নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৫ আগস্ট৷৷ আগরতলায় উড়ালপুল নির্মাণে দূর্নীতির অভিযোগকে ঘিরে প্রাক্তন পূর্তমন্ত্রী তথা বর্তমান বিধায়ক বাদল চৌধুরীকে ক্রাইম ব্রাঞ্চ জেরা করেছে৷ সোমবার সকাল ১১টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫-টা পর্যন্ত টানা সাড়ে ছয় ঘণ্টা ক্রাইম ব্রাঞ্চের ডিআইজি আরজিকে রাও-সহ পুলিশের পদস্থ আধিকারিকরা তাঁকে বিভিন্ন বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন৷ ক্রাইম ব্রাঞ্চ থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বাদলবাবু বলেন, উড়ালপুল নিয়ে বিভিন্ন বিষয়ে তাঁরা জানতে চেয়েছেন৷ তাঁদের সহযোগিতা করেছি৷ তবে, উড়ালপুল নির্মাণ নিয়ে তিনিও যে সন্দেহের তালিকায় রয়েছেন তা আজ স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে৷
বামফ্রন্ট জমানায় ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় উড়াল পুলের নির্মাণকাজ শুরু হয়৷ পূর্বতন সরকারের আমলেই ওই উড়ালপুলের অধিকাংশ নির্মাণ সমাপ্ত হয়েছে৷ তবে, উড়ালপুলের নির্মাণ কাজ নিয়ে শুরু থেকেই অভিযোগ উঠেছিল৷ বিশেষ করে নির্মাণকারী সংস্থা বাছাই নিয়েই বাম সরকার সমালোচিত হয়েছিল৷ ওই সময় পূর্তমন্ত্রী ছিলেন বাদল চৌধুরী৷ ফলে, দুর্নীতি ইস্যুতে তাঁকে ক্রাইম ব্রাঞ্চের জেরা করা স্বাভাবিক বলেই মনে হচ্ছে৷
এদিন বিকেল সাড়ে ৫-টা নাগাদ ক্রাইম ব্রাঞ্চ থেকে বেরিয়ে আসার সময় তিনি সংবাদ মাধ্যমকে জানান, উড়ালপুল নির্মাণ সংক্রান্ত বিষয়ে তাঁর কাছে ক্রাইম ব্রাঞ্চের আধিকারিকরা কিছু তথ্য জানতে চেয়েছেন এবং তিনি তাঁদের সমস্ত প্রশ্ণের জবাব দিয়েছেন৷
প্রাক্তন মন্ত্রী বলেন, সিএসআই এই উড়ালপুল নির্মাণ কাজের পরীক্ষা করেছে এবং ত্রিপুরায় সরকার পরিবর্তন হওয়ার পরও আবার পরীক্ষা করানো হয়েছে৷ তাঁর দাবি, ত্রিপুরার ইঞ্জিনিয়ারদের অক্লান্ত পরিশ্রমে রাজ্যের উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে৷ এখন তাঁদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ খুবই দুঃখজনক, মন্তব্য করেন তিনি৷
তাঁর কথায়, রাজ্যের অনেক অবসরপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ারকে ডেকে আনা হচ্ছে৷ অথচ, রাজ্যের ও বহিঃরাজ্যের বিশেষজ্ঞ সংস্থা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছে ওই নির্মাণ কাজের৷ তাঁর দাবি, কাজ শুরুর সময় যে পরিমাণ অর্থের বরাদ্দ করা হয়েছিল পরবর্তী সময় জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে, তাই টাকাবেশি লাগা স্বাভাবিক৷ কিন্তু, তাতে কোনওরকম দুর্নীতি হয়েছে বলে আমি মনে করিনা, বলেন তিনি৷ তাঁর দাবি, পুলিশ কর্মকর্তাদের বলেছি রাজ্য ও বহিঃরাজ্যের সংস্থার অনুমোদন মিলেছে উড়ালপুল চালু করার ক্ষেত্রে৷
এদিকে, তাঁর বিরুদ্ধে পূর্ত দফতরের বিভিন্ন ক্ষেত্রে ৮০০ কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ সম্পর্কে বলেন, এই বিষয়টি সম্পূর্ণ আলাদা৷ উড়াল পুলের সাথে এর কোনও যোগ নেই৷ তিনি বলেন, অডিট চলছে, প্রয়োজনে পরে জানাবেন৷ প্রসঙ্গত, বাদল চৌধুরী দীর্ঘ ২০ বছর টানা মন্ত্রী ছিলেন৷ তিনি পূর্তমন্ত্রী থাকাকালীন সময়ে ২০১৫ সালের ২৭ মে রাজ্যের প্রথম উড়ালপুলের কাজ শুরু হয়েছিল৷