নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২ জানুয়ারি ৷৷ রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষা-বিপ্লব নিয়ে যত কথাই বলুন না কেন, রাজ্যের শিক্ষা-ব্যবস্থা এখনও সেই তিমিরেই রয়েছে৷ এখনও এমন অনেক সুকল রয়েছে যেখানে দিনের পর দিন শিক্ষকরা সুকলে আসেন না, সুকল প্রতিদিন নির্ধারিত সময়ের অনেক পরে খোলা হয়, সুকলের ছোট ছোট বাচ্চাদের নির্মমভাবে অত্যাচার করা হয়৷ এমনই এক সুকল কৈলাসহর মহকুমার চন্ডীপুর ব্লকের অধীনে ধনবিলাস গ্রাম পঞ্চায়েতের চার নং ওয়ার্ডে অবস্থিত ধনিবলাস আরপিসি জেবি সুকল৷
চন্ডীপুর ব্লকের অধীনে ধনবিলাস গ্রাম পঞ্চায়েতের চার নং ওয়ার্ডে অবস্থিত ধনিবলাস আরপিসি জেবি সুকলে চারজন শিক্ষক এবং একজন চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী রয়েছে৷ সুকলে মোট পয়ত্রিশ জন ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে৷ স্থানীয় গ্রামবাসীদের অভিযোগ, সুকলের চারজন শিক্ষকের মধ্যে শুভেন্দু চাকমা ও উত্তম দে এই দু’জন শিক্ষক সুকলে আসেন না৷ এমনকি মাসের পর মাস সুকলে অনুপস্থিত৷ অথচ বেতন প্রতিমাসে ঠিকই পাচ্ছেন৷ গ্রামবাসীরা বলেন, শুভেন্দু এবং উত্তম এই দুই স্যারকে বিগত ছয় মাসের মধ্যে সুকলে দেখা যায়নি৷ এছাড়া সুকল প্রতিদিন সকাল সাড়ে সাতটায় খোলার কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ে খোলা হয় না৷
প্রায় প্রতিদিনই সাড়ে আটটার পরে সুকল খোলা হয়৷ এছাড়াও গ্রামবাসীরা আরও গুরুতর অভিযোগ করেন যে, সুকলের মিড ডে মিলের রান্নার জন্য সুকলের পাশে একটা কুঁয়ো থেকে সুকলের ছোটছোট ছাত্র-ছাত্রীদের দিয়ে জল তোলা হয়৷ কুয়োটি গভীরতা রয়েছে প্রায় পঁচিশ ফুট৷ সুকলের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী দিনের পর দিন মিড ডে মিলের রান্নার জল আনতে বাধ্য করে এইভাবে ছাত্র-ছাত্রীদের নির্মমভাবে নির্যাতন করছে৷ এ ব্যাপারে গ্রামবাসীরা চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীকে বারণ করলেও উল্টো গ্রামবাসীদের ধমক দিয়ে বলে যে, সরকারি সুকলে পড়াশুনা করলে এই কাজটুকু করতেই হবে৷ তাছাড়া সুকল প্রতিদিনই এগারোটা কিংবা সাড়ে এগারোটায় বন্ধ হয়ে যায় বলে গ্রামবাসীদের অভিযোগ রয়েছে৷
সংবাদ সংগ্রহ করতে সংবাদ প্রতিনিধিরা এই সুকলে গেলে এই অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়৷ দুপুর সাড়ে এগারোটায় সংবাদ প্রতিনিধিরা সুকলে গিয়ে দেখে সুকল বন্ধ রয়েছে৷
সুকলের স্টাফরুমে একমাত্র হরিণাম দেববর্মা নামে শিক্ষক রয়েছেন৷ এইসব ব্যাপারে গ্রামবাসীরা প্রকাশ্যেই অভিযোগ করেছেন৷ শিক্ষক হরিনাম দেববর্মা সবগুলি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন যে, শুভেন্দু চাকমা ও উত্তম দে এই দুই শিক্ষক প্রায়ই সুকলে আসে না৷ এই খবর কয়েকবার দপ্তরকে জানানোর পরও কোন হেরফের হয়নি৷ সুকলের এইসব ঘটনা গ্রামবাসীরা স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সহ অন্যান্যদের জানালেও আজ অবধি পঞ্চায়েত এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি৷