রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও এসমা নিয়ে বিধানসভায় প্রতিবাদ বিরেধীদের, ওয়াকআউট

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৩০ আগস্ট৷৷ ত্রিপুরার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আজ বিধানসভায় মুলতবি প্রস্তাব আনেন বিরোধীরা৷ কিন্তু, অধ্যক্ষ তা খারিজ করে দেওয়ায় প্রতিবাদে তাঁরা ওয়াকআউট করেন৷ বিরোধীদের দাবি, ত্রিপুরায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ক্রমশ ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে৷ ট্রেজারি বেঞ্চের সদস্য সুদীপ রায়বর্মণ বলেন, আগামী সোমবার সূচি অনুযায়ী গৃহ দফতর প্রশ্ণেত্তর পর্বে বিভিন্ন প্রশ্ণের জবাব দেবে৷ ওইদিন এ-বিষয়ে আলোচনা করার প্রস্তাব দেন তিনি৷ কিন্তু, বিরোধীরা তাতে রাজি হননি৷


ত্রিপুরা বিধানসভার বর্ষাকালীন অধিবেশনের প্রথম দিন শূন্যকালে বিরোধী উপ-নেতা বাদল চৌধুরী রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে মুলতবি প্রস্তাব আনেন এবং আলোচনার দাবি জানান৷ কিন্তু, অধ্যক্ষ রেবতিমোহন দাস বিরোধীদের আনা মুলতবি প্রস্তাব খারিজ করে দেন৷ এতে বিরোধী বিধায়ক ভানুলাল সাহা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ইতিপূর্বেও এ-বিষয়ে মুলতবি প্রস্তাব আনা হয়েছিল৷ কিন্তু তখনও অধ্যক্ষ অনুমতি দেননি৷ এর পরই সব বিরোধী সদস্য মুলতবি প্রস্তাবের ওপর আলোচনার দাবিতে হইহট্টগোল শুরু করেন৷


এরই পরিপ্রেক্ষিতে ট্রেজারি বেঞ্চের সদস্য বলেন, আইন-শৃঙ্খলা ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা হতেই পারে৷ তবে, আগামী সোমবার সূচি অনুযায়ী গৃহ দফতর বিভিন্ন প্রশ্ণের জবাব দেবে৷ তখন এ-বিষয়ে আলোচনা করা যেতে পারে, প্রস্তাব দেন তিনি৷ সাথে তিনি যোগ করেন, পূর্বতন সরকারের জমানায় আইন-শৃঙ্খলার হিসাবের সঙ্গে গত ১৫ মাসে রাজ্যের পরিস্থিতির তুলনা করে দেখা নেওয়া উচিত৷
কিন্তু বিরোধীরা তাতে দমে যাওয়ার ছিলেন না৷ বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার তখন অভিযোগ করেন, বিধানসভায় বলপূর্বক বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা হচ্ছে৷ তা কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যায় না৷ তাই, প্রতিবাদে তাঁরা ওয়াকআউট করবেন জানিয়ে সভা ছেড়ে বেরিয়ে যান৷


এদিকে, আজ ত্রিপুরা বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব এসমা (এসেন্সিয়াল সার্ভিসেস মেইনটেনেন্স অ্যাক্ট) বিল পেশ করেছেন৷ বিরোধীরা এই বিলের তীব্র আপত্তি জানান৷ বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার বিলের বিরোধিতা করে বলেন, সরকারি কর্মচারীরাও রাজ্যের সাধারণ নাগরিক৷ তাই, তাঁদের আওয়াজ সরকারকে শুনতেই হবে৷ বিলটি ওই অধিকারের পরিপন্থী৷ তাই তিনি এসমা বিল প্রত্যাহারের আবেদন জানান৷ কিন্তু, রাজ্য সরকার তাতে রাজি হয়নি৷ ফলে, বিরোধীরা বিলের বিরোধিতায় ওয়াকআউট করেন৷


শুক্রবার ত্রিপুরা বিধানসভার বর্ষাকালীন অধিবেশনের দ্বিতীয়ার্ধে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব এসমা (এসেন্সিয়াল সার্ভিসেস মেইনটেনেন্স অ্যাক্ট) বিল পেশ করেন৷ তাতে, বিরোধী দলনেতা আপত্তি জানিয়ে বলেন, সকলের মতো প্রকাশের অধিকার রয়েছে৷ সে-ক্ষেত্রে সরকারি কর্মচারীরাও ত্রিপুরার নাগরিক৷ ফলে, তাঁদেরও সমানভাবে ওই অধিকার রয়েছে৷ তাঁর দাবি, তাঁদেরও দাবি-আপত্তি রাজ্য সরকারকে শুনতেই হবে৷ কিন্তু এই বিল সরকারি কর্মাচরীদের মুখ বন্ধ করে দেওয়ার জন্যই আনা হয়েছে বলে তিনি মনে করেন৷


বিরোধী দলনেতার কথায়, ঘাড়ে খড়গ ঝুলিয়ে কাজ হাসিল করা যায় না৷ তাই, এই বিল আনা আদৌ প্রয়োজন কিনা তা আবারও ভালো করে ভেবে দেখা প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন৷ এজন্যই তিনি এই বিল প্রত্যাহার করার আবেদন জানান৷ রাজ্য সরকার এই বিল প্রত্যাহার করতে না চাইলে বিরোধিরা প্রতিবাদে ওয়াকআউট করেন৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *