সিপিএমকে যারা ক্ষমতায় এনেছিল তারাই আজ আমায় প্রশ্ণ করছে : মুখ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৪ সেপ্ঢেম্বর৷৷ রাজ্যে সিপিএমকে যারা ক্ষমতায় এনেছিল তারাই এখন প্রশ্ণ করছে৷ সরকারের সমালোচনার চেষ্টা করছে৷ যারা বিধানসভায় বারের লাইসেন্স নিয়ে প্রশ্ণ তুলছেন তাদের রাজনৈতিক ইতিহাস রাজ্যবাসী জানেন৷ শুধু তাই নয় নেশা কারবারিদের সাথে কাদের সখ্যতা রয়েছে এবং কারা ধৃত নেশা কারবারিদের ছেড়ে দেওয়ার সুপারিশ করেন৷ তাদের নাম প্রকাশ করলে তারা মুখ দেখাতে পারবে না বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব৷


আজ রাজধানী আগরতলার নজরুল কলাক্ষেত্রে ত্রিপুরা সরকারের তথ্য সংসৃকতি দপ্তর আয়োজিত রাজ্যস্তরীয় নাট্যোৎসবের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব৷ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যে নতুন করে মদের লাইসেন্স প্রদান বিষয়ে উৎপন্ন বিতর্ক নিয়ে আলোচকদের জবাব দিলেন৷ বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন যে, যারাই বিধানসভায় এইধরনের প্রশ্ণ তুলেছেন তাদের আমি বলতে চাই যে প্ররোচনায় আমি পা দেবো না, রাজ্যের জনগণের কথায় আমি উঠব আর বসব৷ আমি নতুন কিছু করিনি, পুরনো সিস্টেমকেই সাজানোর চেষ্টা করছি৷ বারের লাইসেন্স দিয়ে আমরা অভিভাবকদের তার মেয়ে বা ছেলেকে শহরের যত্রতত্র ছড়িয়ে থাকা উশৃঙ্খলদের থেকে সুরক্ষার ব্যবস্থা করছি মাত্র৷


আমরা পরীক্ষামূলকভাবে এই বারগুলিকে সুযোগ দেব৷ বারগুলিতে সিসিটিভি ক্যামেরা, পুলিশ ও অন্যান্য সুরক্ষার ব্যবস্থা রাখছি যাতে করে কোন ধরনের কোন অবৈধ কাজ না ঘটে৷ আগরতলাবাসী সবাই জানে কোন কোন হোটেলে এইসব অবৈধ ব্যবসা চলে কিন্তু কেউ এর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়নি৷ আমার সরকার এর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে গিয়েই পদক্ষেপটি নিয়েছে৷ আমার কাছে বহু লোকের তরফ থেকে সুপারিস এসেছে যারা আমায় বিভিন্ন সময় নেশা কারবারিদের ছেরে দেওয়ার জন্য সুপারিস করেছে কিন্তু আমি সেটা হতে দেইনি৷ তাদের যদি নাম বলে দেই তাহলে ওরা মুখ দেখাতে পারবে না৷


তিনি ইতিহাস টেনে আরও বলেন যে এ রাজ্যে কমিউনিষ্ট পার্টির আবির্ভাবের কারণ ঐসব নেতারাই৷ হোক সে সিএফডি-র সরকার, জনতা দলের সরকার, কারা এই রাজ্যে সিপিএম কে ফায়দা করে দিয়েছিল তা রাজ্যবাসী জানে৷ যারা এই রাজ্যকে রাষ্ট্রপতি শাসনের মাধ্যমে কমিউনিষ্টদের হাতে তুলে দিয়ে ২৫ বছর পেছনে ঠেলে দিয়েছিল তারাই আজ বিধানসভায় আমাকে প্রশ্ণ করে৷ আমি নেশামুক্ত ত্রিপুরা গড়ব এবং এই সংকল্পে আমি অটল৷


মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের সব ধরনের শিল্পের প্রতি গুরুত্ব দিয়ে বলেন যে, যতক্ষণ পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের শিল্পের কমার্শিয়ালাইজেশন হবে না ততদিন পর্যন্ত এদের মেয়াদ দীর্ঘায়িত হবে না৷ আর সরকার কমার্শিয়ালাইজেশন করতে পারবেনা তবে অবশ্যই উৎসাহিত করতে পারবে৷ কমার্শিয়ালাইজেশনের্ মাধ্যমে রোজগার সৃষ্টি করতে হবে এবং তবেই ঐ শিল্প উন্নত হতে পারবে৷ আমাদের নতুন সরকার আসার পর কালচারেল হাব, হেল হাব, আইটি হাবের কথা বলছে এবং সেই মোতাবেক অর্থও বরাদ্দ হচ্ছে৷ বিভিন্ন একাডেমীকে আমন্ত্রন করা হচ্ছে এবং নজরুল কলাক্ষেত্রে ললিত কলা একাডেমিকে আলাদা জায়গা করে দেওয়া হয়েছে যেখান থেকে তারা কাজ করছে৷


সত্যজিত রায় ফাউন্ডেশনেরও একটা ব্যবস্থা করা হয়েছে৷ উত্তর পূর্বাঞ্চলে কোন কালচারেল হাব নেই কিন্তু আমাদের ত্রিপুরাতে প্রাকৃতিক, ভৌগোলিক সব ধরনের বাতাবরন রয়েছে৷ কিন্তু পূর্বতন সরকার কালচারেল হাব বানানোর কোন উদ্যোগ নেয় নি৷ ভারতবর্ষের সবচেয়ে বড় ইন্ডাষ্ট্রী রয়েছে মহারাষ্ট্রে, ফিল্ম ইন্ডাষ্ট্রী৷ কিন্তু সেখানে সরকার কোন ভূমিকাতে নেই শুধু তার জন্যে পরিকাঠামো তৈরি করে দিয়েছে সরকার৷ ত্রিপুরা রাজ্যের কাছে ছিলেন দুইজন কিংবদন্তী সঙ্গীত শিল্পী এস ডি বর্মন ও আর ডি বর্মন কিন্তু পূর্বতন সরকার তাদেরকে অবহেলিত করে রেখেছিল৷ তাই আজ আমি বলছি আপনারা এগিয়ে আসুন, কলার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের ভিক্ষা করার দরকার নেই, একবার সংকল্প করুন দেখবেন সফলতাও পেয়ে যাবেন৷ আজকের এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিধানসভার ডেপুটি স্পীকার শ্রী বিশ্ববন্ধু সেন, বিধায়ক আশিষ সাহা ও তথ্য সংসৃকতি দপ্তরের বিভিন্ন আধিকারিকগণ৷