নয়াদিল্লি, ২১ অক্টোবর (হি.স.) : জাতীয় পুলিশ দিবস উপলক্ষ্যে রাজধানী দিল্লিতে শহিদ পুলিশকর্মীদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে উৎসর্গকৃত জাতীয় স্মৃতিসৌধের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পাশাপাশি একটি সংগ্রহশালারও উদ্বোধন করেন তিনি।
রবিবার স্মৃতিসৌধে মাল্যদান করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং, বর্ষীয়ান বিজেপি সাংসদ লালকৃষ্ণ আদবানি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী কিরেন রিজিজু, হংসরাজ গঙ্গারাম আহির, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্ঠা অজিত দোভাল। এদিনের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ জাতীয় পুলিশ স্মৃতিসৌধের জন্য আমি গর্বিত। কিন্তু কিছু প্রশ্নও আমার রয়েছে। বিগত ৭০ বছরে কেন স্মৃতি সৌধটি গড়া হয়নি। কোনও কারণে হয়তো এর কাজ বন্ধ ছিল। কিন্তু আগের সরকারের যদি ইচ্ছা থাকত, যদি তারা এই স্মৃতিসৌধ গড়তে সচেষ্ট হতো তবে কয়েক বছর আগেই এই স্মৃতিসৌধটির কাজ সম্পূর্ণ হয়ে যেত। কিন্তু আগের সরকার এই বিষয়ে কোনও কাজই করেনি।
পুলিশকর্মীদের আত্মত্যাগকে শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেসব পুলিশকর্মী দেশের জন্য নিজের জীবনের বলিদান দিয়েছেন তাদের পরিবারবর্গের প্রতি আমি আমার শ্রদ্ধা জানাই। জাতির উদ্দেশ্যে জাতীয় পুলিশ স্মৃতিসৌধকে উৎসর্গকৃত করতে পেরে আমি নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করি।
২১ অক্টোবর ১৯৫৯ সালে আকসাই চিনে হট স্প্রিংয়ে চিনা অনুপ্রবেশ রুখতে গিয়ে শহিদ দশ পুলিশকর্মীর স্মৃতির উদ্দেশ্যেও শ্রদ্ধা জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী পুলিশকর্মীদের আত্মত্যাগের কথা তুলে ধরে বলেন, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সময় জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর আগেই রাজ্য পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছিয়ে যায়। অন্যন্যা বাহিনীও ঘটনাস্থলে পৌঁছিয়ে যায়। এবার থেকে নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু নামে সাহসী পুলিশকর্মীদের সম্মানিত করা হবে। পুলিশকর্মীদের দক্ষতার জন্য মাওবাদী প্রভাবিত জেলার সংখ্যা কমে গিয়েছে। উত্তরপূর্বেও ভাল কাজ করেছে পুলিশবাহিনী। শহিদ জওয়ানদের গ্রামের স্কুলগুলিতে যেখানে তারা লেখাপড়া করেছে সেখানে এবার থেকে শহিদ জওয়ানদের মূর্তিও বসানো হবে। প্রথম এনডিএ সরকারের আমলে এই স্মৃতিসৌধের শিলান্যাস হলেও পরবর্তী সরকার সেই কাজ সম্পূর্ণ না করার জন্য উষ্মা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি পুলিশকর্মীদের আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের উপরও জোর দেন তিনি। আধুনিক যুগে সাইবার ক্রাইম যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা মূল প্রতিবন্ধকতা সেটাই বুঝিয়ে দেন তিনি।
উল্লেখনীয় দিল্লির চাণক্যপুরীতে ৬.১২ একর জমিতে এই স্মৃতিসৌধ গড়ে তোলা হয়েছে। সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের পুলিশবাহিনী, কেন্দ্রীয় পুলিশবাহিনীর আত্মবলিদানকে এর মাধ্যমে শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে। দেশস্বাধীন হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ৩৪,৮৪৪ জন পুলিশকর্মী শহিদ হয়েছেন। এর মধ্যে চলতি বছরে এই সংখ্যাটা ছিল ৪২৪। কাশ্মীর, পঞ্জাব, অসম, মণিপুর, মিজোরাম, নাগাল্যাণ্ড সহ বিভিন্ন রাজ্যে চলতি বছরে পুলিশকর্মীরা প্রাণ হারিয়েছেন। এই স্মৃতিসৌধে ৩৪,৮৪৪ পুলিশকর্মী নাম খুদিত করা হয়েছে।