পুরনো ঢাকায় রাসায়নিক গুদাম উচ্ছেদে বাধা ব্যবসায়ীদের

ঢাকা, ২ মার্চ (হি. স.) : চকবাজারের চুড়িহাট্টায় বিধ্বংসী আগুনে বহু প্রাণহানির পর পুরনো ঢাকায় রাসায়নিকের গুদাম উচ্ছেদ অভিযান চলছে। তারই অংশ হিসেবে শনিবার সকালে বকশিবাজারে জয়নাগ রোডের একটি আবাসিক ভবনে রাসায়নিক গুদাম খুঁজে পায় পুলিশ। এরপর ভবনটির বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার সময় এলাকার ব্যবসায়ীরা মিলিত হয়ে বাধা দিলে অভিযান স্থগিত করতে বাধ্য হয় টাস্কফোর্স। খবর পেয়েই ছুটে আসেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাইদ খোকন। তার নির্দেশে ফের অভিযান শুরু হয়। মেয়র বৈঠক করেন এলাকার প্লাস্টিক ও রাসায়নিক ব্যবসায়ীদের সাথে। তিনি বলেন, \”আমরা কোনও গুদামের জিনিসপত্র বাজেয়াপ্ত করছি না। কাউকে শাস্তিও দিচ্ছি না। আমরা কেবল হাজার হাজার মানুষের জীবন বাঁচানোর চেষ্টা করছি। এসব গুদামের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হচ্ছে।\”


পরে মেয়র সাঈদ খোকন সাংবাদিকদের বলেন, \”একদল অসাধু ব্যবসায়ী অভিযানে বাধা দিয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। টাস্কফোর্স আজ তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে গুদাম মালিকদের বাধার মুখে পড়ে। যেকোনও মূল্যে নগর কর্তৃপক্ষ তার নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। এতে কাউকে একবিন্দু ছাড় দেওয়া হবে না।\” মেয়র আরও বলেন, \”৯ বছর তারা সময় পেয়েছে আর কত সময় চান তাঁরা? আমরা তো সেখানে কারও জিনিসপত্র রাস্তায় ছুঁড়ে ফেলে দিচ্ছি না। তাদেরকে সেখান থেকে নির্ধারিত স্থানে সরিয়ে দিচ্ছি।\” এদিকে চকবাজারের চুড়িহাট্টায় অগ্নিকান্ডে আরেকজনের মৃত্যু হয়েছে। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার সকাল ৮টা ২০ মিনিটে জাকির হোসেন মারা যান।

তার শরীরের ৩৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। এ নিয়ে চকবাজারে নিহতের সংখ্যা দাঁড়াল সরকারিভাবে ৭১ জন। এখনও কয়েকজনের সন্ধান মেলেনি। গত ২০ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১০টার দিকে পুরোনো ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টা মসজিদের সামনের সড়কে একটি পিকআপ ট্রাকে সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। মুহূর্তেই সেই ট্রাকের আগুন পাশের কেমিক্যাল গুদামে ছড়িয়ে গেলে বড় ধরনের বিস্ফোরণ ঘটে। এরপর সেই আগুন আশেপাশের ভবনে ছড়িয়ে পড়ে। আগুনে পুড়ে নারী ও শিশুসহ ঘটনাস্থলে কমপক্ষে ৬৭ ব্যক্তি নিহত হন। চকবাজার অগ্নিকান্ডে দগ্ধদের মধ্যে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন ছিলেন ১১ জন। এর মধ্যে বার্ন ইউনিটে ৯ জন ও ক্যাজুয়ালটি বিভাগে দুজন। বার্ন ইউনিটে থাকা ৯ জনের মধ্যে ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে দুজন এবং শুক্রবার ভোরে একজন মারা যান। দগ্ধ চতুর্থ জনের মৃত্যু ঘটল এদিন সকালে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *