লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমেই যোগ্যদেরচাকুরি প্রদান করা হবে ঃ মুখ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৭ এপ্রিল৷৷ রাজ্য সরকার চাকুরি প্রদানের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা বজায় রাখবে৷ লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমেই যোগ্যদের চাকুরি প্রদান করা হবে৷ কোনও ধরনের মৌখিক ইন্টারভিউ-এর ব্যবস্থা থাকবে না বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব৷ আজ প্রজ্ঞাভবনে ভারত সরকারের খাদ্য ও গণবন্টন মন্ত্রক এবং রাজ্য সরকারের খাদ্য, জনসংভরণ ও ক্রেতা স্বার্থবিষয়ক দপ্তরের যৌথ উদ্যোগে অয়োজিত পাবলিক ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেমের কম্পিউটারাইজেশন এবং সংস্কারের লক্ষ্যে উন্নতকরণ বিষয়ে এক আঞ্চলিক কর্মশালায় উদ্বোধকের ভাষণে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব৷
কেন্দ্রীয় সরকার দেশের গরিবদের জন্য রেশনের মাধ্যমে ২ টাকা কিলো দরে চাল দেয়ার যে ব্যবস্থা করেছিল তা এতদিন আমাদের রাজ্যের গরিবদের কাছে সঠিকভাবে পৌঁছুত না৷ আমরা চাই তা সঠিকভাবে গরিবদের কাছে পৌঁছুক৷ তিনি বলেন, পাবলিক ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম (পিডিএস) কম্পিউটারাইজেশন হওয়ার ফলে রেশনেরমাধ্যমে খাদ্যশস্য বিতরণে স্বচ্ছতা বজায় থাকবে৷ ত্রিপুরায় ইতিমধ্যেই পিডিএস প্রথম ধাপের কাজ শুরু হয়ে গেছে৷ এজন্য রাজ্যের খাদ্য ওজনসংভরণ দপ্তরের মন্ত্রী সহ আধিকারিকদের তিনি অভিনন্দন জানান৷ আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিজি সরকারে আসার পর থেকেই দেশে ডিজিটেলাইজেশন ও কম্পিউটারাইজেশন এর ব্যাপক ব্যবহার শুরু হয়৷ দেশবাসী এমন এক প্রধানমন্ত্রী পেয়েছেন যার সুদক্ষ নেতৃত্বের কারণে আমরা প্রযুক্তিবিদ্যার জগতে প্রবেশ করতে পেরেছি৷ আমি এই দেশে জন্মগ্রহণ করে খুবই গর্ববোধ করি যে দেশের প্রযুক্তি সারা বিশ্বে দ্রুত এগিয়ে চলছে৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশের বহু মাইক্রোসফট্ ইঞ্জিনিয়ার আমেরিকা সহ বড় বড় দেশে সুনামের সাথে কাজ করছেন৷ ভারতের প্রযুক্তিকে আজ অনেক বড় বড় দেশও সমীহ করে৷
মুখ্যমন্ত্রী শ্রী দেব বলেন, আমাদের রাজ্যে ৯৭৭২ শতাংশ রেশন কার্ডের সঙ্গে আধার সংযুক্তিকরণ হয়ে গেছে৷ রাজ্যে পিডিএস কম্পিউটারাইজেশনের দ্বিতীয় ধাপের কাজও শুরু করার উদ্যোগ চলছে৷ পিডিএস কম্পিউটারাইজেশন হলে রাজ্যের গরিব মানুষরা উপকৃত হবেন৷
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমান যুগ প্রযুক্তিবিদ্যার যুগ৷ প্রযুক্তি এমন হওয়া উচিত নয় যাতে শুধু ধনী লোকদেরই উপকার হয়৷ প্রযুক্তির ফায়দা তখনই হবে যখন সমাজের গরিব অংশের লোকদের কাছে প্রযুক্তির স ফল নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে৷ আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী সেই দিশাতেই কাজ করছেন৷ প্রধানমন্ত্রী যখন দেশে ডিজিটেলাইজেশন শুরু করেছিলেন, নোটবন্দী করেছিলেন এবং জি এস টি চালু করেছিলেন তখন বিরোধীরা পার্লামেন্টে এগুলির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন৷ কিন্তু এত বিরোধিতার পরও প্রধানমন্ত্রী দেশের ১২৫ কোটি জনগণকে পাশে নিয়ে এই কাজ শুরু করেছিলেন৷ তাই যে কোনও কাজে নির্দিষ্ট দিশা নিয়ে লড়াই করলে তবেই সাফল্য আসবে৷
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের রাজ্যে অনেক কিছু থাকার পরও যতটুকু উন্নয়ন হওয়ার কথা ছিল তা হয়নি বরং পিছিয়ে পড়েছিল৷ কিন্তু এখন রাজ্য আর পিছিয়ে পড়বে না৷ বর্তমান রাজ্য সরকার আগামী ৩ বছরের মধ্যে রাজ্যকে মডেলরাজ্য বানানোর পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে৷ রাজ্য সরকারের লক্ষ্য প্রধানমন্ত্রীর সবকা সাথ সবকা বিকাশ মন্ত্র রাজ্যের প্রতিটি ঘরে ঘরে পৌঁছানো৷ সে দিশাতেই আমরা ইতিমধ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছি৷ প্রধানমন্ত্রী উত্তরপূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির উন্নয়নে যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন তাতে আমরাও সর্বতো সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে চাই৷ রাজ্যের বেকারদের কর্মসংস্থান প্রসঙ্গে আলোচনা করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সরকার চাকুরি প্রদানের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা বজায় রাখবে৷ লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমেই যোগ্যদের চাকুরি প্রদান করা হবে৷ কোনও ধরনের মৌখিক ইন্টারভিউ-এর ব্যবস্থা থাকবে না৷
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির ভাষণে খাদ্য, জনসংভরণ ও ক্রেতা স্বার্থবিষয়ক দপ্তরের মন্ত্রী মনোজ কান্তি দেব বলেন, আজ ত্রিপুরার জন্য একটি স্মরণীয় দিন৷ প্রধানমন্ত্রী উত্তরপূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির উন্নয়নে যে পদক্ষেপ নিয়েছেন তারই অঙ্গ হিসাবে প্রথমবারের মতো আমাদের রাজ্যে এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ কর্মশালার আয়োজনের দায়িত্ব দিয়েছেন৷ প্রধানমন্ত্রীও পাবলিক ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম এ স্বচ্ছতা আনার ব্যাপারে জোর দিয়েছেন৷ আমরা রাজ্যে এই কাজ ইতিমধ্যেই শুরু করে দিয়েছি৷ আশা করি এর মাধ্যমে রাজ্যের গরিব অংশের জনগণ উপকৃত হবেন৷
কর্মশালায় এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন খাদ্য দপ্তরের সচিব ওয়াই কুমার ও অতিরিক্ত সচিব ড ডি বসু, রাজ্যের এন আই সির প্রধান সি কে ধর এবং মণিপুর, মেঘালয়, মিজোরাম ও নাগাল্যান্ডের খাদ্য, জনসংভরণ ও ক্রেতা স্বার্থবিষয়ক দপ্তরের আধিকারিকবৃন্দ৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *