রাজ্যের সীমান্তে ফের বুনো হাতির তান্ডব, কুম্ভনিন্দ্রায় বনবিভাগ

নিজস্ব প্রতিনিধি, চুরাইবাড়ি, ২৫ অক্টোবর৷৷ কয়দিন বিরতির পর ফের মঙ্গলবার গভির রাতে বুনো দামলরা তান্ডব চালালো ত্রিপুরার লাগুয়া আসামের লোয়াইরপোয়া এলাকার সলগই বাজারের হাতিখিরা চা বাগানের আট নং লাইনের দুই শ্রমিকের বাড়িতে৷ হাতিদের আক্রমণে তাদের দুটি বসতগৃহ ভুপতিত হবার পাশাপাশি বুনো দামালরা তাদের বাড়ির ফসলাাদিও তছনছ করে৷ এমনকি ছয়টি হাতি দলবদ্ধ আক্রমণ চালিয়ে দুই ঘরে থাকা আসবাদপত্রাদিও ভেঙে মাড়িয়ে দেয়৷ ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে রয়েছে হাতিখিরা আট নং উড়িয়া লাইনের রুপচাঁন্দ চাষা ও গোপি তাতি৷

একবছর পূর্বেও তারা দুজন হাতিদের আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিলেন৷ এতে গোাডট এলাকার জনগণের ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে৷ সমুহ জেনে শোনেও স্থানিয় পাথারকান্দি বন বিভাগ কুম্ভকর্ণের নিন্দ্রায় আচ্ছন্ন থাকার জনমনে ব্যাপক ক্ষোভ বেড়েই চলেছে৷ বৃহত্তর এলাকার ভূক্তভোগিদের পক্ষে বিজয়মল দুষাধ, চন্দন কুর্মি, বিক্রমজিৎ কৈরী, রামলক্ষণ গোঁড়, সঞ্জয় হাজাম, গোলাপচাঁদ কানু, প্রমুখ জানান যে গত কয়েক বছর ধরে নয়টি বুনো হাতি পাথারকান্দির বিভিন্ন লোকালয়ে প্রবেশ করে জনগণের জান মালের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করলেও বন বিভাগের পক্ষে তেমন কোনও পদক্ষেপ গ্রঙণ করার খবর নেই৷ প্রতি বছরই পাঁকা ধান ও চোলাই মদের গন্ধে মাতোয়ারা হয়ে হাতিরা তান্ডব চালিয়ে যাচ্ছে৷ কয়মাস পর পর তারা রুট বদল করলেও পাথারকান্দি ও বাংলাদেশের জয়ন্তিয়া পাহাড়ই হাতিদের একমাত্র আস্তানা৷ দু দেশেই ওদের অবাদ বিচরণ থাকার খবর সর্বজন জ্ঞাত৷

গত কয়দিন ধরে বুনো হাতির দলটি হাতিখিরা বাগানোর বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করে তাদের ত্রাসের রাজত্ব কায়েম রেখেছে৷ হাতিরা একদিকে যেমন কৃষকদের শ শ বিঘা পাঁকা ধনে মই দিচ্ছে অনুরুপ ভাবে জনহণের বাড়ির ফসলও হাতিদের উদরে চলে যাচ্ছে৷ বিগত দিনে উক্ত দলের নয়টি হাতি থাকলেও বর্তমানে রয়েছে ছয়টি৷ ওরা সবাই মহিলা হাতি৷ তাদের একটির পায়ে কে বাা কাহারা তিরবিদ্ধ করায় সে খঁুড়িয়ে খঁুড়িয়ে চলাফেরা করতে দেখা গেছে৷ নানা কারণে তিনটি হাতির মৃত্যু হয় বলেও খবর রয়েছে৷ হাতিরা দিনে এলাকার বিভিন্ন চারা বাগানে অবস্থান করায় শ্রমিকরা সে পথে পা বাড়াচ্ছেন না৷

কারণ বিগত দিনে হাতিখিরা আট নং লাইনে লোকনাথ নামের এক শ্রমিককে বুনো হাতিরা পিষে মেরেছিল৷ এতে বাগানের আর্থিক বিকাশেও অন্তরায় সৃষ্টি হচ্ছে৷ এ পর্যন্ত তান্ডবরত হাতিগুলোকে তাড়াতে একদিকে যেমন কোনও ইতিবাচক পদক্ষেপ নেয়নি বন বিভাগ৷ অনুরুপ ভাবে রাজনৈতিক নেতারও বিষয়টুকু নিয়ে ঝেড়ে কাঁসছেন না৷ বিত দিনে হাতিদের তাড়াতে প্রাক্তন বিধায়ক যথাক্রমে মণিলাল গোয়ালা ও সুখেন্দুশেখর দত্ত কোনও পদক্ষেপ নেয়নি বললেই চলে৷ উনার পর আরেক প্রাক্তন বিধায়ক কার্ত্তিকসেনা সিনহা তার সময়ে দামালদের হাটিয়ে নিতে হেলিকপ্ঢারের ব্যবস্থা করলেও তা পরে হাস্যকর পদক্ষেপে পরিণত হয়েছে৷

বর্তমান বিধায়ক কৃষ্ণেন্দু পাল অবশ্য হাতি তাড়াতে আজগুবি পদক্ষেপের পরিবর্তে বিজ্ঞান সম্মত পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও বন বিভাগ তা যথেচ্ছ ভাবে পালন করছে না বলে অভিযোগ রয়েছে৷ এদিকে আসামের এই বুনো দামালদের তান্ডবে আতঙ্ক ত্রিপুরার মানুষের মধ্যেও বিরাজ করছে৷ যেকোনো সময় সীমান্তে প্রবেশ করতে পারেন সেই আতঙ্কে রাতের ঘুম উড়ে গেছে চোরাইবাড়ি, ঝেরঝেরি, কাঠালতলী প্রভৃতি এলাকার মানুষের৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *