নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২০ জুলাই৷৷ পঞ্চায়েত নির্বাচনকে ঘিরে ত্রিপুরায় নিরাপত্তা ব্যবস্থায় কোনও ফাঁক রাখা হবে না, দাবি করেছে রাজ্য পুলিশ৷ অধিকাংশ আসনেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজেপি জয়ী হয়েছে৷ তাই ১,৮৪৮টি বুথে নির্বাচনে পুলিশ, টিএসআর এবং হোমগার্ড নিয়োজিত থাকবেন৷ শুধু তা-ই নয়, নির্বাচনী ক্ষেত্রে নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে ১৭ কোম্পানি বিএসএফ ও সিআরপিএফ মোতায়েন করা হবে৷
এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে ত্রিপুরা পুলিশের ডিআইজি সাউদার্ন রেঞ্জ অরিন্দম নাথ জানিয়েছেন, ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচনে নিরাপত্তায় ৬,৫৪৫ জন টিএসআর মোতায়েন করা হবে৷ এছাড়া অতিরিক্ত ৩ হাজার পুলিশও মোতায়েন থাকবে৷ পাশাপাশি ৪০০ হোমগার্ডও ভোট নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবেন৷ তারা ভোটকেন্দ্র এবং স্ট্রংরুমের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন৷ তিনি আরও জানান, বিএসএফ ও সিআরপিএফ ভোট কেন্দ্র এবং স্ট্রংরুমের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন না৷ তারা নির্বাচনী ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণে রাখার দায়িত্বে থাকবেন৷
এদিন অরিন্দম নাথ জানান, ২৭ জুলাই সকাল ৭-টা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হবে এবং বিকেল ৫-টা পর্যন্ত চলবে ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়া৷ তাঁর কথায়, ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে সশস্ত্র টিএসআর জওয়ানরা মোতায়েন থাকবেন৷ তাদের সহযোগিতার জন্য পুলিশ কর্মীরাও নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবেন৷ এদিন তিনি জানান, ভোটগ্রহণ কেন্দ্রগুলিকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে৷ স্বাভাবিক ও স্পর্শকাতর ভোট গ্রহণ কেন্দ্র হিসেবে চিহ্ণিত করা হয়েছে৷ তাঁর কথায়, ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচনে ৬৭৬টি স্বাভাবিক এবং ১,১৭২টি স্পর্শকাতর ভোটগ্রহণ কেন্দ্র রয়েছে৷ সে মোতাবেক নিরাপত্তা কর্মীও মোতায়েন করা হবে৷
তিনি জানান, স্পর্শকাতর ভোটগ্রহণ কেন্দ্রগুলিতে প্রতি বুথে ৪ জন সশস্ত্র টিএসআর জওয়ান এবং স্বাভাবিক ভোটগ্রহণ কেন্দ্রগুলিতে প্রতি বুথে ৩ জন সশস্ত্র টিএসআর জওয়ান মোতায়েন থাকবেন৷ তাছাড়া নির্বাচনের দিন ১৩৮টি পুলিশ মোবাইল নির্বাচনী ক্ষেত্রে টহল দেবে৷ তিনি জানান, প্রত্যেক জেলার ৬০ জন টিএসআর মোতায়েন করা হবে৷
তিনি বলেন, কেবলমাত্র ধলাই জেলায় ২-টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে৷ এছাড়া উত্তর ত্রিপুরা জেলায় ২৭৫টি, ঊনকোটি জেলায় ২৩৯টি, খোয়াই জেলায় ১৪১টি, সিপাহিজলা জেলায় ২১৩টি, গোমতি জেলায় ২৬৮টি, দক্ষিণ জেলায় ৩৬৭টি এবং পশ্চিম জেলায় ৩৪৩টি আসনে ভোট গ্রহণ করা হবে৷
এদিকে, গত ৮ জুলাই পর্যন্ত ত্রিপুরায় ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে হিংসার ঘটনা ঘটেছে৷ তাতে ১৭টি মামলা দায়ের করা হয়েছে৷ তিনি জানান, বিজেপি ৬টি, সিপিএম ৪টি, কংগ্রেস ৪টি এবং অন্যান্য ৩টি মামলা দায়ের করেছে৷ তাছাড়া, নির্বাচনকে ঘিরে বিভিন্ন মামলায় এখন পর্যন্ত ২১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে৷ তিনি জানান, সিপিএমের ৬ জন, বিজেপির ১০ জন এবং কংগ্রেসের ৫ জনকে হিংসার সাথে জড়িত থাকার দায়ে গ্রেফতার করা হয়েছে৷
তিনি দাবি করেন, ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচন শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সম্পন্ন করার দৃঢ় সংকল্প নিয়েছে ত্রিপুরা পুলিশ৷ পাশাপাশি তিনি সমস্ত ভোটারদের ভয়মুক্ত পরিবেশে ভোটাধিকার প্রয়োগ করার আহ্বান রেখেছেন৷