গোপনীয়তা রক্ষার অধিকার মৌলিক অধিকার, রায় সুপ্রিম কোর্টের, সন্তুষ্ট সব মহল

নয়াদিল্লি, ২৪ আগস্ট(হি.স.)৷৷ ব্যক্তিগত গোপনীয়তার রক্ষার অধিকার নাগরিকের মৌলিক অধিকারের মধ্যেই পড়ে৷ বৃহস্পতিবার ঐতিহাসিক রায়ে এমনটাই জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট৷ এদিন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি জে এস খেহরের নেতৃত্বাধীন ৯ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ স্পষ্টতই জানিয়ে দিল, গোপনীয়তা রক্ষার অধিকার হল মৌলিক অধিকার৷ গোপনীয়তা রক্ষার অধিকার ভারতীয় সংবিধানের ২১ নম্বর অনুচ্ছেদ (নাগরিকের জীবন সুরক্ষিত করার ও ব্যক্তিগত স্বাধীনতার অধিকার)-এর অঙ্গ হিসেবেই দেখছে শীর্ষ আদালত৷
এদিকে, কেন্দ্রীয় সরকার সুপ্রিম কোর্টের এই রায়’কে স্বাগত জানিয়েছে৷ এই রায় সংসদ কর্তৃক অনুমোদিত সরকারের আইনগত প্রস্তাবের প্রয়োজনীয় রক্ষাকবচগুলির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ বলে মনে করে কেন্দ্র৷
এদিন কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রী অরুণ জেটলি বলেন, সুপ্রিম কোর্টের আজকের রায় অত্যন্ত স্বাগত৷ কারণ, এটি মৌলিক অধিকার এবং ব্যক্তিগত স্বাধীনতাকে শক্তিশালী করবে৷ এই রায়-এ বলা হয়েছে যে, ব্যাক্তিগত অধিকার কোনও সর্র্বত্মক অধিকার নয়৷ এটি সংবিধান- সম্মত নিয়ন্ত্রণ সাপেক্ষ, যা বিভিন্ন ক্ষেত্রে পৃথক পৃথকভাবে নির্ধরিত হবে৷ সরকার সুস্পষ্টভাবে এই অভিমত দিতে চায় যে, এই সংক্রান্ত আইনগুলি আজকের রায়-এর শর্তগুলির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ৷ সুপ্রিম কোর্ট তাদের রায়-এ বলেছে ‘‘প্রয়োজন হচ্ছে ব্যাক্তিগত স্বার্থ ও রাষ্ট্রের আইনগত উদ্বেগের মধ্যে একটি যত্নশীল ও স্পর্শকাতর সমতা বিধানের’’৷ রাষ্ট্রের আইনগত লক্ষ্যের মধ্যে রয়েছে – ‘‘জাতীয় নিরাপত্তা সুরক্ষিত রাখা, অপরাদ প্রতিরোধ এবং তদন্ত, উদ্ভাবনে উৎসাহ প্রদান, জ্ঞানের প্রসার এবং সমাজ কল্যাণের সুযোগ-সুবিধাগুলির অপচয় বন্ধ করা’’৷ সরকার এই লক্ষ্য পূরণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ৷ এদিকে, কংগ্রেস সহ-সভাপতি রাহুল গান্ধিও টুইট করে এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন৷
৯ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চে ছিলেন প্রধান বিচারপতি জে এস খেহর, বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জে চেলামেশ্বর, বিচারপতি রোহিনটন নরিম্যান, বিচারপতি আর কে আগরওয়াল, বিচারপতি সঞ্জয় কিষাণ কাউল, বিচারপতি এস এ বোবদে, বিচারপতি এস আব্দুল নজির এবং বিচারপতি এন এম সাপরে৷
১৮৫৪ সালে এম পি শর্মা মামলায় সুপ্রিম কোর্টের ৮ বিচারপতির বেঞ্চ এবং ১৯৬২ সালে খড়ক সিং মামলায় ৬ বিচারপতির বেঞ্চ রায় দিয়েছিল যে গোপনীয়তা রক্ষার অধিকার মৌলিক অধিকার নয়৷ সেই রায়কেই এদিন খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্টের ৯ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ৷ রায় পড়ে শোনানোর সময় বিচারপতি জে চেলেমেশ্বর বলেছেন, গোপনীয়তা রক্ষার অধিকার ২১ নম্বর অনুচ্ছেদ দ্বারা সুরক্ষিত এবং এটি সংবিধানের অবিচ্ছদ্দ অংশ ও বেঁচে থাকার অধিকারের মতোই সহজাত৷ প্রসঙ্গত, গোপনীয়তা রক্ষার অধিকার মৌলিক অধিকার হতে পারে না বলে বরাবর দাবি করে এসেছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপাল রাও৷ তিনি অবশ্য এদিন শীর্ষ আদালতের রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন৷
সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ের পরই আধার কার্ড নিয়ে বড়সড় প্রশ্ণচিহ্ণ উঠে গেল৷ কারণ আধার কার্ডে রয়েছে সমস্ত ব্যক্তিগত তথ্য৷ সেই সমস্ত তথ্য গোপন রাখার অধিকার রয়েছে কিনা, তা নিয়েই এদিন ঐতিহাসিক রায় সুপ্রিম কোর্টের৷ এখন এই রায়ের ভিত্তিতে আধার মামলার শুনানি হবে৷
ব্যক্তিগত গোপনীয়তা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের ঐতিহাসিক রায়কে স্বাগত জানালেন কংগ্রেসের সহ-সভাপতি রাহুল গান্ধী৷ সুপ্রিম রায়ের প্রেক্ষিতে রাহুল টুইট করে জানিয়েছেন, সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ে জয় হল প্রত্যেক ভারতবাসার৷ বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি জে এস খেহরের নেতৃত্বাধীন ৯ বিচারপতি সাংবিধানিক বেঞ্চ স্পষ্টতই জানিয়ে দিয়েছে, ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষার অধিকার হল মৌলিক অধিকার৷ ৯ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চে ছিলেন প্রধান বিচারপতি জে এস খেহর, বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জে চেলামেশ্বর, বিচারপতি রোহিনটন নরিম্যান, বিচারপতি আর কে আগরওয়াল, বিচারপতি সঞ্জয় কিষাণ কউল, বিচারপতি এস এ বোবদে, বিচারপতি এস আব্দুল নজির এবং বিচারপতি এন এম সাপরে৷
শীর্ষ আদালতের রায় ঘোষণার পরই রাহুল গান্ধী ট্যুইট করে জানিয়েছেন, সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ে জয় হল প্রত্যেক ভারতবাসীর৷ শুধ রাহুল গান্ধীই নন, সুপ্রিম রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়-ও৷ মমতা ট্যুইট করেছেন, ব্যক্তিগত গোপনীয়তার অধিকারকে মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট, শীর্ষ আদালতের এই রায়কে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি৷