শাশুড়িকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে খুন করে থানায় আত্মসমর্পণ জামাতার

নিজস্ব প্রতিনিধি, চুড়াইবাড়ি, ১৮ আগস্ট৷৷ শ্বশুরবাড়িতে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে স্ত্রী রাজশ্রী শর্মাকে খুন করতে গিয়েছিল স্বামী মধুসূদন গোস্বামী৷ মেয়েকে ঘাতক জামাতার হাত থেকে রক্ষা করতে গিয়ে নিজেই খুন হয়েছেন শাশুড়ি অর্চনা শর্মা (৫৫)৷ ঘটনা সীমান্তবর্তী উত্তর ত্রিপুরার কদমতলা থানা এলাকায় আজ, রবিবার সকাল প্রায় দশটা নাগাদ সংঘটিত হয়েছে৷ তবে শাশুড়ি-হন্তা জামাতা মধুসূদন পুলিশের কাছে এসে আত্মসমর্পণ করেছে৷


ঘটনার বিবরণে প্রকাশ, উত্তর জেলার সদর ধর্মনগরের ভাগ্যপুর এলাকার বাসিন্দা প্রয়াত জনৈক সুখময় গোস্বামীর ছেলে মধুসূদন গোস্বামী ওরফে সমরেন্দ্রর সঙ্গে কদমতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বেলতলা রোডের বাসিন্দা প্রয়াত স্বপন শর্মার মেয়ে রাজশ্রী শর্মার বিয়ে হয়েছিল বছর সাতেক আগে৷ তাদের পাঁচ বছরের এক পুত্র সন্তান রয়েছে৷ পারিবারিক কলহের জেরে উভয়ের মধ্যে বিগত এক বছর ধরে আদালতে বিবাহ বিচ্ছেদ (ডিভোর্স) মামলা চলছে৷ তখন থেকে প্রায় বছর খানেক ধরে রাজশ্রী তাঁর পাঁচ বছরের একমাত্র ছেলেকে নিয়ে মায়ের বাড়ি চলে আসেন৷ মা ছাড়া আর কেউ তাঁর বাবার বাড়িতে নেই৷ বছর কয়েক আগে রাজশ্রীর বাবা স্বপন শর্মা মারা যান৷ এর পর তাঁর স্ত্রী অর্চনা গ্রামের গৃহস্থদের বাড়ি বাড়ি কাজ করে কোনরকমে জীবনযাপন করতেন৷

তাঁর চার মেয়ে৷ সকলের বিয়ে হয়ে গেছে৷ কিন্তু ছোট মেয়ের সাথে ডিভোর্স মামলা চলায় স্বামী গৃহ ছেড়ে তিনি চলে আসেন মায়ের কদমতলা বেলতলা রোডের বাড়িতে৷ আজ সকাল প্রায় ১০টা নাগাদ মধুসূদন গোস্বামী তার শ্বশুরবাড়ি অর্থাৎ অর্চনাদেবীর কদমতলা বেলতলা রোডের বাড়িতে এসে স্ত্রীর সঙ্গে অযথা বচসায় লিপ্ত হয়ে পড়ে৷ এক সময় সে দা দিয়ে কুপিয়ে মারতে যায় স্ত্রী রাজশ্রীকে৷ রাজশ্রী পালিয়ে ঘর থেকে রাস্তায় বেরিয়ে যায়৷ উদ্যত দা নিয়ে পিছনে ছুটে চলে মধুসূদন৷ ইত্যবসরে পাশের বাড়ির কাজ সেরে রাস্তা ধরে ঘরে ফিরছিলেন শাশুড়ি অর্চনা দেবী৷ তিনি জামাতার এই রুদ্র রূপ দেখে হতভম্ব হয়ে যান৷ ছুটে মেয়েকে বাঁচাতে গিয়ে উন্মত্ত জামাতার রোষের মুখে পড়েন তিনি৷ শাশুড়িকে পদাঘাত করে রাস্তার পাশে কৃষিজমিতে ফেলে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে সে৷ শাশুড়ি অর্চনার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় দায়ের কোপ পড়ে৷ এক কোপ তাঁর গলায় পড়লে কিক্ষুক্ষণ ছটফট করতে করতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু বরণ করেন শাশুড়ি অর্চনা শর্মা৷ তবে মধুসূদনের দায়ের কোপ পড়েছে স্ত্রী রাজশ্রী শর্মার ওপরও৷ তাঁর হাতে ও গলায় আঘাত লেগেছে৷ বর্তমানে গুরুতর আহত অবস্থায় ধর্মনগর জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি৷


