নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৫ জানুয়ারী৷৷ আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে বিভিন্ন রাজ্যের নিজস্ব সশস্ত্র বাহিনী রাজ্যে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন
করবে৷ মোট ৩০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী নির্বাচনের দায়িত্বে থাকবে৷ তাদের মধ্যে ১৫ কোম্পানি বিভিন্ন রাজ্যের নিজস্ত্র বাহিনী হবে৷ সোমবার মহাকরণে এই সংবাদ জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারীক শ্রীরাম তরনীকান্তি৷ তিনি আরও জানান, আসন্ন নির্বাচনে রাজ্যের ভোট গ্রহণ কেন্দ্রগুলিকে দুই ভাবে বিভক্ত করা হবে৷ সংকটময় এবং অসুরক্ষিত এই দুই ভাগে ভোট গ্রহণকেন্দ্রগুলিকে ভাগ করা হবে৷
তিনি জানান, ২০১৩ সালে বিধানসভা নির্বাচনে ২৬০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় আধা সামরিক বাহিনী নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিল৷ এবছর ৩০০ কোম্পানি বাহিনী রাজ্যে নির্বাচনের কাজে নিযুক্ত করা হবে৷ কেন্দ্রীয় আধা সামরিক বাহিনীর মধ্যে ১৫ কোম্পানি বিভিন্ন রাজ্যের নিজস্ব সশস্ত্র বাহিনীও থাকবে৷
ইতিপূর্বে নির্বাচনগুলিতে মোট তিনভাবে ভোটগ্রহণ কেন্দ্রগুলিকে ভাগ করা হতো৷ সাধারণ, স্পর্শকাতর এবং অতি স্পর্শকাতর হিসেবে ভোটগ্রহণ কেন্দ্রগুলিকে চিহ্ণিত করা হতো৷ আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে দুইভাবে ভোট গ্রহণ কেন্দ্রগুলিকে ভাগ করা হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্য নির্বাচন আধিকারীক৷ তিনি জানান, সংকটজনক এবং অসুরক্ষিত এই দুইভাগে ভোট গ্রহণ কেন্দ্রগুলিকে ভাগ করা হবে৷ এই তালিকা তৈরি হচ্ছে৷
চূড়ান্ত ভোটার তালিকা নিয়ে বহু অভিযোগ উঠছে৷ ভূয়ো এবং বাংলাদেশী ভোটারের নাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়েছে দাবি রাজনৈতিক দলগুলির৷ এবিষয়ে মুখ্য নির্বাচন আধিকারীক জানান, এই সমস্ত কিছুর খোঁজ নেওয়া হচ্ছে৷ প্রত্যেক জেলাশাসকদের বুথ স্তর পর্যন্ত খোঁজ নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷ এমনকি নির্বাচন কমিশনও এবিষয়ে খোঁজ খবর নিচ্ছে৷ তিনি জানান, চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় কোন ভোটারের বিরুদ্ধে ফর্ম ৭ এর মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলি অভিযোগ জানাতে পারবে৷ মনোনয়ন পত্র জমা নেওয়ার অন্তিম তারিখ পর্যন্ত এই প্রক্রিয়া চলবে৷ সেক্ষেত্রে অভিযোগের সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমান মিললে নিশ্চয়ই ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷ তাঁর কথায় অনুমান করা হচ্ছে, ভূয়ো ভোটার সম্পর্কে নির্বাচন দপ্তরও ওয়াকিবহাল এবং এনিয়ে প্রচন্ড দৌড়ঝাপও শুরু হয়েছে৷
তাই, নির্বাচনের আগের রাজ্যের বেশ কয়েকজন ভারপ্রাপ্ত রিটার্নিং অফিসার এবং সহকারী রিটার্নিং অফিসারের নির্বাচনী দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সম্ভাবনা প্রকট হয়ে উঠেছে৷ একই সাথে বেশ কয়েকজনের কর্মক্ষেত্রও পরিবর্তনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে৷
নির্বাচন দপ্তরের জনৈক আধিকারীক জানিয়েছেন, দিল্লি থেকে নির্বাচন কমিশনের আধিকারীকদের রাজ্যে আসার আগেই নির্বাচনী কাজে নিযুক্ত বেশ কয়েকজন আধিকারীকের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ জমা পড়েছে৷ তাঁদের নিরপেক্ষতা এবং কাজের গতিশীলতা আনার ক্ষেত্রে অনেক খামতি রয়েছে বলে অভিযোগ৷ এই অবস্থায় বেশ কয়েকজন রিটার্নিং অফিসার এবং সহকারী রিটার্নিং অফিসারকে নির্বাচনী দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়ার বুিষয়টি নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে৷ আবার বেশ কয়েকজনের কর্মক্ষেত্রও বদল করা হতে পারে বলে সম্ভাবনা রয়েছে৷
খোয়াই সংযোজন ঃ নির্বাচন কমিশনের দুইজনের একটি প্রতিনিধি দল সোমবার সকালে খোয়াই মহকুমার গণনা কেন্দ্র এবং স্ট্রং রুম পরিদর্শন করেছেন৷ পরে খোয়াই মহকুমা শাসকের কার্যালয়ে নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়ে বৈঠক করেছেন৷ পাশাপাশি খোয়াই মহকুমার কয়েকটি ভোট গ্রহণ কেন্দ্রও পরিদর্শন করেছেন৷
এদিন দুপুরের তাঁরা তেলিয়ামুড়া মহকুমা শাসকের সাথেও নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়ে বৈঠক করেছেন৷ পাশাপাশি তেলিয়ামুড়া মহকুমার কয়েকটি ভোট গ্রহণ কেন্দ্র ঘুরে দেখেন এবং ভোটারদের সাথে কথা বলেছেন৷ জানা গেছে, এই প্রতিনিধি দলে রয়েছেন নির্বাচন কমিশনের রেগুলেটরি ডিভিশনের সেকশন অফিসার মিথিলেশ শর্মা এবং সহকারী সেকশন অফিসার হরিশ কুমার৷
সূত্রের খবর, নির্বাচন কমিশনের প্রতিনিধিরা মূলত ভোটার তালিকা নিয়ে খোয়াই এবং তেলিয়ামুড়া মহকুমা শাসকের কাছ থেকে বিস্তারিত খোঁজ খবর নিয়েছেন৷ পাশাপাশি খোয়াই জেলা শাসক ড সন্দীপ এন মাহাত্ম্যের সাথেও ভোটার তালিকা নিয়ে আলোচনা করেছেন৷