আগরতলা, ৭ জানুয়ারি (হি.স.) : ‘শান্তিপূর্ণ গণ-অবস্থান’-এর নামে অর্ধনগ্ন হয়ে পথ অবরোধ করল ত্রিপুরায় শাসক জোট আইপিএফটি। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতা, এডিসি এলাকাকে নিয়ে পৃথক রাজ্য গঠন এবং ত্রিপুরায় এনআরসি চালুর দাবিতে গতকাল সোমবার থেকে খুমুলুঙে অনির্দিষ্টকালের গণ-অবস্থানে বসেছেন এনসি দেববর্মারা। কিন্তু আজ তাঁরা কার্যত অশান্ত হয়ে উঠেছিলেন। দলীয় পুরুষ কর্মীরা এদিন গণ-অবস্থান স্থলে অর্ধনগ্ন হয়ে পথ অবরোধ করলে এলাকায় উত্তেজনা ছাড়িয়ে পড়েছিল। অবশ্য পুলিশের হস্তক্ষেপে ঘণ্টা-দুয়েকের মধ্যেই তাঁরা অবরোধ তুলে নেন। এ-বিষয়ে আইপিএফটি সভাপতি এনসি দেববর্মা-সহ দলের কোনও শীর্ষ নেতাই মুখ খুলছেন না।
অতীতেও আইপিএফটি-র উশৃঙ্খল আন্দোলন ত্রিপুরাবাসী প্রত্যক্ষ করেছেন। বাম জমানায় জাতীয় সড়ক অবরোধে আইপিএফটি কর্মীরা নগ্ন হয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছিলেন। স্বাভাবিকভাবেই আবারও পরিস্থিতে সেই দিকে মোড় নিচ্ছে কিনা, সে-বিষয়টি প্রশাসনকে যথেষ্ট চিন্তায় ফেলেছে।
আজ সকাল থেকে গণ-অবস্থানের দ্বিতীয় দিনে অংশ নেন আইপিএফটি কর্মীরা। খুমুলুঙের দুকমালি বাজারে তারা গণ-অবস্থান করছিলেন। দুপুরের পর হঠাৎ কয়েকজন আইপিএফটি পুরুষ কর্মী অর্ধনগ্ন হয়ে পথ অবরোধে বসেন। আচমকা এই পরিস্থিতি দেখে সেখানে উপস্থিত নিরাপত্তা কর্মীরা কিংকর্তব্যবিমুঢ় হয়ে পড়েন। আইপিএফটি কর্মীদের পথ অবরোধে স্থানীয় জনমনে রীতিমতো আতঙ্ক দেখা দেয়। কারণ, তারা শুধু শান্তিপূর্ণ গণ-অবস্থান করবেন বলে ঘোষণা করেছিলেন। এমন-কি গতকাল আইপিএফটি সভাপতি তথা ত্রিপুরার রাজস্বমন্ত্রী এনসি দেববর্মাও সেই দাবি করেছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য, আইপিএফটি কর্মীদের স্লোগানে ভীষণ ঝাঁঝ ছিল। দাবির সমর্থনে তাদের জ্বালাময়ী স্লোগান স্বাভাবিকভাবেই শান্ত পরিবেশকে মুহূর্তের মধ্যে অশান্ত করে তুলেছিল। এ-বিষয়ে জিরানিয়া মহকুমা পুলিশ আধিকারিক সুমন মজুমদার বলেন, আইপিএফটি কর্মীরা প্রায় দু-ঘণ্টা পথ অবরোধ করেছিলেন। পরে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে তারা অবরোধ তুলে নেন। তবে গণ-অবস্থানস্থলে তারা যেহেতু পথ অবরোধ করেছিলেন তাই কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। সুমনবাবু বলেন, পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। স্থানীয় জনগণের ভীত-সন্ত্রস্ত হওয়ার কোনও কারণ নেই।