ঘুরে দাঁড়ানোর দাওয়াই সিপিআইএম রাজ্য কমিটির বৈঠকে

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৫ নভেম্বর৷৷ আগরতলার টাউন হলে রবিবার থেকে শুরু হল সিপিএম দুইদিনব্যাপী ২২তম রাজ্য কমিটির সম্মেলন৷ এই সম্মেলনে সিপিএম রাজ্য কমিটির নেতৃত্বরা এবং কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃত্ব সহ পলিটব্যুরোর সদস্যরা কিভাবে আগামীদিনে দলকে সাংগঠননিক দিক দিয়ে শক্তিশালী করে তোলা যায় সেই দাওয়াইয়ের সন্ধানে জোর আলোচনা হয়েছে৷ একই সাথে রাজ্যের বর্তমান রাজনৈতিক পিরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে৷

রবিবার সকাল ১১টায় দলীয় পতাকা উত্তোলন ও শহিদ স্মরণের মধ্য দিয়ে টাউন হল এ শুরু হয়েছে পার্টির রাজ্য সম্মেলন৷ আগের মতো চাকচিক্য না থাকলেও সম্মেলন যোগ দিয়েছেন রাজ্যের সব জায়গায় প্রতিনিধিরা৷ সম্মেলন শুরু হওয়ার আগে দলীয় পতাকা উত্তোলন করেছেন সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি৷ জানা গেছে, দুদিন ব্যাপী রাজ্য সম্মেলনে রাজ্যের প্রায় ৩০০ প্রতিনিধি যোগ দিয়েছেন৷ আজকের সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন প্রকাশ কারাত, বৃন্দা কারাত, মানিক সরকার, বিমান বসু সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দরা৷ জানা গেছে, দুই দিনের এই রাজ্য সম্মেলনে রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হবে৷ বর্তমানে রাজ্যের পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে ঠিক হয়েছে, এ বছর প্রকাশ্য সমাবেশ হবে না৷ আগামী ২৬ নভেম্বর রাজ্য সম্মেলনের শেষ হবে৷

এদিকে, এদিনের সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সিপিএম রাজ্য সম্পাদক বিজন ধর সিপিএমের হাত শক্তিশালী করতে দলীয় কর্মীদের আরও বেশী সক্রিয় অংশগ্রহণের উপর গুরুত্বারোপ করেছেন৷ অন্যদিকে, দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি কেন্দ্রের বর্তমান সরকারের বিভিন্ন নীতির তীব্র সমালোচনা করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ হচ্ছে যথাক্রমে দুর্যোধন ও দুশাসন৷ গোটা দেশকে এক চরম অস্থিরতার মধ্যে ফেলে দিয়েছে৷

অন্যদিকে, সিপিএম রাজ্য কমিটির সম্পাদক রাজনৈতিক – সাংগঠনিক যে রিপোর্ট এই সম্মেলনে উত্থাপন করেন তাতে উল্লেখ করা হয়েছে, ত্রিপুরা, পশ্চিমবঙ্গ, কেরালায় বামপন্থীরা বিশেষ করে সিপিএম আরএসএস ও বিজেপির আক্রমণের শিকারে পরিণত হয়েছে৷ পার্টির গণভিত্তি দুর্বল করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে৷ মোদি সরকারের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী তৈরী হচ্ছে ব্যাপক জনমত ও প্রতিবাদ৷ বিগত বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি তুলেছিল নানা মিথ্যা ও চমকপ্রদ স্লোগান৷ বইয়ে দিয়েছিল বিপুল অর্থ ও প্রতিশ্রুতির বন্যা৷ একাংশ মিডিয়া কিনে নিয়ে সিপিএম ও বামফ্রন্ট সরকারের বিরুদ্ধে ছড়িয়েছিল বল্গাহীন কুৎসা৷ তুইপ্রাল্যান্ডের স্লোগান তুলে উপজাতি অংশের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছিল বিজেপির জোট শরিক আইপিএফটি৷ এসব কারণে বিভ্রান্ত হয়েছিলেন রাজ্যের একাংশ মানুষ৷

সিপিএম রাজ্য সম্মেলনে মূলত কিভাবে দল আগামীদিনে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে সেই পথ খোঁজার চেষ্টা করা হয়েছে৷ জানা গিয়েছে, আগামীকাল এই সম্মেলনের মধ্য দিয়েই দলের রাজ্য কমিটির নতুন সম্পাদকের নাম ঘোষণা দেওয়া হবে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *