মোরাবাদ, ২৬ মার্চ (হি.স.) : কংগ্রেস সহ বিরোধীদের এক হাত নিলেন অমিত শাহ। কংগ্রেসের নোটবাতিল সংক্রান্ত স্টিং অপারেশনকে রসিকতা বলে উড়িয়ে দিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি।

ভারতীয় জনতা পার্টির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের মোরাদাবাদের (উত্তরপ্রদেশ) বিশাল ‘বিজয় সঙ্কল্প’ যাত্রায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বেড়ে চলা জনপ্রিয়তা এবং নির্বাচনে নিশ্চিত পরাজয় বুঝতে পেরে ভয় পেয়ে বাধ্য হয়েই বিরোধীরা তথাকথিত মহাজোট গড়ে তুলেছে। যাদের দরকার তারা জোট বাঁধতে পারেন, কিন্তু উত্তরপ্রদেশের জনতা ৮০টির মধ্যে ৭৪টি আসনে পদ্ম ফোটানোর দৃঢ় সঙ্কল্প গ্রহণ করেছে।
পন্ডিত জওহরলাল নেহেরু, ইন্দিরা গান্ধী এবং রাজীব গান্ধী সবাই ‘গরিবি হটাও’ বলে স্লোগান দিয়ে রাজনীতি করেছেন। কিন্তু গরিবদের ক্ষমতায়নের পথে যেতে দেননি। এখন রাহুল গান্ধী বলছেন গরিবি হটাও। রাহুল গান্ধী এত বেশি মিথ্যা কথা বলেছেন যে দেশবাসী তাঁর প্রতি বিশ্বাস করাটা বন্ধ করে দিয়েছে। ১০ দিনের মধ্যে ছত্তিশগড়, মধ্যপ্রদেশ এবং রাজস্থানের সমস্ত কৃষকদের ঋণ মকুব করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন রাহুল গান্ধী। কিন্তু এখনও পর্যন্ত ১০ শতাংশ কৃষকদেরও কৃষি ঋণ মকুব করে দেওয়া হয়নি। পঞ্জাব, কর্ণাটকেও একই অবস্থা। এমন পরিস্থিতিতে জনতা রাহুল গান্ধীর প্রতি কি করে ভরসা রাখবে?
তিনি আরও বলেন, দেশের ৫০ কোটি গরিব মানুষদের উত্থানের জন্য মোদী সরকার দিনরাত কাজ করে চলেছেন। দেশ থেকে দারিদ্রতাকে কেউ যদি নির্মূল করতে পারেন তবে তিনি হলেন আমাদের লোকপ্রিয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। স্বাধীনতার পর প্রথমবারের জন্য দেশের গ্রাম, গরিব, কৃষক, দলিত, অনগ্রসর, শোষিতশ্রেণী মানুষেরা উপলব্ধি করেছে যে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন ভারতীয় জনতা পার্টির সরকার তাদের নিজেদের সরকার। যখন সন্ত্রাসবাদীদের ঘাঁটিগুলিকে ধ্বংস করার পর দেশের মানুষেরা আনন্দে মেতে উঠেছিল, তখন দেশের বিরোধী দলগুলি পাকিস্তানের মতো শোকপ্রকাশ করছিল।
রাহুল গান্ধীর গুরু স্যাম পিত্রোদা বলেন, সন্ত্রাসবাদীদের ওপর বোমা ফেলাটা ঠিক নয়, সন্ত্রাসবাদীদের সঙ্গে কথা বলা প্রয়োজন। পিত্রোদাজি আপনি এই পরামর্শ রাহুল গান্ধীকেই দিন। এটা মোদী সরকার যেখানে শত্রুরা ভারতীয় সেনাদের ওপর, আমাদের জনতার ওপর গুলি চালালে তার যোগ্য জবাব গুলি দিয়ে দেওয়া হয়।
