নিজস্ব প্রতিনিধি, উদয়পুর, ২৮ এপ্রিল৷৷ বাম বা রাম যাই হোক না কেন নারী নির্যাতনকে যে কোনভাবেই লাগাম টানতে পারছে না তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না গত ৪৮ ঘণ্টায় রাজ্যে দু-দুটি নারী মৃত্যুর ঘটনায়৷ বিশালগড় এর কৃষ্ণা বালার মৃত্যুর ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আরেক জন মহিলাকে নিশংসভাবে মেরে ফেলা হলো মুখে এসিড ঢেলে৷ এবারের ঘটনা রাধাকৃষ্ণ পুর থানাধিন বাগমা এলাকায়৷ অবশ্য এবারের ঘটনায় হত্যাকারী ওই মহিলার স্বামী সহ পরিবারের লোকজনই৷ এমনটাই অভিযোগ করলেন মৃতার বাবা৷
ঘটনার বিবরণে জানা যায় বাগমার এলাকারই কলিরাম পাড়ার রাজিব নগর নিবাসী গোপাল দেবনাথ এর প্রথমা কন্যা সরস্বতী দেবনাথের ২০০৩ সালের জুলাই মাসে সামাজিক ভাবে বিয়ে হয় বাগমা এলাকার ই অনুকূল দেবনাথের ছেলে প্রণব দেবনাথ এর সাথে৷ বিয়েতে বর পক্ষের চাহিদা অনুযায়ী স্বর্ণের চেইন,নেকলেস , হাতের বালা নগর টাকা মিটিয়ে দেওয়া হয়৷ বিয়ের বছর খানিক পর থেকেই মৃতের স্বামী প্রণব বাপের বাড়ি থেকে টাকা এনে দেওয়ার জন্য চাপ দিয়ে আসছিল৷ তা নিয়ে নিত্যদিনই চলত তাদের বাড়িতে ঝামেলা৷ বর্তমানে চার বছরের একটি ছেলে রয়েছে তাদের৷ কিন্তু কোনমতেই তাদের সাংসারিক দাম্পত্য জীবনে কলহ থামছিল না৷ এর মধ্যেই মঙ্গলবার সকাল আনুমানিক সাড়ে সাতটা নাগাদ প্রণব তার শ্বশুর মশাই কে ফোন করে জানায় যে সরস্বতী গুরুতর অসুস্থ হয়ে গোমতী জেলা হাসপাতালে ভর্তি৷
মেয়ের অসুস্থতার খবর শুনে বাবা জেলা হাসপাতালে যাওয়ার পথেই প্রণব আবার ফোন করে জানায় যে হাপানিয়া হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে৷ এই কথা শুনে স্বরস্বতীর বাবা হাপানিয়া হাসপাতালে ছুটে গিয়ে জানতে পারেন তার মেয়ের সরস্বতী আর এই পৃথিবীতে নেই৷ হাসপাতাল থেকে ময়নাতদন্তের পর সরস্বতী নিথরদেহ সৎকারের জন্য উদয়পুর লোকনাথ আশ্রম সংলগ্ণ মহাশ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয়৷ কিন্তু সেখানে স্বরস্বতীর স্বামী প্রণব তার স্ত্রীকে শেষ দেখা দেখতে যাওয়ার প্রয়োজন বোধ করেননি৷ মৃতদেহ সৎকার শেষে স্বরস্বতীর পিতা গোপাল দেবনাথ রাধা কিশোরপুর মহিলা থানায় তার মেয়ের জামাই প্রণব দেবনাথ, বাসুর প্রশান্ত দেবনাথ, ও আরেক ভাসুর দেবনাথ এর বিরুদ্ধে সু পরিকল্পিতভাবে তার মেয়ের সরস্বতীকে মুখে এসিড ঢেলে মেরে ফেলার অভিযোগ দায়ের করেছেন৷
অভিযোগে তিনি আরও জানিয়েছেন তার মেয়ের জামাই প্রণব দেবনাথ এর বড় ভাই প্রশান্ত দেবনাথ এর কু নজর ছিল স্বরস্বতীর উপর৷ এনিয়ে পারিবারিকভাবে কয়েকবার সালিশি সভাও হয়েছিল৷ এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে মহকুমা পুলিশ আধিকারিক ধ্রুব নাথ ও রাধাকিশোর পুর মহিলা থানার ওসি আলপনা সরকার শ্মশানে গিয়ে পরিবারের লোকজনের সাথে কথা বলেন এবং ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের আশ্বাস দেন৷