অসম : তিনসুকিয়া-লামডিং প্যাসেঞ্জার ট্রেনের কামরায় পাঁচদিন ধরে শায়িত অর্ধমৃত পচন ধরা মহিলা, উঠেছে রেল কর্তৃপক্ষের দায়বদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন

গুয়াহাটি, ২৪ নভেম্বর (হি.স.) : জনৈক সাংবাদিকের তৎপরতায় উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেল পরিচালিত তিনসুকিয়া এবং লামডিং জংশনের মধ্যে চলাচবকারী দৈনিক প্যাসেঞ্জার ট্রেন থেকে উদ্ধার হয়েছে জনৈক অর্ধমৃত সংজ্ঞাহীন মহিলার পচন ধরা দেহ। গত পাঁচদিন ধরে মহিলাটি একটি সাধারণ কামরার মেঝেতে পড়ে থাকলেও তার প্রতি নজর দেওয়া কিংবা মহিলাটিকে সহায়তা করতে কেউ আসেননি।

প্ৰাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, শনিবার উজান অসমের চরাইদেও জেলার সফ্ৰাই রেলস্টেশন থেকে স্থানীয় সাংবাদিক মিণ্টু তাঁতি তাঁর পত্নীকে সঙ্গে নিয়ে তিতাবরে যেতে ৫৫৯০২ নম্বর ডাউন প্যাসেঞ্জার ট্রেনের ১১৪১৮ নম্বর কামরায় ওঠেন। ট্রেনটি সফ্ৰাই স্টেশন ছাড়ার পর বিকট দুর্গন্ধ নাকে আসে সাংবাদিক মিণ্টুর। তিনি দুর্গন্ধের উৎস খুঁজতে বেরিয়ে ওই কামরার একটি কোঠার মেঝেতে অসহায় জনৈক মহিলাকে পড়ে থাকতে দেখেন। দৃশ্যটি দেখে ফোনে রেলের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন। লাভ হয়নি। অবশেষে রেলের জরুরিকালীন টোল-ফ্ৰি নম্বর ১৮২-এ দুবার ফোন করেন। কিন্তু বিস্মকরভাবে এখান থেকেও কোনও সুদুত্তর পাননি।

সাংবাদিক মিণ্টু তাঁতি জানান, মহিলাটির শরীরে পচন ধরে পোকার জন্ম হয়ে দুৰ্গন্ধ বের হচ্ছিল। ট্রেনের নিত্যযাত্রীদের উদ্ধৃতি দিয়ে তাঁতি জানান, বিগত চার-পাঁচ দিন ধরে মহিলাটি একইভাবে ট্রেনের কামরার মেঝেতে পড়ে রয়েছেন। তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার কোনও ব্যবস্থার উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

এদিকে ঘটনাটি শুনে ওয়াকিবহাল মহল বিস্ময় প্রকাশ করে বলেছে, এভাবে এক মহিলা গত পাঁচদিন ধরে চলন্ত ট্রেনের একটি কামরায় মুমূর্ষু অবস্থায় পড়ে রয়েছেন, অথচ কথিত নিত্য টহলদারী রেল পুলিশ বা বিভাগীয় কারোর নজরে পড়লেন না তিনি! রেলওয়ের যাত্রীদের প্রতি রেল কর্তৃপক্ষের কতটা দায়বদ্ধতা বিদ্যমান তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে ঘটনাটি। তাছাড়া, ভারতীয় রেলের জরুরিকালীন পরিষেবার ১৮২ নম্বর ফোনে যোগাযোগ করেও কোনও সুদুত্তর না পাওয়ার ঘটনাও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কর্তব্য ও নিষ্ঠার প্রতি নানা প্রশ্নের সৃষ্টি করেছে। তবে, মহিলাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কি না সে-সম্পর্কে কোনও খবর দিতে পারেনন কেউ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *