নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৩০ এপ্রিল৷৷ আগরতলা থেকে বেঙ্গালুরুগামী বিলাসবহুল হামসফর এক্সপ্রেস ট্রেনটি মঙ্গলবার সকালে যাত্রী নিয়ে নিজ গন্তব্যস্থলে যাত্রার পথে এক ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে অসম ত্রিপুরা রাজ্য সীমান্তের করিমগঞ্জ জেলার বাজারিছড়া থানাধীন চোরাইবাড়ি এলাকার তিলভূম প্লেটফর্মের লাগোয়া সারজুল গ্রামে৷এতে কোনও হতাহতের খবর না ঘটলেও এ ঘটনায় রেল কর্তৃপক্ষের খামখেয়ালিপনার নানা অভিযোগ প্রকাশ্য বেরিয়ে এসেছে৷

বিকেল পৌনে তিনটে নাগাদ চোরাইবাড়ি স্টেশন থেকে গন্তব্যস্থলের উদ্দেশে ফের যাত্রা করেছে দুর্ঘটনাগ্রস্ত আগরতলা- বেঙ্গালুরু হামসফর এক্সপ্রেস৷ দুর্ঘটনাস্থল সারাই করে দুপুর ১২.১০ মিনিটে রেলওয়ে ট্র্যাককে ট্রেন চলাচলের জন্য সবুজ সংকেত দেন কর্তব্যরত ইঞ্জিনিয়াররা৷ এর পর প্রথমে কাঞ্চনজঙ্ঘা এবং পরে বেঙ্গালুরুগামী হামসফর এক্সপ্রেস যাত্রা করে৷
মঙ্গলবার সকাল প্রায় ৭.৫২ মিনিট নাগাদ ত্রিপুরা সীমান্তবর্তী অসমের চোরাইবাড়ি এবং তিলভূম স্টেশনের মধ্যবর্তী স্থানে যাত্রীবাহী ১২৫০৪ হামসফর এক্সপ্রেসের একটি ইঞ্জিনের দুটি চাকা লাইনচ্যুত হয়েছিল৷ এই দুর্ঘটনায় যাত্রীরা সুরক্ষিত থাকলেও ঘটনার জন্য রেল বিভাগের বিরুদ্ধে খামখেয়ালিপনার অভিযোগও ইতিমধ্যে উঠতে শুরু করেছে৷ তবে অভিযোগের সত্যতা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে বদরপুর রেল দফতরের সংশ্লিষ্ট আধিকারিক জানিয়েছেন৷প্রসঙ্গত, ট্রেনের অগ্রভাগে দুটি ইঞ্জিন ছিল৷আজ ভোর প্রায় সাড়ে পাঁচটা নাগাদ আগরতলা থেকে প্রায় দেড় হাজার যাত্রী নিয়ে বেঙ্গালুরুগামী এই হামসফর এক্সপ্রেসটি ছেড়েছিল৷ প্রায় আড়াই ঘণ্টা সফর করে চোরাইবাড়ি ছেড়ে তিলভূম স্টেশনে পৌঁছনোর আগে সারজুল গ্রাম এলাকায় ট্রেনের একটি ইঞ্জিনের দুটি চাকা লাইনচ্যুত হয়ে যায়৷ দুর্ঘটনার পর খবর পেয়ে বদরপুর থেকে রিলিফ টিম নিয়ে ছুঁটে আসেন রেলের এরিয়া ম্যানেজার এস উমেশ এবং চোরাইবাড়ি (অসম) পুলিশ ওয়াচপোস্টের ইনচার্জ সুপ্রিয় ভট্টাচার্য তাঁর বাহিনী৷ ক্রেন এনে হামসফরের লাইনচ্যুত ইঞ্জিনকে রেলের ট্র্যাকে তুলে ফের চোরাইবাড়ি স্টেশনে নিয়ে রাখা হয়৷ এর পর শুরু লাইন মেরামতের কাজ৷ জানা গেছে, রেল লাইনে সংযুক্ত জয়েস্ট থেকে জয়েন্ট পিন খুলে যাওয়ায় ট্রেনের চাকা লাইনচ্যুত হয়েছে৷পরে দুপুর ১২.২০-এ রেলওয়ে ট্র্যাক সারাই করে সোয়া দুটো নাগাদ প্রথমে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস এবং পরে প্রায় সাত ঘণ্টা বিলম্বে দুর্ঘটনাগ্রস্ত হামসফর ট্রেনকে বিকেল পৌনে তিনটা নাগাদ চোরাইবাড়ি থেকে তার গন্তব্যস্থলের উদ্দেশে ছাড়া হয়৷হামসফরের বহু যাত্রী বলেছেন, কেবলমাত্র ট্রেন চালকের বুদ্ধিমত্তার জোরে আজ বড়সড় বিপদ থেকে তাঁরা রক্ষা পেয়েছেন৷ ঘটনা সম্পর্কে রেলের কোনও আধিকারিক বা কর্মচারী মুখ না খুললেও ওয়াকিবহাল মহলের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে এই রুটে রেলওয়ে ট্র্যাকেটর নিয়মিত পরিচর্যা হয়নি৷ রেল লাইন ঠিকঠাক আছে কিনা, তা দেখার জন্য মাস কয়েক কাউকে দেখা যায়নি৷ ফলে রেল লাইনে সংযুক্ত জয়েস্ট থেকে জয়েন্ট পিন খুলে আজকের দুর্ঘটনাটি ঘটেছে৷