অসমের কার্বি আংলং জেলায় নতুন করে সহিংসতা, ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ

কার্বি আংলং (অসম), ২৩ ডিসেম্বর : উচ্ছেদ অভিযানের সঙ্গে সম্পর্কিত নতুন করে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ায় অসমের কার্বি আংলং জেলার দুটি উপ-জেলায় ইন্টারনেট পরিষেবা সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সোমবার সংঘর্ষের পর পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বলে এক সরকারি আধিকারিক জানিয়েছেন। দুটি প্রতিবাদী গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত আটজন আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে এবং কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে ভিড় ছত্রভঙ্গ করেছে।

হোম অ্যান্ড পলিটিক্যাল ডিপার্টমেন্টের জারি করা এক সরকারি নির্দেশে বলা হয়েছে, জনসাধারণের “শান্তি ও শৃঙ্খলা” বজায় রাখা এবং পরিস্থিতির আরও অবনতি রোধের স্বার্থে ইন্টারনেট পরিষেবা সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে।

নিষেধাজ্ঞা জারি থাকা সত্ত্বেও, সোমবার যাদের দোকানপাট ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ, সেই সব মানুষ নারী ও শিশু সহ রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। একই সময়ে, আদিবাসী বেল্ট থেকে দখলদার উচ্ছেদের দাবিতে অন্য একদল আন্দোলনকারী খেরোনি বাজার এলাকায় জমায়েত হন।

সোমবারের সহিংস ঘটনার পর মঙ্গলবার কার্বি আংলং জেলায় ব্যাপক নিরাপত্তা মোতায়েন করা হয়। অসম পুলিশের আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক আইজি অখিলেশ কুমার সিং জানান, শান্তি ফিরিয়ে আনতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আলোচনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং জনগণকে আইনসম্মত পথে অভিযোগ জানাতে অনুরোধ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, একটি পক্ষকে উচ্ছেদ করা হয়েছে, অন্য পক্ষের উচ্ছেদও শীঘ্রই হবে। শান্তিপূর্ণ আলোচনা হয়েছে। একজন মন্ত্রী মানুষের অভিযোগ শুনতে এসেছিলেন। কারও কোনও সমস্যা থাকলে আইনগত পথে এগোনো উচিত। কেউ যেন আইন নিজের হাতে না নেয়। পর্যাপ্ত নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন রয়েছে।

জনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে জেলায় ভারতীয় ন্যায় সুরক্ষা সংহিতা (BNSS)-এর ১৬৩ ধারা জারি করা হয়েছে। কার্বি আংলং জেলার জেলা ম্যাজিস্ট্রেট নিরোলা ফাংচোপির জারি করা নিষেধাজ্ঞা অনুযায়ী, ২২ ডিসেম্বর থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই ধারা কার্যকর থাকবে। এই নির্দেশে পাঁচজন বা তার বেশি মানুষের জমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পাশাপাশি বিকেল ৫টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত মানুষ ও ব্যক্তিগত যানবাহনের চলাচলের ওপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

এছাড়াও মিছিল, পিকেটিং, মশাল মিছিল ও জনসমক্ষে ধর্ণা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আগ্নেয়াস্ত্র বহন, আতশবাজি ফোটানো এবং কোনও উসকানিমূলক বা দেশবিরোধী বক্তব্য, পোস্টার বা দেওয়াললিখন প্রদর্শন বা প্রচারেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। পূর্বানুমতি ছাড়া লাউডস্পিকার বা মাইক্রোফোন ব্যবহারের ওপরও নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে।

Leave a Reply