নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৭ নভেম্বর৷৷ পূর্ত দপ্তরের আর্থিক ঘোটালা নিয়ে বাম জমানার পূর্তমন্ত্রী বাদল চৌধুরীর বিরুদ্ধে যখন আইনত ব্যবস্থা গ্রহণ শুরু হয়েছে তখন থেকে নীরবতাই প্রদর্শন করে চলেছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার৷ কিন্তু, শেষ পর্যন্ত মহান নভেম্বর বিপ্লবের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর দিনে টাউন হলে হল সভায় বাদল চৌধুরী ইস্যুতে মানিক সরকার বিজেপি জোট সরকারের বিরুদ্ধে সূর চড়ালেন৷ মানিক বাবুর অভিযোগ, প্রতিশ্রুতির খেলাপ বুঝেছেন মানুষ তাই ষড়যন্ত্র হয়েছ বাদল চৌধুরীর বিরুদ্ধে৷
![](https://jagarantripura.com/wp-content/uploads/2019/11/DSC_3811-1024x683.jpg)
মানিক সরকার বলেন, বিজেপি জোট সরকার প্রতিশ্রুতির খেলাপ করেছে৷ একেবারে ৯০ ডিগ্রি না ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে যাচ্ছে, মানুষের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে৷ তাই ষড়যন্ত্রের আশ্রয় নিচ্ছে৷ তাদের টার্গেট কমিউনিস্টরা৷ কমিউনিস্টদের যেসব শক্ত ঘাটি রয়েছে, যেমন পশ্চিমবঙ্গ, কেরালা, ত্রিপুরা৷ পশ্চিমবঙ্গে একভাবে করছে, কেরালায় অন্যভাবে করছে৷
সিপিএম পলিটব্যুরোর সদস্য মানিক সরকার আরও বলেন, ত্রিপুরায় সরকার দখল করার পরও সন্তুষ্টি নেই৷ বাদল চৌধুরীর বিরুদ্ধে কিসের মামলা এটা৷ ২০০৮ সালে এই ত্রিপুরাতে যেখানে রাস্তা নেই সেখানে রাস্তা করতে হবে৷ কাঠের সেতুগুলি পাকা করতে হবে৷ শুধু আগরতলায় বসে সরকার চালানো না, প্রশাসনকে গ্রামে গঞ্চে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে৷ সুকল বাড়ছে, কলেজ বাড়ছে, হাসপাতাল বাড়ছে৷ উন্নয়নের স্বার্থে যেসব সংস্থাগুলি সরকারের সাথে যুক্ত ছিল সেগুলির পরিকাঠামো গড়ে তোলার প্রয়োজন পড়েছিল৷ বহু লড়াইয়ের পর কেন্দ্রের কাছ থেকে টাকা পাওয়া যায়৷ কেন্দ্র টাকা ভাগ করে দেয়৷ প্রথম টাকা খরচ করার পর ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট জমা দেওয়ার পর পরের কিস্তির টাকা দেওয়া হয়৷ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে টাকা খরচ না করতে পারলে সমস্যা হয়৷ এই পরিস্থিতিতে পূর্ত দপ্তর এতগুলি কাজ করার মতো অবস্থায় ছিলনা৷
মানিক সরকার বলেন, আমাদের রাজ্যের বাইরে যেসব সংস্থা রয়েছে সেগুলিকে আনতে হবে৷ এইরকম কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে স্বাভাবিক যে দর আছে কাজের তার থেকে বেশী দিতে হয়েছে৷ ওই সময় রাজ্যে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ মারাত্মক ছিল৷ তখন বাইরের সংস্থা এখানে কাজ করতে আসত না৷ তৎকালীন মুখ্যসচিব ভি তুলসীদাস বিভিন্ন রাজ্যে গিয়ে সংস্থাগুলির সাথে কথা বলে অনুরোধ করে রাজ্যে কাজ করার জন্য ডাকেন৷ অনেক সংস্থাই আসতে চায়নি৷ এইরকম পরিস্থিতিতে সাধারণ যে দর রয়েছে তার থেকে বেশী দর না দিলে তারা তো এখানে কাজ করতে আসবেন না৷ আর তখন তাই করা হয়েছে৷
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার বলেছেন, বাদল বাবুকে ডেকেছে পুলিশ৷ তিনি গিয়েছেন৷ তদন্তে সহায়তা করার চেষ্টা করেছেন৷ ২০০৮ এর ঘটনা ২০১৯ এ জানতে চাওয়া হয়৷ বাদলবাবুতো আর জাতিস্বর না, কি করে বলবেন সমস্ত কিছু৷ তিনি পুলিশকে সমস্ত কিছু খুলে বলেছেন৷ তারপরও এফআইআর করা হয়েছে৷ গ্রেপ্তার করার জন্য গোটা রাজ্যে কি কান্ডই না ঘটানো হল৷ আগাম জামিনের জন্য বাদলবাবু আদালতে আর্জি জানান৷ তাতে কিছু সময় অতিবাহিত হয়েছে৷ এইজন্য বাদল চৌধুরীকে কিছুদিন আত্মগোপনে থাকতে হয়েছে৷
মানিক সরকার বলেন, বাদল চৌধুরীকে কে চিনেন না৷ তিনি ছাত্র আন্দোলন থেকে শুরু করে কৃষক আন্দোলন, পার্টির সংগঠক, সাংসদ, বিধায়ক তারপর মন্ত্রী৷ কুড়ি বছর টানা মন্ত্রী৷ তাঁর গায়ে কালির ছিটে দেওয়ার কোন ঘটনা কেউ উল্লেখ করতে পারবেন না৷ একটা সরকার কতটা অমানবিক হলে এমন একটা কাজ করতে পাড়ে, প্রশ্ণ মানিক সরকারের৷