নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৯ জুন৷৷ শিশুকন্যা ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত সৌরভ নাথ এবং দীবাকর দাসকে তিন দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠিয়েছে আদালত৷ মঙ্গলবার ধর্মনগরের হাফলংছড়ার কারগিল টিলায় ছয় বছরের শিশুকে ধর্ষণ এবং নির্মমভাবে খুনের দায়ে পুলিশ গতকাল রাতেই সৌরভ নাথ (১৯) এবং দীবাকর দাস (২০)-কে গ্রেফতার করেছে৷ পুলিশ জানিয়েছে, ওই শিশুটি পরিবারের সাথে সৌরভ নাথের বাড়িতে ভাড়া থাকত৷ ওই ঘটনায় একটি সুকটি ব্যবহৃত হয়েছিল৷ সুকটিটিও পুলিশ বাজেয়াপ্ত করেছে৷
ধর্মনগর থানার পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত দুই যুবকের বিরুদ্ধে ভারতীয় ফৌজদারি দণ্ডবিধির ৩০২ এবং ২০১ ধারায় মামলা রুজু হয়েছে৷ আজ তাদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছিল৷ মামলার তদন্তকারী অফিসার বলেন, আদালতে ধৃত দুই জনের ৭ দিনের পুলিশ হেফাজত চাওয়া হয়েছিল৷ কিন্তু, আদালত ৩ দিনের পুলিশ হেফাজত মঞ্জুর করেছে৷
তিনি জানান, ইতিমধ্যে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়ে গিয়েছে৷ ওই ঘটনা সংগঠিত করার জন্য তারা একটি সুকটি ব্যবহার করেছিল, তা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে৷ এদিকে, আজ উত্তেজিত জনতা ধর্মনগরের পদ্মপুরে অবস্থিত অভিযুক্ত সৌরভ দাসের বাড়িতে চড়াও হন৷ সেখানে তার বাড়ির সমস্ত আসবাবপত্র পুড়িয়ে দেন তাঁরা৷ খবর পেয়ে পুলিশ ও দমকল বাহিনী সময়মতো পৌঁছে যাওয়ায় পুরো বাড়িটি রক্ষা পেয়েছে৷
উত্তর জেলার পুলিশ সুপার ভানুপদ চক্রবর্তী বুধবার জানান, ধৃতদের নাম দীবাকর দাস ও সৌরভ নাথ৷ গতকাল রাতেই তাদের নিজের নিজের বাড়ি থেকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে৷ আজ দুই অভিযুক্তকে আদালতে তুলে নিজেদের হেফাজতে চাইবে পুলিশ, জানিয়েছেন পুলিশ সুপার চক্রবর্তী৷ জঘন্য এই ঘটনার সঙ্গে আর কেউ জড়িত আছে কিনা তা জানতে পুলিশ তাদের রিমান্ডের আবেদন জানাবে৷ পুলিশ সুপার জানান, দুই অভিযুক্তের বাড়ি ধর্মনগরের পদ্মপুরে নিহত শিশুকন্যার ভাড়াবাড়ির পাশে৷
এদিকে ত্রিপুরা প্রদেশ বিজেপি-র মহিলা মোর্চার সহসভানেত্রী শচিরানি ত্রিপুরা, দলের প্রদেশ সাধারণ সম্পাদিকা রত্না সিনহা-সহ জেলা ও মহকুমা কমিটির নেত্রীরা আজ ধর্মনগরে এসডিপিও রাজীব সূত্রধরের সঙ্গে দেখা করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন৷ এক ফুটফুটে বাচ্চা মেয়ের ওপর এমন অমানুষিক নির্যাতন ও হত্যার ঘটনায় গোটা রাজ্য জুড়ে ধিক্কার ও নিন্দা জানানো হচ্ছে৷ সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমেও এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে মতামত ব্যক্ত করেছেন অনেকে৷ কেউ কেউ অভিযুক্তদের ফাঁসির সাজা দাবি করছেন৷
মৃত শিশু ঝুমাদের মূল বাড়ি কৈলাসহর থানাধীন মূর্তিছড়া এলাকায়৷ তার বাবা পরমেশ্বর তাঁতি কর্মসূত্রে তার মা ও মেয়ে ঝুমাকে নিয়ে ধর্মনগরের পদ্মপুর এলাকার এক বাড়িতে ভাড়া থাকতেন৷ সোমবার বিকেল থেকে সে নিখোঁজ ছিল৷ এর পর গতকাল মঙ্গলবার ধর্মনগর মহকুমার হাফলংছড়া এলাকার কারগিলটিলা এলাকায় তার লাশ উদ্ধার হয়েছিল৷