নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১ জুলাই ৷৷ বর্হিরাজ্য থেকে চিকিৎসকদের রাজ্যে আনা যাচ্ছে না৷ কারণ, বর্হিরাজ্যের চিকিৎসকরা রাজ্য সরকারের অধিনে চিকিৎসা পরিষেবার কাজে নিয়োজিত হতে চাইছেন না৷ শনিবার ডক্টর্স ডে উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বাদল চৌধুরী রাজ্যের চিকিৎসকের ঘাটতি স্বীকার করে বর্হিরাজ্য থেকে চিকিৎসক আনতে ব্যর্থতা নিয়ে চিন্তা ব্যক্ত করেছেন৷ স্বাস্থ্য সচিব সমরজিৎ ভৌমিক রাজ্যের দুটি মেডিক্যাল কলেজ থেকে পাশ করা চিকিৎসকরাও এরাজ্যে থাকতে চাইছেন না বলে উষ্মা প্রকাশ করেছেন৷
এদিন স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের হাসপাতাল গুলিকে চিকিৎসকের প্রচুর ঘাটতি রয়েছে৷ চিকিৎসকের বহু পদ শুন্য পরে রয়েছে৷ কিন্তু রাজ্য সরকার বহুচেষ্টা করেও বর্হিরাজ্য থেকে চিকিৎসকদের এই রাজ্যে আনতে পারছে না৷ কারণ, তাঁরা রাজ্য সরকারের অধিনে চিকিৎসা পরিষেবার কাজে নিয়োজিত হতে চাইছেন না৷ তিনি বলেন স্বাস্থ্য পরিষেবার ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত চিকিৎসক খুবই জরুরী৷ চিকিৎসকের ঘাটতি থাকলে স্বাস্থ্য পরিষেবার বিস্তার ঘটানো সম্ভব নয়৷ ফলে, সরকারী হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্যকেন্দ্র গুলিতে চিকিৎসক সল্পতায় পরিষেবা প্রদাণে ঘাটতি থেকেই যাচ্ছে৷ এদিন তিনি বর্হিরাজ্য থেকে চিকিৎসকরা কেন আসতে চাইছেন না, সে বিষয়ে খোলসা করে কিছু বলেননি৷ তবে, সারাদেশের তুলনায় এরাজ্যে চিকিৎসকদের বেতন অনেকটাই কম৷ বর্হিরাজ্যের চিকিৎসকদের এই রাজ্যে আসার ক্ষেত্রে অনিহার পেছনে এই বিষয়টি অন্যতম কারণ হিসেবেই মনে করা হচ্ছে৷ অবশ্য, স্বাস্থ্যমন্ত্রী দাবী করেছেন, চিকিৎসক স্বল্পতা সত্বেও রাজ্যে স্বাস্থ্য পরিষেবার মান উন্নয়ন হয়েছে৷ কয়েক বছর ধরে উপজাতি মহল্লায় ম্যালেরিয়া এবং জলবাহিত রোগের আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু মিছিলের মতো কোন ঘটনা ঘটেনি বলে তিনি জানিয়েছেন৷
এদিন, স্বাস্থ্যসচিব সমরজিৎ ভৌমিক রাজ্যের দুটি মেডিক্যাল কলেজ থেকে পাশ করা চিকিৎসকরা রাজ্যে চিকিৎসা পরিষেবার কাজে নিয়োজিত হওয়ার বদলে বর্হিরাজ্যে চলে যাচ্ছেন বলে উষ্মা প্রকাশ করেছেন৷ তিনি বলেন, স্বাস্থ্য পরিকাঠামো শক্তিশালী করতে চিকিৎসকরা প্রধান ভুমিকা পালন করে থাকেন৷ কিন্তু রাজ্য সরকার স্বাস্থ্য পরিষেবার মানোন্নয়নে বিরাট চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে৷ তিনি জানান রাজ্যে আরো ১৭ টি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র, ১০টি কমিউনিটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং শতাধিক উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র গড়ে তোলার ক্ষেত্রে ঘাটতি রয়েছে৷ বর্তমানে রাজ্যে প্রায় ৪০০ চিকিৎসকের ঘাটতি রয়েছে৷ অথচ, রাজ্যের দুটি মেডিক্যাল কলেজ থেকে পাশ করে চিকিৎসকরা বর্হিরাজ্যে চলে যাচ্ছেন৷ এবিষয়ে তিনি উষ্মা প্রকাশ করে বলেন, রাজ্যের প্রতি তাদেরও দায়িত্ব রয়েছে৷ কিন্তু, ক্যারিয়ারের স্বার্থে অনেকেই রাজ্যে থাকতে চাইছেন না৷
এদিন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং স্বাস্থ্যসচিবের বক্তব্যে স্পষ্ট রাজ্য সরকারের নিতির পরিবর্তন না হলে স্বাস্থ্য পরিষেবার হাল ফেরানো কোন ভাবেই সম্ভব নয়৷
ডক্টর্স ডে উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বাদল চৌধুরী রাজ্যের বিশিষ্ট চিকিৎসক হিসেবে ডাঃ ইলা লোধ, ডাঃ প্রমতেশ রায়, ডাঃ একে নাথ, ডাঃ অজিত কুমার দাস এবং ডাঃ সুধির দেববর্র্মকে সম্বর্ধনা দিয়েছেন৷
2017-07-02

