নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১২ জুলাই ৷৷ ভারী বর্ষণে ত্রিপুরায় জনজীবনে বিরাট প্রভাব ফেলেছে৷ বিশেষ করে আগরতলার রাস্তাঘাট জলমগ্ণ হয়ে পড়ায় নিত্যযাত্রীদের নাকাল হতে হয়েছে৷ এদিকে, নদীর চরে জ্বালানি কাঠ সংগ্রহ করতে গিয়ে এক ব্যক্তি নিখোঁজ হয়েছেন৷ তাছাড়া, তেলিয়ামুড়ায় একটি শরণার্থী শিবির খোলা হয়েছে৷ সেখানে ১০ পরিবার আশ্রয় নিয়েছেন৷
আজ সকাল থেকে ভারী বর্ষণে ত্রিপুরায় বিভিন্ন নদীর জলস্তর বাড়তে শুরু হয়েছিল৷ তবে, দুপুরের পর বৃষ্টিপাত কমে যাওয়ায় নদীর জলস্তরও নামতে শুরু করেছে৷ রাজ্য দুযর্োগ মোকাবিলা দফতরের আধিকারিক শরৎ দাস জানিয়েছেন, ধলাই এবং হাওড়া নদীর জলস্তর এখনও বিপদসীমার কাছাকাছি বইছে৷ তবে, ধারণা করা হচ্ছে সময় গড়িয়ে যাওয়ার সাথে সাথে জলস্তর নামতে শুরু করবে৷
এদিকে, বিমানবন্দরে অবস্থিত আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, আজ দিনের বেলায় শুধু আগরতলায় ১৯ এমএম বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে৷ রাতেও ২ এমএম বৃষ্টিপাত হতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে৷ দফতরের দাবি, সারা রাজ্যে আজ বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত ৪০.৬ এমএম বৃষ্টিপাত হয়েছে৷ এছাড়া, এই মরশুমে এখন পর্যন্ত ৫৬৫.১ এমএম বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে৷ আগামীকালও সারা রাজ্যে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে৷ আবহাওয়া দফতরের দাবি অনুযায়ী, আজ বৃষ্টিপাতের সাথে ঝড়ো বাতাস বয়ে যায়নি৷ তাই, দুযর্োগ মারাত্মক আকার ধারণ করেনি৷
অন্যদিকে, দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলার শান্তিরবাজারে মুহুরি নদীর চরে লাকড়ি সংগ্রহে গিয়ে এক ব্যক্তি নিখোঁজ হয়েছেন৷ তাঁর নাম সুবীর সেন (৩৫)৷ খবর পেয়ে এনডিআরএফ-এর জওয়ানরা নদীতে তল্লাশি শুরু করেছেন৷ ধারণা করা হচ্ছে, লাকড়ি সংগ্রহে গিয়ে হয়তো তিনি পা পিছলে নদীতে পড়েন৷ নদীর জলস্রোত বেশি হওয়ায় তিনি তলিয়ে গিয়েছেন৷
আজ ভারী বর্ষণে রাজধানী আগরতলার অধিকাংশ রাস্তা জলমগ্ণ হয়ে পড়েছে৷ সন্ধ্যা পর্যন্ত অনেক রাস্তার জল নামেনি৷ তাতে যাতায়াতে নিত্যযাত্রীদের ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছে৷ জল নিকাশি ব্যবস্থায় ত্রুটির কারণে আজ কিছু রাস্তা জলমগ্ণ হয়েছে, যেখানে আগে কখনও জল জমেনি৷
এদিকে, রাজ্যে লাগাতর বৃষ্টিপাতে উৎপন্ন পরিস্থিতি মোকাবেলায় সমস্ত আধিকারীকদের সতর্ক করলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব৷ মুখ্যসচিব ও প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারীকদের মাধ্যমে তিনি পরিস্থিতির উপর নজর রেখে চলেছেন৷ মুখ্যমন্ত্রী আজ মুখ্যসচিব ইউ ভেঙ্কটেশ্বরলুকে জেলা ও ব্লক স্তরে সমস্ত আধিকারীকদের সতর্ক থাকার জন্য নির্দেশ জারি করতে বলেছেন৷ সেই মোতাবেক মুখ্যসচিব আজ মুখ্যমন্ত্রীর সতর্ক বার্তা জেলা ও ব্লক স্তরের সমস্ত আধিকারীকদের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন৷
এদিকে, দূর্যোগ মোকাবিলা দপ্তর ক্রমগাত জেলা ও মহকুমা স্তরের শীর্ষ আধিকারীকদের সাথে লাগাতর বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজ খবর রাখছে এবং দূর্যোগ মোকাবেলায় প্রস্তুত থাকতে বলেছে৷