে রাস্তায় বের হতে দেওয়া হয়নি৷ বিনা প্রয়োজনে যারা বাড়ি থেকে বের হয়ে রাস্তায় বেরিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসন আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে৷ রবিবার সরকারি ছুটির দিন হওয়ায় সরকারি অফিস-আদালত সম্পূর্ণভাবে বন্ধ ছিল৷ অবশ্য লকডাউন এর ফলে রাস্তায় কোনো ধরনের যানবাহন চলাচল না করায় অসুস্থ রোগীদের দিয়ে অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়েছে অনেককেই৷ লক ডাউন পুরোপুরি সফল হয়েছে বলে অনেকেই অভিমত ব্যক্ত করেছেন৷ রাজ্যবাসী সার্বিক স্বার্থের কথা মাথায় রেখে এই ধরনের কথা রাজ্য সরকারের তরফ থেকে ঘোষণা করা হয়েছে৷ করোনা ভাইরাস সংক্রমণের সংখ্যা দিন দিন যেভাবে বেড়ে চলেছে তাতে লকডাউন আবারও দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার আশংকা করছেন অনেকেই৷

বর্তমান সময়ে গোটা দেশের সাথে রাজ্যজুড়ে করোনা ভাইরাস ভয়াবহ আকার নিলেও এই অতি মহামারীর সামনে থেকে মোকাবিলা করে চলছে রাজ্য সরকার৷মহামারী করোনা ভাইরাসের হাত থেকে রাজ্যবাসীকে রক্ষা করতে রাজ্য সরকার বিভিন্ন পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে৷তারই অঙ্গ হিসাবে গোটা রাজ্যের সাথে উত্তর জেলার কদমতলা, চুড়াইবাড়ি ও বাগবাসা আউট পোস্ট এলাকায় ২৪ ঘন্টার লকডাউনে ব্যাপক সাড়া পরিলক্ষিত হয়৷ ভোর ৫ টা থেকে স্থানীয় থানার আধিকারিক ও পুলিশকর্মীরা পুলিশি টহলদারিতে নেমে পড়েন৷ সাধারণ জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে মুখ্যমন্ত্রীর ডাকা ২৪ ঘন্টা লকডাউনে ব্যাপক সাড়া দিয়েছেন৷ রাজ্যের প্রবেশদ্বার কদমতলা চুড়াইবাড়ি সহ আশপাশ এলাকার বাগবাসা শনিছড়া নতুন বাজার ইত্যাদি এলাকার বাজার হাট সম্পূর্ণভাবে শুনশান৷ কিছু কিছু অত্যুৎসাহী যুবক রাস্তায় বের হলে কদমতলা থানার ওসি কৃষ্ণধন সরকার বুঝিয়ে নিজ বাড়িতে পাঠিয়ে দেন৷ কিছু কিছু দোকানপাট খোলা থাকলে পুলিশ প্রশাসন নিজ উদ্যোগে বন্ধ করে দেয়৷


অপরদিকে রাজ্যের একমাত্র প্রবেশদ্বার ৮ নং আসাম আগরতলা জাতীয় সড়ক দিয়ে জরুরী কালীন ও পণ্যবাহী গাড়ি চলাচল করলেও দরকার বিহীন গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে চুরাইবাড়ি থানার পুলিশ৷ তবে রোগি নিয়ে বহি রাজ্য থেকে আসা গাড়ির ক্ষেত্রে কিছুটা সমস্যার সম্মুখীন হলেও পরবর্তী সময়ে চুড়াইবাড়ি থানার ওসি জয়ন্ত দাসের হস্তক্ষেপে বহি রাজ্য থেকে আসা রোগীরা রাজ্যে প্রবেশ করেন৷ সবর্োপরি মুখ্যমন্ত্রীর ডাকা ২৪ ঘন্টা লকডাউন রাজ্যের মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে পালন করছেন৷ পাশাপাশি পুলিশ প্রশাসনও সকাল থেকে মাঠে নেমে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে৷

ধর্মনগর একদিনের লকডাউন রবিবার ভোর পাঁচটা থেকে পালিত হয়৷ ধর্মনগর মহকুমা পুলিশ আধিকারিক রাজীব সুত্রধর এর নেতৃত্বে জেলা শাসকের অফিসের সামনে পুলিশি তৎপরতা ছিল লক্ষ্যণীয়৷ জরুরী পরিষেবা যুক্ত লোকজন ছাড়া অন্যান্যদের রাস্তাঘাটে চলাচল করতে দেওয়া হয়নি৷ জরুরি প্রয়োজন ছাড়াই বেরিয়েছেন তাদের আটক করে জরিমানা করা হয়েছে৷ তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে৷ লকডাউন পুরোপুরি সার্থক করার জন্য প্রশাসনের তরফ থেকে যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়৷
প্রশাসনের কঠোর মনোভাবের ফলে লোকজন অহেতুক রাস্তাঘাটে বের হওয়ার সাহস পাননি৷ রবিবারের দিনটি কার্যত ছুটির আমেজে কাটিয়েছে ধর্মনগর সহ গোটা রাজ্যের জনগণ৷ উল্লেখ্য করোনা ভাইরাস সংক্রমণ জনিত পরিস্থিতিতে রবিবারে লকডাউনের মধ্যে দিয়ে রাজ্য সরকার কার্যত জনগণকে এই বিষয়ে প্রস্তুত থাকার জন্য চেষ্টা চালিয়েছে৷ করোনা ভাইরাসের গ্রাফ যেভাবে উর্দ্ধগামী হচ্ছে তাতে যে কোনো সময় লকডাউনের সময় সীমা বাড়তে পারে৷ ধর্মনগরে কার্যত এদিন বাজার হাট দোকান পাট বন্ধ ছিল৷ কোনো ধরনের বেসরকারি যানবাহন চলাচল করেনি৷
রবিবার সম্পূর্ণ লক ডাউনে জরুরী পরিষেবা গুলিকে ছাড় দেওয়া হয়৷ যথা রীতি চলে জরুরী পরিষেবা প্রদান৷ এই লক ডাউনে খোলা ছিল পেট্রোল পাম্প গুলি৷ সকাল থেকে প্রয়োজন ভিত্তিতে গাড়ি গুলিকে জ্বালানী সরবরাহ করা হয়৷ রাজধানীর দুর্গাবাড়ি, গনরাজ চৌমুহনী পেট্রোল পাম্প ছিল খোলা৷ সমস্ত পেট্রোল পাম্প খোলা থাকার কথা থাকলেও বেশ কয়েকটি পেট্রোল পাম্প ছিল সম্পূর্ণ বন্ধ৷ কোন ধরনের জ্বালানী এদিন দেওয়া হয়নি৷ অন্য দিনের তুলনায় চাপ কম থাকলেও পেট্রোল পাম্প গুলি খোলা রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল৷ অথচ তার পরেও কয়েকটি পেট্রোল পাম্প এদিন খোলা রাখেনি৷ তবে নতুন করে পেট্রোল- ডিজেলের কোন মূল্য বৃদ্ধি ঘটেনি বলে জানান রাজধানীর দুর্গাবাড়ির অশোক পেট্রোলিয়ামের মালিক মন্টু সাহা৷