নিজস্ব প্রতিনিধি, চুরাইবাড়ি, ১৫ ডিসেম্বর ৷৷ পারিবারিক কলহের জেরে অবশেষে অভিমানে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা মাঝবয়সী এক গৃহবধূর৷ আগুনে শরীরের ৯০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছে৷ বর্তমানে হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে কৃষ্ণা নমঃ নামের ওই গৃহবধূ৷ এই ঘটনাটি সংগঠিত হয়েছে উত্তরের পূর্ব লালছড়া এলাকায়৷ উত্তর জেলার কদমতলা থানাধীন পূর্ব লালছড়া গ্রামের ৬নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা অজিত নমঃ ১৭ বছর পূর্বে সামাজিকভাবে ঊনকোটি জেলার কৈলাসহরের টিলাবাজারের কৃষ্ণা নমঃকে বিয়ে করেন৷
বিয়ের পর তাদের দাম্পত্য জীবনে সুখেরই ছিল৷ স্বামী অজিত নমঃ পেশায় রং মিস্ত্রি৷ তাদের ঘর আলো করে দুটি পুত্রসন্তান জন্ম নেয়৷ কিন্তু বিগত কয়েকবছর যাবৎ স্বামী অজিত নমঃ ও স্ত্রী কৃষ্ণা নমের মধ্যে পারিবারিক কলহ দেখা দেয়৷ আর পারিবারিক কলহ দিনকে দিন বৃদ্ধি পেতে থাকে৷ প্রতিদিনের মত রবিবার সকালবেলাও স্বামী অজিত নমঃ কাজে যাবার আগে স্ত্রী কৃষ্ণা নমের সাথে প্রচণ্ড ঝগড়া ঝাটি করে কাজে চলে যান৷ দুপুর নাগাদ ১৫ বছর এবং ১৩ বছরের দুই ছেলে কৃষি জমিতে কাজে চলে যায়৷ সেই সুযোগে স্ত্রী কৃষ্ণা নমঃ অভিমানে নিজ বাড়ির পরিত্যক্ত একটি ঘরের দরজা বন্ধ করে গায়ে আগুন লাগিয়ে দেন৷
আগুন লাগার পর মাঝবয়সী মহিলা কৃষ্ণার চিৎকার-চেচামেচি শুনে তার প্রতিবেশী আত্মীয়পরিজনরা ছুটে এসে ঘরের দরজা ভেঙে দেখতে পান কৃষ্ণা নমের সমস্ত শরীরে আগুন জ্বলছে৷ কোনভাবে শরীরের আগুন নিভিয়ে আত্মীয় পরিজনরা কদমতলা থানা ও প্রেমতলা দমকল দপ্তরে খবর দেন৷ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় কদমতলা থানার পুলিশ ও দমকল কর্মীরা৷ ঘটনাস্থল থেকে পুলিশের গাড়ি দিয়ে অগ্ণিদগ্দ কৃষ্ণাকে কদমতলা গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক কৃষ্ণার অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে ধর্মনগর জেলা হাসপাতালে রেফার করেন৷
তারপর অগ্ণিদগ্দ গৃহবধূর আত্মীয়পরিজনরা কৃষ্ণাকে ধর্মনগর জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বর্তমানে সে চিকিৎসাধীন৷ জানা গেছে আগুনে পুড়ে গিয়েছে শরীরের প্রায় ৯০ শতাংশ৷ এদিকে কদমতলা থানার পুলিশ গোটা ঘটনাটি তদন্ত করছে৷ কি কারণে মাঝবয়সী এক গৃহবধূ গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যা করতে চেয়েছিল তা খতিয়ে দেখছে কদমতলা থানার পুলিশ৷
পাশাপাশি ঘটনাস্থল থেকে কেরোসিনের ড্রাম ও ম্যাচ লাইট উদ্ধার করেছে পুলিশ৷ অপরদিকে অগ্ণিদগ্দ মাঝবয়সী গৃহবধূ কৃষ্ণার স্বামীর বাড়ির লোকজনরা জানান, কৃষ্ণা ও তার স্বামীর মধ্যে প্রতিনিয়ত পারিবারিক কলহ লেগেই থাকত৷ রবিবার সকালেও তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়েছিল৷ তবে কি কারণে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যা করতে চেয়েছিল তা সবারই অজানা৷ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে৷ পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে৷