অখিলেশ যাদব, মায়াবতী, মমতা ব্যানার্জী, রাহুল গান্ধী বিরুদ্ধে কটাক্ষ করে অমিত শাহ বলেন, অখিলেশ যাদব, মায়াবতী, মমতা ব্যানার্জী, রাহুল গান্ধী – সবাই এয়ার-স্ট্রাইকের প্রমাণ চাইছে। আজও কংগ্রেস নেতা মণীশ তিওয়ারি বায়ুসেনা হামলা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। রাহুল গান্ধী, সেনার অপমান দেশ আর সহ্য করবে না। রাহুল গান্ধী, যদি আপনি নিজের দেশের সেনাদের অপমান করা বন্ধ না করেন তাহলে দেশের মানুষ আপনাকে যথার্থ শিক্ষা দেবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ছাড়া সন্ত্রাসবাদ এবং পাকিস্তানকে যথাযোগ্য জবাব আর কেউ ফিরিয়ে দিতে পারে না। ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচন দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে যেখানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে আরও একটি এনডিএ মহাজোট হবে। অন্যদিকে, রাহুল গান্ধী ও অন্যান্য এবং পিসি-ভাইপোর মহাজোট, যার না কোনও নেতৃত্ব আছে, না কোনও নীতি আছে, আর না কোনও সিদ্ধান্ত আছে। উত্তরপ্রদেশে ১৫ বছর ধরে সপা-বিএসপির সরকার রাজ্যকে ছাড়খার করে দিয়েছে। সব জায়গায় শুধু অপরাধী এবং ভ্রষ্টাচারীদের তান্ডব চলেছে। কিন্তু, উত্তরপ্রদেশে ভারতীয় জনতা পার্টির নেতৃত্বে যোগী আদিত্যনাথের সরকার রাজ্যকে অপরাধী, ভ্রষ্টাচারী এবং জমি মাফিয়াদের হাত থেকে মুক্ত করার কাজ করেছে। দেশের বিকাশ এবং দেশের সুরক্ষা ভারতীয় জনতা পার্টির পরিচয়। আমাদের কাছে এটা সৌভাগ্যের যে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হাতে দেশের দায়িত্ব রয়েছে যিনি কঠোর পরিশ্রমী এবং গরিবদের জীবনে পরিবর্তন ও ভালো দিন আনতে দৃঢ়সংকল্প।
কংগ্রেসের নোটবাতিল সংক্রান্ত স্টিং অপারেশনকে রসিকতা বলে উড়িয়ে দিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি।
মঙ্গলবার ট্যুইট করে অরুণ জেটলি লেখেন, প্রত্যেক নির্বাচনে কিছু রসিকতাময় বিরতির প্রয়োজন হয়ে পড়ে। লন্ডনে ইভিএম ব্যর্থতার পর এখন আর একটি জিনিস তুলে ধরা হয়েছে। তুলে ধরার মতো আসল কোনও বিষয় ইউপিএ-র হাতে নেই। শুধুমাত্র ভুয়ো জিনিসের প্রতি আস্থাশীল তারা। নিজেদের ‘ভুয়ো মিছিল’ চালিয়ে যাচ্ছে ইউপিএ। বিএসওয়াই ডায়রি, ভুয়ো স্টিং-এর গল্প তুলে ধরা হয়েছে। যা পুরোপুরি মিথ্যা।
একই দাবি করেছেন কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী প্রকাশ জাভরেকর বলেন, ক্ষমতায় আসার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে কংগ্রেস। আর তাই এনডিএ-র বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ এনেছে। পাশাপাশি তিনি বলেন কংগ্রেস যে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে তা কোনওদিনও পূরণ করা সম্ভব নয়। অশালীন ভাষায় আক্রমণ করছে কংগ্রেস। কংগ্রেস বুঝে গিয়েছে যে তারা আর নির্বাচনে জিততে পারবে না। তাই ভীত হয়েই এমন মরিয়া হয়ে উঠেছেন তারা। প্রধানমন্ত্রীকে লক্ষ্য করে অশালীন ভাষা প্রয়োগ করেছে কংগ্রেস। পাশাপাশি মিথ্যও প্রচার চালাচ্ছে তারা।
এদিন কংগ্রেস নেতা কপিল সিব্বল এবং গুলাম নবি আজাদ একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে, যেখানে তারা দাবি করেছে ২০১৬ নোটিবন্দি পরেও ঘুষের বিনিময়ে পুরনো নোট ৪০ শতাংশ কমিশের বিনিময় বদল করার প্রস্তাব দেয় বিজেপি কর্মীরা। ঘটনাটি আহমেদাবাদে ঘটেছে বলে দাবি করেছে তারা।