এরই মধ্যে আশপাশের মানুষজন ছুটে আসেন৷ তবে এর আগে বেগতিক দেখে পালিয়ে যায় ঘাতক মধূসুদন গোস্বামী৷ ঘটনার বেশ কিছুক্ষণ পর কদমতলা থানায় দা-সহ আত্মসমর্পণ করে ঘাতক সমরেন্দ্র৷ তার মুখে সব শুনে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় কদমতলা থানার পুলিশ৷ তাঁরা কৃষিখেত থেকে অর্চনা শর্মার মৃতদেহ উদ্ধার করে তার ময়না তদন্ত করতে কদমতলা হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে৷
এ ব্যাপারে কদমতলা থানার ওসি কৃষ্ণধন সরকার জানান, ঘটনা সম্পর্কে খুনি মধুসূদন গোস্বামীর বিরুদ্ধে ভারতীয় ফৌজদারি দণ্ডবিধির ৩৫২, ৩২৬, ৩০৭, ৩০২ ধারায় ৪৮/১৯ নম্বরে মামলা রুজু করা হয়েছে৷ তদন্ত চলবে৷ বয়ান নেওয়া হবে তার স্ত্রী রাজশ্রীরও৷


এদিকে, ঝুলন্ত অবস্থায় পচা গলা মৃত দেহ উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্য৷ ঘটনা ধর্মনগর থানার অন্তর্গত পুর্ব কামেশ্বর বরোইরতল ৫নং অয়ার্ড এলাকায়৷ ঘটনার বিবরনে যানা যায় ধর্মনগর পুর্ব কামেশ্বরের বরোইরথল এলাকায় রাস্তার পাশে জংগল থেকে দুরগন্ধ বেরোচ্ছিল৷এলাকাবাসীর সন্দেহ হয়৷ এলাকাবাসীর তরফ থেকে খবর সেওয়া হয় ধর্মনগর থানায়৷ ঘটনা স্থলে পৌঁছে পুলিশ দেখতে পায় রাস্তার পাশের জংগলে ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে একটি পুরুষের পচাগলা মৃত দেহ৷

যানা যায় এই এলাকারই নিপেন্দ্র দাস ৫৬ নামে এক ব্যক্তি পেশায় দিনমজুর গত ১৪ই আগস্ট থেকে নিখোঁজ প্রথমে ধারনা করা হয় ঝুলন্ত অবস্থায় যে মৃত দেহটি নিপেন্দ্র দাসের৷ খবর দেওয়া হয় নিপেন্দ্র দাসের পরিবার কে৷ তারপর নিপেন্দ্র দাসের ছেলে ছুটে আসে এবং মৃত দেহ দেখে জানায় এই মৃত দেহটি তার বাবা নিপেন্দ্র দাসের না তবে কাপর তার বাবার মতই৷ নিপেন্দ্র দাসের ছেলে অয়ন দাস পরিষ্কার ভাবে মৃত দেহটি চিহ্ণিত করতে না পারায় খবর লেখা পর্যন্ত মৃত দেহটী পরিচয় পাওয়া যায়নি৷ ঝুলন্ত অবস্থায় পচা গলা মৃত দেহ উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্য এলাকায়৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *